জেলা 

বেস আন নূর মডেল স্কুলে জাতীয় বিজ্ঞান দিবস উপলক্ষে বিজ্ঞান প্রদর্শনী

শেয়ার করুন

নিজস্ব সংবাদদাতা, প্রাণসাগর : জাতীয় বিজ্ঞান দিবস উপলক্ষে বেস আন নূর মডেল স্কুলের প্রাণসাগর ক্যাম্পাসে আয়োজিত হলো এক বিশেষ বিজ্ঞান প্রদর্শনী। শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তা ও দক্ষতাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ২৮ ফেব্রুয়ারি আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির ছাত্ররা নিজেদের হাতে তৈরি বৈজ্ঞানিক মডেল উপস্থাপন করে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষা বিভাগীয় প্রধান সোহেল ইকবাল। প্রদর্শনীতে শিক্ষার্থীরা পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি, শক্তি উৎপাদন, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি তৈরির বিভিন্ন মডেল উপস্থাপন করে।

তাদের প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ভ্যাকিউম ক্লিনার, মিক্সার মেশিন, ডায়ানামো, স্টেথোস্কোপ, পেরিস্কোপ, ড্রোন, হাইড্রলিক যান, রেজোন্যান্স ফ্রিকোয়েন্সি মডেল এবং প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার সংক্রান্ত বিভিন্ন উদ্ভাবন। শিক্ষার্থীরা সহজলভ্য ও পরিত্যক্ত উপকরণ ব্যবহার করে এসব মডেল তৈরি করেছে, যা তাদের সৃজনশীলতা এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতার পরিচয় বহন করে। প্রদর্শনীতে বিচারকদের রায়ে প্রথম স্থান অধিকার করে নবম শ্রেণীর মামুন রহমান ও রিজুয়ান হকের তৈরি ভ্যাকিউম ক্লিনার, যা বায়ুর চাপ ব্যবহার করে ধুলো ও ছোট ছোট আবর্জনা পরিষ্কার করতে সক্ষম। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে দশম শ্রেণীর সাহেব আক্তার ও দেব সরকারের তৈরি ডায়ানামো, যান্ত্রিক শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তর করতে পারে। তৃতীয় স্থান অর্জন করে পঞ্চম শ্রেণীর দুই খুদে বিজ্ঞানী আরিয়ান সরকার ও আজমল আহমেদ সরকারের তৈরি স্টেথোস্কোপ। তারা অব্যবহৃত পাইপ ও বেলুন ব্যবহার করে এমন একটি স্টেথোস্কোপ তৈরি করেছে, যা চিকিৎসকদের ব্যবহৃত আসল স্টেথোস্কোপের মতোই কাজ করে। বিচারকদের মতে, এত অল্প বয়সে এমন অভিনব চিন্তা সত্যিই প্রশংসনীয়।

Advertisement

দশম শ্রেণীর ছাত্র সাহেব আক্তার, যার ডায়ানামো প্রকল্প দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে, সে বলে, “এই প্রকল্প তৈরি করতে আমাদের চার-পাঁচ দিন লেগেছে। একাধিকবার ব্যর্থ হয়েছি, কিন্তু শিক্ষকদের উৎসাহে আমরা হাল ছাড়িনি। শেষ পর্যন্ত সফল হয়ে আমরা খুব আনন্দিত।”

শিক্ষার্থীদের এমন সৃজনশীলতা দেখে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনন্দিত। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে বিজ্ঞান প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে বলে আশ্বাস দেন বিদ্যালয়ের শিক্ষা বিভাগীয় প্রধান সোহেল ইকবাল। তিনি বলেন, “বিজ্ঞান হলো উদ্ভাবনের চাবিকাঠি। এই ধরনের প্রদর্শনী শিক্ষার্থীদের চিন্তাশক্তিকে প্রসারিত করে এবং বাস্তব জীবনের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ায়।”

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দিতে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা খাদেমুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা বাড়াতে এই ধরনের প্রতিযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই তারা বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করুক এবং ভবিষ্যতে বড় বিজ্ঞানী হয়ে উঠুক।”

উপস্থিত সকলেই এই আয়োজনের প্রশংসা করেন এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ উদ্ভাবনের জন্য শুভকামনা জানান।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ