মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ সুতি ও ধুলিয়ানের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে বলে জানালেন ডিজিপি রাজীব কুমার
বাংলার জনরব ডেস্ক : ওয়াকফ সংশোধনী আইনের (Waqf Amendment Act) প্রতিবাদ মিছিল চলাকালীন সময়ে হঠাৎ করেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদ এর সুতি ধুলিয়ান সামশেরগঞ্জ। দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে এলাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। এ পর্যন্ত দুজন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এবং তিনজন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ মারা যাওয়ার খবর এসে পৌঁছেছে। এই অশান্তির খবর পাওয়ার পর ঘটনার স্থলে যান রাজ্য পুলিশে ডিজিপি রাজীব কুমার। তিনি রবিবার সকালে জানিয়েছেন সমগ্র মুর্শিদাবাদ এবং ঘটনাস্থল শান্তিপূর্ণ রয়েছে নতুন করে কোন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতির সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে বলে তিনি জানিয়েছেন ।
মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) পরিস্থিতি বাগে আনতে শনিবারই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তার পরপরই সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন রাজ্যের ডিজিপি রাজীব কুমার। বিএসএফের সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠকও করেন তিনি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নেমে রুটমার্চ শুরু করে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
রবিবার সকাল থেকেও একাধিক জায়গায় রাজ্য পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী যৌথভাবে রুট মার্চ করে। অশান্তির ঘটনায় এখনও অবধি গ্রেফতার করা হয়েছে সামশেরগঞ্জ ও সুতি থানা মিলিয়ে প্রায় ১৮০ জনকে।
বিএসএফের আইজি এলাকা পরিদর্শন করে জানান, পুলিশ যদি মনে করে নির্দিষ্ট এলাকাগুলিতে বিএসএফ মোতায়েন থাকবে, তাহলে থাকবে। পরিষ্কার করে এও জানিয়ে দেন যতদিন পুলিশ চাইবে তত দিনই বাহিনী মোতায়েন থাকবে এলাকায়। পুলিশকেও সব রকম ভাবে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সূত্রের খবর, ডিজি রাজীব কুমারও জঙ্গিপুর পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে একটি বৈঠক সারেন। যার পরই জেলার বাছাই করা কয়েকজন পুলিশকর্তা ও কর্মীদের ‘স্পেশ্যাল অন ডিউটি’তে দ্রুত জঙ্গিপুরে পৌঁছে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। মোট ২৩ জন আগামী চার দিন বিশেষ তদারকি করবেন জঙ্গিপুর এলাকায়, এমনটাই সূত্রের খবর।
শুধু তাই নয়, এদিন সকাল সকাল মুর্শিদাবাদে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকারও। তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। অভিযোগ ওঠে, এতদিন পুলিশ কোথায় ছিল? কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? গ্রামবাসীরা জানান, দোকানপাট, জামাকাপড়ের দোকান, এমনকি মিষ্টির দোকানও ভাঙচুর করে দেওয়া হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জের বাসিন্দাদের একাংশ আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে মালদহে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, এখন ‘রাষ্ট্রপতি শাসন’ ছাড়া কোনও পথ নেই বলে মনে করছেন অনেকেই।