মেদিনীপুরে ৪ ই ফাল্গুন ‘মওলা পাক’ এর উরস
বিশেষ প্রতিনিধি : ‘মওলা পাক’- নামে খ্যাত মহান সুফি সাধক হযরত সৈয়দ শাহ মুরশেদ আলী আল কাদেরী আল বাগদাদী-র ১২৪ তম বার্ষিক উরস উৎসব আজ ৪ই ফাল্গুন, ১৭ ই ফেব্রুয়ারি সোমবার যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। তিনি ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদ(সঃ) এর ৩২ তম এবং একই সঙ্গে সুফি কাদেরিয়া তরিকার প্রতিষ্ঠাতা ‘বড় পীর সাহেব’, গওসুল আযম -হযরত আব্দুল কাদির জিলানী-র ১৯ তম বংশধর।
১৩০৭ বঙ্গাব্দের ৪ই ফাল্গুন, ইংরেজি ১৯০১ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ই ফেব্রুয়ারি মওলা পাকের ‘বেসালে হক’ এর পর থেকে বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী প্রতি বছর ৪ই ফাল্গুন এই উরস উৎসব পালিত হয়ে আসছে। এই উপলক্ষ্যে মেদিনীপুর শহরের জোড়া মসজিদে অবস্থিত মওলা পাকের মাযার শরীফে, পার্শ্ববর্তী দায়রা পাকে ও সাধনস্থল কাঁসাই নদীর তীরে অবস্থিত ইস্ত্রীগঞ্জ পাকে কয়েকদিন আগে থেকেই ভক্ত ও পুণ্যার্থীদের ঢ্ল নেমেছে।
‘মওলা পাক’ এর বর্তমান স্থলাভিষিক্ত উত্তরাধিকারী ও সিলসিলা এ কাদেরিয়া -র সাজ্জাদানশিন এবং সেইসঙ্গে মেদিনীপুর জোড়া মসজিদ ও মাযার শরীফের মুতাওয়াল্লী হযরত সৈয়দ শাহ ইয়াসূব আলী আলকাদেরী-র পরিচালনায় ও তত্ত্বাবধানে বর্তমানে এই উরস পালিত হচ্ছে।
তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার পূর্ব বঙ্গে ‘মওলা পাক’ এর অসংখ্য ভক্ত থাকার কারণে ১৯০১ সালে তাঁর ‘বেসালে হক’এর পরের বছর প্রথম বার্ষিক উরসে অবিভক্ত বাংলার পূর্ব বঙ্গের রাজবাড়ি থেকে পুরো ট্রেন রিজার্ভ করে ভক্তরা মেদিনীপুর আসেন। এই ঐতিহ্য পরের বছর গুলিতেও চলতে থাকে। এরপর দেশভাগ হয়, তারও পরে বাংলাদেশ গঠিত হয়, কিন্তু দুই দেশের সহযোগিতায় এই উরস স্পেশ্যাল ট্রেন আসতেই থাকে, ফলে এই উরস উৎসব আন্তর্জাতিক উৎসবে পরিণত হয়। এবছর অবশ্য অনিবার্য কারণে এই স্পেশ্যাল ট্রেন আসতে পারেনি।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ‘মওলা পাক’ ও তাঁর বংশধরদের ভক্ত ও শিষ্য রয়েছেন। এই উৎসবে তাই জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার মানুষ যোগদান করেন।
এই উৎসবকে কেন্দ্র করে একটি বিশাল মেলা বসে, যা কয়েকদিন ধরে চলে।