দেশ 

নীতিশ নাইডু চিরাগ সমর্থন না করলে লোকসভাতেই আটকে যেত ওয়াকফ সংশোধনী বিল!

শেয়ার করুন

বুলবুল চৌধুরী : রাত দুটো তারিখ তেসরা এপ্রিল বৃহস্পতিবার লোকসভায় পাশ হয়ে গেল ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৪। 2 এপ্রিল বুধবার বেলা বারোটার সময় লোকসভায় এই বিল পেশ করা হয়। মনে করা হচ্ছিল এই বিলকে সামনে রেখে মোদি সরকার বিরোধী জোটকে ভেঙে দিতে পারে। রাত দুটোই যখন ভোটাভুটি হল ভোটাভুটির ফলাফলে স্পষ্ট হয়ে ধরা দিল বলতেন জোটের শরিক দলের সাংসদ সংখ্যা ২৯৩, ওয়াকফ সংশোধনী বিল এর পক্ষে ভোট পড়েছে ২৮৮। এ থেকে স্পষ্ট এনডিএ জোট শরীকদের মধ্যে পাঁচজন এই বিলের পক্ষে ভোট দেননি। উল্টোদিকে ইন্ডিয়া জোটের সমগ্র বিরোধী দলের সাংসদ সংখ্যা হচ্ছে ২৩৪ বিপক্ষে ভোট পড়েছে ২৩২।

লোকসভায় কোন বিল পাস করতে গেলে কমপক্ষে ২৭২ টি ভোট তাকে পেতে হবে। এই বিলের পক্ষে ২৮৮ কি ভোট পড়েছে? অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠ তার চেয়ে ১৬ টি ভোট বেশি! আর চন্দ্রবাবু নাইডু যিনি নিজেকে মুসলিমদের ত্রাতা হিসেবে দাবি করে থাকেন তার রয়েছে ১৬ জন সাংসদ। যদি চন্দ্রবাবু নাইডু এই বিলের বিপক্ষে ভোট দিতেন তাহলে এই বিলের পক্ষে ২৭২ টি ভোট পড়তো পাস হইতো হত কিন্তু সেটা বুড়ি ছুঁয়ে। এরপর রয়েছেন নীতিশ কুমার যার সাংসদ সংখ্যা ১২ জন আর এই ১২ জন যদি ভোট না দিতো তাহলে এই বিলের পক্ষে ভোট পর্যন্ত ২৬০ টি। চিরাগ পাসওয়ান রাম বিলাস পাশওয়ান এর পুত্র। রাম বিলাস তার রাজনৈতিক জীবনে কোন দিন মুসলিম এবং দলিত বিরোধী কোন পদক্ষেপ নেননি। গুজরাট দাঙ্গার সময় তিনি অটলবিহারী বাজপেয়ী এর মন্ত্রিসভা থেকে সরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সে কথা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু তার পুত্র চিরাগ পাশওয়ান সে কাজটি করতে পারলেন না আর যদি করতে পারতেন তাহলে এই বিলের পক্ষে ভোট পড়তো ২৫৫ টি। জয়েন চৌধুরী ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বিশিষ্ট কৃষক নেতা প্রয়াত চরণ সিঙের পৌত্র। তিনি যদি এই বিলের বিরোধিতা করতেন তাহলে এই বিলের পক্ষে ২৫৩টি ভোট পর্যন্ত। সুতরাং নীতিশ কুমার চন্দ্রবাবু নাইডু চিরাগ পাশওয়ান এবং জয়ান চৌধুরীর মিলিত সমর্থন না থাকলে সংসদে এই বিল পাস হত না ।

Advertisement

এ থেকে এটা স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়েছে নীতিশ কুমার এতদিন ধরে যে মুসলিম দরদী সেজেছিলেন তা আসলে তার ভেক। এতদিন ধরে তিনি যে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলতেন সেটা তার অন্তরের কথা নয়। সেটা বাইরের কথা। এতদিন ধরে তিনি যে মুসলমানদের জান মালের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলতেন সেটাও কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তার মধ্যে কোন আন্তরিকতা ছিল না। ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশে হিন্দুত্বের প্রচার এবং প্রসারকে নীতিশ কুমার চন্দ্রবাবু নাইডু এবং চিরাগ পাশওয়ানের মূল লক্ষ্য বলে গতকাল সংসদে স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়েছে। এরা এদেশে সংবিধানের শাসন নয় সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসনে কায়েম করতে চাইছেন। না হলে একটি সরকার যে এককভাবে গরিষ্ঠতা পায়নি। যাদের সমর্থনের উপর দাঁড়িয়ে এই সরকার চলছে তারা যদি এই বিল দিয়ে বিরূপ মনোভাব দেখা তো তাহলে মোদি সরকারের ক্ষমতা ছিল না, এটা সংসদে পেশ করার। সুতরাং দেশের সংখ্যালঘু মুসলমানদের কাছে এটা জলের মতো স্বচ্ছ ভাবে ধরা পড়েছে যে এই সকল মেকী ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির তুলনায় বিজেপির কট্টর হিন্দুত্ব অনেক ভালো।

 


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ