দুইদিন ধরে মুসাবাকাতুল কুরআন ও কেরাত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হলো চুনাখালীতে, পিছিয়ে পড়া সুন্দরবন এলাকায় ইসলামি শিক্ষার প্রচার এবং প্রসারে আনোয়ার হোসেন কাসেমী যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তা প্রশংসনীয়
সেখ ইবাদুল ইসলাম : কলকাতা থেকে প্রায় 80 কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকার চুনাখালীতে গত ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি দুদিন ধরে মুসাবাকাতুল কুরআন ও কেরাত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানে পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোরআনের পাখিরা অর্থাৎ যে সকল ছেলেমেয়ে কোরআনকে কন্ঠস্থ করার জন্য পড়াশোনা করছেন পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন মাদ্রাসায়,তারা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। মক্তবের পড়ুয়া থেকে শুরু করে হাফেজ কারীরা এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় স্থান অধিকারীদের পুরস্কার দেয়া হয়। প্রথম পুরস্কার হিসেবে ১৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে ১২০০০ টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে দশ হাজার টাকা সাম্মানিক হিসাবে দেওয়া হয়। এই প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয় দারুল উলুম জামিয়া জাকারিয়া সুন্দরবন মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে। চুনাখালীতে অবস্থিত এই মাদ্রাসাটি এক কথায় দ্বিতীয় দেওবন্দ হওয়ার পথে। এই মাদ্রাসার প্রাণপুরুষ তথা প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আনোয়ার হোসেন কাসেমী ২০০৫ এই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। আজ তা মহীরুহে পরিণত হয়েছে।
মুসাবাকাতুল কুরআন ও কেরাত প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে কার্যত দেশ-বিদেশের বহু আলেম ওলামাদের ভিড়ে চাঁদেরহাট দেখা যায় চুনাখালীতে। ১৫ ও ১৬ ই ফেব্রুয়ারি দুইদিন ধরে এই অনুষ্ঠান চললেও এর প্রস্তুতি চলেছে প্রায় এক মাস ধরে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রতিযোগীদের খাওয়া-দাওয়া থাকার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে দেশ এবং বিদেশ থেকে আসা বিভিন্ন অতিথিদের যে সম্মান দেখিয়েছেন মাওলানা আনোয়ার হোসেন কাসেমী তা এক কথায় অনবদ্য।
সবচেয়ে বড় কথা হলো সুন্দরবনের মতো পিছিয়ে পড়া এলাকায় কোরআনের আলো জ্বালানোর যে উদ্যোগ মাওলানা আনোয়ার হোসেন কাসেমী নিয়েছেন তার প্রশংসা করতেই হয়। পিছিয়ে পড়া এই এলাকায় যেখানে এখনো পর্যন্ত ঝা চকচকে কলকাতার সভ্যতার সব আলো গিয়ে পৌঁছায়নি সেখানে নিরবে নিভৃতে কুরআনের আলো জ্বালানোর কাজ করে চলেছেন মাওলানা আনোয়ার হোসেন কাসেমী।
২০০৭ সাল থেকে মাওলানা আনোয়ার হোসেন কাসেমীর সঙ্গে এই প্রতিবেদকের ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকলেও চুনাখালীতে এই প্রথম গিয়েছিলাম। দারুন উলুম জামিয়া জাকারিয়া মাদ্রাসার প্রাঙ্গণ দেখে চমকে উঠেছি এত সুন্দর, এত ভালোভাবে পরিকাঠামো নির্মাণ করা যেতে পারে পিছিয়ে পড়া সুন্দরবন এলাকায় তা এই মাদ্রাসাকে না দেখলে ভাবতেই পারতাম না। সুন্দরবন দারুল উলুম জামিয়া জাকারিয়া মাদ্রাসার ভর্তি এবং তার নানা সুবিধা অসুবিধা নিয়ে পরবর্তীকালে আমরা আরেকটা প্রতিবেদন করব। সেটা আপনারা অবশ্যই দেখবেন এবং আপনার সন্তানকে যদি কোরআনের আলো কোরআনের শিক্ষাকে দিতে চান তাহলে অবশ্যই দারুল উলুম জামিয়া জাকারিয়া মাদ্রাসায় সন্তানকে ভর্তি করতে পারেন। আমাদের বিশ্বাস আপনি নিরাশ হবেন না।
শেষ কথায় বলব আনোয়ার হোসেন কাসেমী যেভাবে পিছিয়ে পড়া সুন্দরবন এলাকায় ইসলামিক শিক্ষাকে এবং তার প্রচার এবং প্রসারকে অব্যাহত রেখেছেন তার সাফল্য একদিন তিনি অবশ্যই পাবেন।
মঞ্চে উপবিষ্ট মুফতী যোবায়ের হোসেন কাসেমী, সেখ ইবাদুল ইসলাম, সাইখুল হাদিস মুফতি লিয়াকত আলী, অধ্যাপক জাহান আলি পূরকাইত, দাঁড়িয়ে আছেন মাওলানা আনোয়ার হোসেন কাসেমী।
এই পবিত্র অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, শাইখুল হাদীস আব্দুল হামীদ কাসেমী, মুফতি লিয়াকত আলী, মুফতী যোবায়ের কাসেমী, মাওলানা ইলিয়াস মাজাহেরি, আজিজুল হক, শিক্ষারত্ন নুরনবী জমাদার, শিক্ষারত্ন মোফাক্কার হোসেন মল্লিক, সাহিত্যিক সেখ ইনসুর আলী, মুফতি আতাউল্লাহ কাসেমী, শিক্ষাবিদ আনোয়ার হুসাইন কাসেমী, শিক্ষক ও সাংবাদিক সেখ ইবাদুল ইসলাম, শিক্ষাবিদ আব্দুর রউফ, অধ্যাপক জাহান আলি পুরকাইত, মুফতি হাসানুজ্জামান, মুফতি জাকারিয়া, মাওলানা আব্দুল জাব্বার কাসেমী,আব্দুল আলিম মোল্লা প্রমুখ।