বিজেপির বিভাজন নীতির বিরুদ্ধে কংগ্রেসই একমাত্র বিকল্প, তৃণমূল ত্যাগ করে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে বললেন প্রণব পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়!
বাংলার জনরব ডেস্ক : রাজনৈতিক এবং ক্ষমতার স্বাদ উপভোগ করার জন্য জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রে হেরে যাওয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দিয়েছিলেন। কিছু পাওয়ার আশায় কিন্তু তৃণমূল নেত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন যে এই ব্যক্তিকে দিয়ে কোন কাজ হবে না। না আছে জনসমর্থন আর না আছে বাবার মত কারিসীমা। তাই তাই অনেক আশা নিয়ে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলের যোগ দিয়েছিলেন। তৃণমূল তাকে রাজ্যসভার সদস্যও করেনি, বেশ কয়েক বছর কাটানোর পর যখন উপলব্ধি করতে পারলেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে কিছু দেবে না তখন তিনি অন্য আরেকটা শাসক দলে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। সেখানে হয়তো সুযোগ-সুবিধা পাননি তাই শেষ পর্যন্ত ফিরে এলেন কংগ্রেসে।
আজ বুধবার বিধান ভবনে কংগ্রেসে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিলেন দেশের প্রাক্তন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সন্তান অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার তাকে কংগ্রেসের পতাকা তুলে দেন এবং তৃণমূল থেকে কংগ্রেসে যোগ দিলেন প্রণব পুত্র।পুরনো দলে ফিরে অভিজিতের দাবি, বিভাজনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে কংগ্রেস ছাড়া কোনও বিকল্প নেই। সেই লক্ষ্যেই এই প্রত্যাবর্তন বলে জানালেন প্রণবপুত্র। অনুমান করা হচ্ছে, ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট পেতে পারেন অভিজিৎ।
কিছুদিন আগে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের কাছে কংগ্রেসে ফেরার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন অভিজিৎ। তাঁর সেই ইচ্ছায় অনুমোদন দেওয়ার পরই প্রদেশ নেতৃত্বকে তা জানিয়েও দেওয়া হয়। অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় একটা সময় কংগ্রেসের সাংসদ ছিলেন। প্রণববাবু রাষ্ট্রপতি হয়ে যাওয়ার পর তাঁর ছেড়ে যাওয়া কেন্দ্র জঙ্গিপুর থেকে উপনির্বাচনে জিতে সাংসদ হন তিনি। ২০১৪ সালে ফের জঙ্গিপুর থেকে সাংসদ হন। কিন্তু ২০১৯ সালে জঙ্গিপুরে তৃণমূল প্রার্থীর কাছে বিপুল ভোটে পরাজিত হন অভিজিৎ। তার পর থেকেই কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে যান।
২০২১ সালের ৫ জুলাই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন অভিজিৎ। সে সময় বলেছিলেন তিনি মানুষের জন্য কাজ করতে চান। কিন্তু রাজ্যের শাসকদলও সেভাবে ব্যবহার করেনি তাঁকে। অভিজিৎকে লোকসভা বা বিধানসভা কোনও নির্বাচনেই প্রার্থী করা হয়নি। বস্তুত গত ৩ বছর তৃণমূলেও সেভাবে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি অভিজিৎবাবুকে। গত কয়েক মাস তৃণমূলে যোগ নিয়েও তাঁর আক্ষেপ তৈরি হয়। কাজের সুযোগ তিনি পাচ্ছেন না বলে জানান। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই আনুষ্ঠানিক ভাবে হাত শিবিরে ফিরলেন অভিজিৎবাবু। অনুমান করা হচ্ছে, আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে টিকিট দেবে হাত শিবির।
বুধবার প্রদেশ সভাপতির হাত থেকে কংগ্রেসের পতাকা তুলে নিয়ে অভিজিৎ বলেন, “বিজেপির বিভাজনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস ছাড়া কোনও বিকল্প নেই। আজ এই সময়েও ভারতের প্রতিটি গ্রামে অন্তত এক থেকে দুইজন কংগ্রেসি পরিবার রয়েছেন। আমার দায়িত্ব থাকবে। কংগ্রেসের প্রতি তাঁদের আস্থা ফিরিয়ে আনার।” একইসঙ্গে তাঁর দাবি, “কংগ্রেস হল এমন একটা দল যারা সকলকে নিয়ে চলতে পারে।” শুধু তাই নয়, ‘কংগ্রেসের গুরুত্ব বোঝাতে দিল্লির নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি বলেন, “দিল্লির নির্বাচন প্রমাণ করে দিয়েছে কংগ্রেস ছাড়া কারও অস্তিত্ব নেই।”
অবশ্য অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় কে কংগ্রেস দল দলে নিয়ে লাভ কিছু হবে বলে মনে হচ্ছে না। এমনিতেই প্রণব বাবুর সেই অর্থেই বাংলায় জনপ্রিয়তা নেই। অন্যদিকে অভিজিৎ বাবুও খুব বড় মাপের নেতা ছিলেন না সংগঠন কিছু বোঝেন বলে মনে হয় না। সুতরাং অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় কে কংগ্রেস দল নিয়ে বোঝা বাড়ানো ছাড়া আর কিছুই হলো না বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছেন। কংগ্রেস দলের উচিত ছিল এই মুহূর্তেই বাংলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের কোন বড় নেতা বা জনপ্রিয় কোন মুখকে সামনে তুলে ধরা। একমাত্র মুসলিম সমাজের মধ্যে কংগ্রেস যদি নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে পারে তবেই আগামী দিনে এই রাজ্যে কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। নচে ৎ কোন লাভই হবে না।