কলকাতা 

যোগ্য চাকরিহারাদের নামের তালিকা প্রকাশের দাবিতে স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরের সামনে অনশনে শিক্ষকরা, সঙ্গে অভিজিৎ, চিত্তরঞ্জন, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়

শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিনিধি : যোগ্য চাকরি হারাদের নামের তালিকা প্রকাশের দাবিতে এবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসের সামনে অনশনে বসলেন চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। কয়েকদিন আগে পর্যন্ত তমলুকের সাংসদ ও প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় একটি নিয়ম মেনে ও এম আর ইমেজ প্রকাশ এর দাবি জানিয়ে যোগ্য ও অযোগ্য পার্থক্য করার কথা বলে আসছিলেন। গতকাল চাকরিহারা শিক্ষর রাজ্যব্যাপী ডিআই অফিস অভিযানের প্রেক্ষিতে কলকাতার কসবা ডি আই অফিসের সামনে যেভাবে শিক্ষকদের লাঠিচার্জ করা হয়েছে তার প্রতিবাদে এবং যোগ্য শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশের দাবিতে অনশন শুরু হয়েছে আচার্য ভবনের সামনে।

ওই অনশন মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন তমলুকের সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তিনি সেখানে গিয়ে আবারও মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন এবং ব্রাত্য বসুর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

Advertisement

অনশন শুরুর কিছু ক্ষণের মধ্যেই এসএসসি দফতরের সামনে পৌঁছোন অভিজিৎ। ছিলেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষ এবং এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডলও। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখাও করেন তাঁরা। সেখানেই রাজ্যের প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে অভিজিৎ বলেন, ‘‘ও সব ভাঁওতাবাজি! তা হলে নিরীহ শিক্ষকদের উপর মামলা করলেন কেন? আসলে ওঁরা জানেন ওঁরা অন্যায় করেছেন। তাই ওঁদের সুষ্ঠু ভাবে বিষয়টি মেটানোর কোনও ইচ্ছা নেই। ওঁরা এটা নিয়ে যতটা সম্ভব রাজনীতি করা যায়, তা-ই করছেন।’’ এসএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার পর বুধবারই এসএসসিকে ওএমআরের মিরর ইমেজ প্রকাশ্যে আনার জন্য দু’দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন তাঁরা। ঘোষণা করেছিলেন, এর অন্যথা হলে শনিবার তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন।

অভিজিৎ বৃহস্পতিবার আরও জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত যা করেছেন, দলকে জানিয়েই করেছেন। প্রসঙ্গত, মমতাকে লেখা চিঠি বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যকে পৌঁছে দেবেন বলেছিলেন বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন বিচারপতি। অথচ বুধবার কথা দিয়েও বিকাশ ভবনে যাননি অভিজিৎ। এর পরেই তাঁকে কটাক্ষ করে ব্রাত্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিতে চাওয়ায় দলীয় রাজনীতিতে কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি হল কি না, দল ওঁকে বারণ করল কি না, সে সব উনিই বলতে পারবেন!’’ সেই জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে অভিজিৎ জানালেন, সব সময়েই তাঁর ‘পাশে’ রয়েছে দল।

সেই সঙ্গেই আরও এক বার মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে দুষেছেন অভিজিৎ। তিনি বলেন, ‘‘যা হচ্ছে, তা তো মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই হচ্ছে। একটু পরেই হয়তো পুলিশ এসে এখানেও ঝাঁপিয়ে পড়বে। আমরা সহমর্মিতা জানাতে এসেছি। ভেঙে পড়বেন না। আমরা সম্পূর্ণ ভাবে আপনাদের পাশে আছি।’’

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন রূপা এবং চিত্তরঞ্জনও। রূপা বলেন, ‘‘কাদের ঘুষ দিয়ে চাকরি হয়েছে, খুঁজলেই তাঁদের পাওয়া যাবে। তাঁদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে কেন?’’ এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান গোটা ঘটনায় ব্রাত্য বসুর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি জানান, এসএসসির বর্তমান চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে কিছু কথা বলতে চান তিনি। চিত্তরঞ্জন বলেন, ‘‘আমি অধ্যাপক সিদ্ধার্থ মজুমদারকে স্পষ্ট ভাবে মনে করিয়ে দিতে চাই, উনি এই সরকারের কলেজ সার্ভিস কমিশনের প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন। উনি যে ভাবে তা পরিচালনা করেছিলেন, তার পর ওঁকে যে ভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তা ওঁর কাছেও বেদনাদায়ক। আমি চাইব উনি স্বমহিমায় ফিরুন। নিজের মানসিকতা, শিক্ষা, সংস্কার নিয়ে মাথা উঁচু করে উঠে দাঁড়িয়ে কাউকে পরোয়া না করে সুপ্রিম কোর্টের কাছে যান।’’


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ