অন্যান্য কলকাতা 

Madhyamik Examination 2025 : ভূগোলে ভালো নাম্বার পাওয়ার টিপস 

শেয়ার করুন

ভূগোলে ভালো নাম্বার পাওয়ার টিপস

অপর্ণা বিশ্বাস

শিক্ষিকা,পাথরঘাটা হাই স্কুল (উ: মা:)

২০২৫ শিক্ষাবর্ষের সকল মাধ্যমিক ছাত্র-ছাত্রীদের সাফল্য কামনা করে এবং ভূগোল বিষয়ে কি করে ১০০ শতাংশ নম্বর পাওয়া যায় তার একটা সংক্ষিপ্ত রূপরেখা আলোচনা করা হলো। প্রথমেই বলে রাখি, ভূগোল বিষয়ে বিজ্ঞান বিষয়ের মত ১০০% নম্বর পাওয়া খুবই সহজ। তবে কয়েকটি সতর্কতা ও উপস্থাপনার উপর নজর দেওয়া প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে, অন্যান্য সাবজেক্ট এর থেকে ভূগোল বিষয়ে ছবি আঁকার দক্ষতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

Advertisement

এখন তোমরা সকলেই পরীক্ষার একেবারে দোর গোড়ায় পৌঁছে গেছো। যে কথাগুলো এখানে আলোচনা করব সকলেই হয়তো সেগুলো অভ্যাস করেছো, একবার সকলে মিলিয়ে নেওয়া যাক। মাধ্যমিক পরীক্ষায় ১৪ টি বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন, ২২ টি এক নম্বরের প্রশ্ন, ৬টি দু নম্বরের প্রশ্ন নম্বরে প্রশ্ন, ৪টি তিন নম্বরের প্রশ্ন, ৪টি পাঁচ নম্বরে প্রশ্ন এবং ১০টি ম্যাপ পয়েন্টিং করতে হয়। যদি ৩৬ টি এক নম্বরের প্রশ্ন এবং ১০টি ম্যাপ পয়েন্টিং সঠিক করা যায় তাহলে মাধ্যমিকে ১০০/১০০ পাওয়া অনেক সহজ হয়ে যায়। এর জন্য যেটা প্রয়োজন, তোমরা ভালো একটি বা দুটি টেক্সট বই খুব সুন্দর করে খুঁটিয়ে পড়ে নাও, সাথে সাথে তোমাদের যে টেস্ট পেপারগুলো পেয়েছো সেগুলোর ছোট প্রশ্ন গুলো একবার উল্টে দেখে নাও। যদি কোন প্রশ্ন তোমার মনে হয় অজানা, তাহলে সেটিকে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কাছ থেকেই জেনে নাও। এরপর আবার একবার টেস্ট পেপারগুলো উল্টে দেখে নাও সব প্রশ্নের উত্তরগুলো মনে পড়ছে কিনা? অবশ্যই এক্ষেত্রে ঘড়ি ধরে অভ্যাস করবে। মাথায় রাখতে হবে, এই ৩৬টি প্রশ্নের উত্তর তোমাকে ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে শেষ করতে হবে। এখানে আরেকটি উল্লেখযোগ্য কথা, এই ৩৬ টি প্রশ্ন উত্তর লেখার সময়ে প্রশ্ন লেখার কোন প্রয়োজন নেই, শুধুমাত্র উত্তরটাই যথাযথ মার্জিন ও দাগ নম্বর সহ দিতে হবে ।

এবার আসা যাক ২ নম্বরের প্রশ্নে কি করে তোমরা ২/২ পাবে। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, দু নম্বরের প্রশ্নের উদাহরণ এর গুরুত্ব রয়েছে। যদি তোমরা উত্তর দাও উদাহরণ না দিয়ে, তাহলে হাফ নম্বর কাটা যাবে। ছবির জন্য কোন আলাদা করে নম্বর থাকে না, তবে ছবি দিয়ে উপস্থাপনা করলে উত্তরটা পরীক্ষকের কাছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে এবং ২/২ পাওয়ার সুযোগটা অনেকটা বেড়ে যায়।

আবার ৩ নম্বরের প্রশ্নের ক্ষেত্রে, পরীক্ষকের কাছে নম্বর বিভাজন প্রশ্ন অনুযায়ী হয়ে থাকে। যদি কোন ভূমিরূপ এর ব্যাখ্যা করতে বলা হয়, যেমন-১, অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ কিভাবে সৃষ্টি হয়? এই প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় যথাযথভাবে ব্যাখ্যা, উদাহরণ ও চিত্র দেওয়া প্রয়োজন। যেমন-২,গিরিখাত ও ক্যানিয়ন এর মধ্যে পার্থক্য করো। এই প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় তিনটি পৃথক বিষয়কে ভিত্তি করে তোমাদের তিনটি পার্থক্য সুস্পষ্টভাবে লিখতে হবে। মনে রেখো এক্ষেত্রে উদাহরণ ও চিত্র বিষয় নয়। যেমন ৩-, তথ্য প্রযুক্তি শিল্প গড়ে ওঠার তিনটি কারণ আলোচনা করো। এক্ষেত্রে তিনটি কারণ কে যথাযথভাবে উদাহরণসহ লিখতে হবে। ওপরে যে ৩ ধরনের প্রশ্নের কথা আলোচনা করা হলো, এই তিন ধরনের প্রশ্নই তোমাদের ৩ নম্বর-এর প্রশ্নের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

পাঁচ নম্বরের প্রশ্নের ক্ষেত্রে তোমাদের দুটি বিভাজন রয়েছে। একটি অংশ প্রাকৃতিক ভূগোল এবং অপর অংশটি হলে আঞ্চলিক ভূগোল। প্রাকৃতিক ভূগোল থেকে তোমাদের দুটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে এবং আঞ্চলিক ভূগোল থেকেও তোমাদের দুটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। প্রাকৃতিক ভূগোলের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় তোমাকে প্রত্যেকটি ভূমিরূপে সৃষ্টির কারণ যথাযথ ব্যাখ্যা করে উদাহরণ ও চিত্র অবশ্যই দিতে হবে। এর জন্য তোমরা একটি খাতা তৈরি করে নিয়ে প্রত্যেকটি ভূমিরূপের উদাহরণ ও চিত্র অভ্যাস করে নিতে পারো। বায়ুমণ্ডল ও বারিমন্ডল অধ্যায়ের উত্তর লেখার ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি পয়েন্টের উদাহরণ ও তথ্য যথাযথ দেওয়া প্রয়োজন।

আঞ্চলিক ভূগোলের উত্তর দেওয়ার সময় যদি তোমরা পারো একটি ভারতের ম্যাপ অংকন করে স্থান গুলিকে চিহ্নিত করে দেখাতে পারো। সাথে অবশ্যই প্রত্যেকটা পয়েন্টের যথাযথ উদাহরণ দেওয়া প্রয়োজন। যেমন- ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে জনসংখ্যার অসম বন্টনের কারণগুলি আলোচনা করো। এই ধরনের প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় মনে রাখবে উদাহরণটাই গুরুত্বপূর্ণ, উদাহরণের সাপেক্ষে তোমাকে পয়েন্ট দিয়ে লিখতে হবে।

সবশেষে মানচিত্র অনুশীলন নিয়ে যেটা বলতে চাই, দু-ধরনের ছাত্র আমার চোখে পড়ে। এক ধরনের ছাত্র যারা মানচিত্র দেখলে ভয় পায়, আর এক ধরনের ছাত্র যারা ভাবে যে মানচিত্র বিষয়টা খুবই সহজ। এই দুই ধরনের ক্ষেত্রেই বলে রাখি মানচিত্র বিষয়টা তখনই সহজ হবে যদি তুমি ধারাবাহিকভাবে নিয়ম মেনে প্রত্যেকদিন অভ্যাস চালিয়ে যাও। তোমাদের আমি যেটা বলবো, প্রত্যেকদিন রাত্রে যেকোনো একটি টেস্ট পেপারের দেওয়া মানচিত্র-এর প্রশ্নগুলি ভারতের মানচিত্রের অভ্যাস করো এবং নিজেই মিলিয়ে দেখো সেটা কতটা ঠিক হলো বা কতটা ভুল হবে। এই অভ্যাসটা পরীক্ষার আগের দিন পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। তাহলেই মানচিত্রের অংশে ১০/১০ পাওয়া সম্ভব।

আশা রাখি তোমরা এই সকল কথাগুলো মাথায় রাখবে এবং হয়তো তোমরা এগুলো আগে থেকেই মেনে চলতে। তাও পরীক্ষার আগেই একবার ঝালিয়ে নেওয়া হল। তোমাদের পরীক্ষা খুব ভালো হোক, সকল প্রশ্ন জানা আসুক এবং তোমরা ১০০ শতাংশ নম্বর পাও এবং পাবেই এই আশা রাখি। সকলে ভালো থেকো, সুস্থ থেকো।

*সৌজন্যে : অনুসন্ধান সোসাইটি*


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ