আমেরিকার শেয়ার বাজারে ধস! চাঞ্চল্য বিশ্বজুড়ে
বাংলার জনরব ডেস্ক : ধস নেমেছে ওয়াল স্ট্রিটে। পশ্চিমের একাধিক দেশের শেয়ার বাজারেও বিনিয়োগকারীদের মাথায় হাত পড়েছে। মঙ্গলবার ভারতে শেয়ার বাজার খোলার পরে প্রাথমিক ভাবে সেনসেক্সের সূচকেও পতন দেখা গিয়েছে।
২০২২ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত সোমবার সর্বকালীন পতন হয়েছে ন্যাসড্যাক-এর সূচকে। ‘এস অ্যান্ড পি ৫০০’-এর সূচকেও ফেব্রুয়ারির সর্বোচ্চ স্থান থেকে আট শতাংশ পতন হয়েছে। সম্প্রতি ফক্স নিউজ়কে দেওয়া ট্রাম্পের এক সাক্ষাৎকারকে কেন্দ্র করে অনিশ্চয়তার মেঘ জমতে শুরু করেছে। সাক্ষাৎকারে আমেরিকার মন্দার সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দেননি তিনি। অনুমান করা হচ্ছে, ট্রাম্পের ওই সাক্ষাৎকারেরই প্রভাব পড়ছে ওয়াল স্ট্রিটে।
গত রবিবার ওই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত মার্কিন অর্থনীতি নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি ট্রাম্প। যার ফলে আমেরিকার শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আরও উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও মার্কিন শীর্ষ আধিকারিকেরা বিনিয়োগকারীদের ভয় না-পেয়ে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করেছেন।
ওই সাক্ষাৎকারে আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁর নতুন শুল্কনীতি দেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘‘এই ধরনের কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করতে আমি পছন্দ করি না। আমরা যেটা করছি, সেটা খুব বড় একটা কাজ। ফলে এখন একটা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে আমরা চলেছি। আমরা আমেরিকার সম্পদ পুনরুদ্ধার করছি। সেটা খুব বড় কাজ।’’ এই লক্ষ্যে পৌঁছোতে যে কিছুটা সময় লাগবে, তা-ও মেনে নিয়েছেন ট্রাম্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই মন্তব্যের পরেই সোমবার ওয়াল স্ট্রিটে টলমল চিত্র ধরা পড়ল। সোমবার বাজার বন্ধের সময়ে ‘এস অ্যান্ড পি ৫০০’-এর সূচক ২.৭ শতাংশ নীচে ছিল, যা গত বছরের সেপ্টেম্বরের পর থেকে সর্বনিম্ন এবং ডিসেম্বরের পর থেকে এক দিনে সবচেয়ে বেশি হারে পতন। ‘ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ’-এর সূচকও ২ শতাংশ নেমেছে, যা গত বছরের ৪ নভেম্বরের পর থেকে সর্বনিম্ন। ন্যাসড্যাক-এর সূচকে সোমবার ৪ শতাংশ পতন হয়েছে, যা গত প্রায় ছ’মাসের হিসাবে সর্বনিম্ন।
ইলন মাস্কের টেসলার শেয়ার দর প্রায় ১৫.৪ শতাংশ কমে গিয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চিপ প্রস্তুতকারী সংস্থা এনভিডিয়ার শেয়ার দর কমেছে পাঁচ শতাংশেরও বেশি। এ ছাড়া মেটা, অ্যামাজ়ন, অ্যালফাবেটের মতো প্রথম সারির প্রযুক্তি সংস্থাগুলিরও শেয়ার দরে পতন হয়েছে। শুধু আমেরিকাতেই নয়, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপেও মঙ্গলবার বাজার খোলার সময়ে শেয়ার বাজার নিম্নমুখী ছিল। ভারতে মঙ্গলবার সকালে বাজার খোলার সময়ে সেনসেক্স ৪০০ পয়েন্ট পতন হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে জাপানের শেয়ার বাজারে নিকি ২২৫-এর সূচক ২.৫ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপির সূচক ২.৩ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ার এস অ্যান্ড পি/এএসএক্স ২০০-র সূচক ১.৮ শতাংশ কম ছিল। ইউরোপীয় দেশগুলির শেয়ার বাজারের সূচক স্টক্স ৬০০-এর সূচকও ১.২৯ শতাংশ কম ছিল সোমবার।
সৌজন্যে ডিজিটাল আনন্দবাজার