জেলা 

মাদ্রাসাকে জঙ্গি তৈরির কারখানা বলার প্রতিবাদে জেলাজুড়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক 

শেয়ার করুন

বহরমপুর, ২৫ জানুয়ারি: রাজ্য জুড়ে মাদ্রাসাকে জঙ্গি তৈরির কারখানা বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে গদি মিডিয়া। নিরীহ নিরপরাধ মুসলিমদের ধরে জঙ্গি বলে চালাচ্ছে বিভিন্ন পুলিশী সংস্থা। বিশেষ করে এখন তাদের লক্ষ্য মুর্শিদাবাদ জেলা। এই জেলাকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার ষড়যন্ত্র করছে বিজেপি সরকার। তার জন্যই মুর্শিদাবাদ জেলাকে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ঘিরে ফেলতে চাইছে বিজেপি সরকার।

তারই মাটি তৈরি করার জন্য গদি মিডিয়াকে দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে যে, মাদ্রাসাগুলো জঙ্গি তৈরির কারখানা। আর ভিন রাজ্যের এসটিএফ, এনআইএ ইত্যাদিকে দিয়ে নিরীহ নিরপরাধ মুসলিমদের জঙ্গি বলে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এই কাজে সহযোগিতা করছে রাজ্য পুলিশ। এর বিরুদ্ধে জেলাবাসীকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলনের ডাক দিলেন এসডিপিআই রাজ্য সভাপতি তায়েদুল ইসলাম। তিনি আজ জলঙ্গী ব্লকের খয়রামারী গ্ৰামে এক জনসভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন। জনসভার আয়োজন করেছিল ” ওবিসি সংরক্ষণ অধিকার রক্ষা মঞ্চ” ।

Advertisement

এটি বেশ কয়েকটি সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনের যৌথ মঞ্চ। খয়রামারি অঞ্চলের বিভিন্ন গ্ৰাম থেকে আগত প্রায় হাজার দুয়েক জমায়েতে ভাষণ দেন এপিডিআর মুর্শিদাবাদ জেলার সম্পাদক রাহুল চক্রবর্তী, লেখক ও গবেষক মানিক ফকির, মুসলিম লীগের রাজ্য সভাপতি আব্দুল হোসেন মোল্লা, বন্দী মুক্তি কমিটির মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি ডাঃ এম আর ফিজা সহ আরও অনেকে। রাহুল চক্রবর্তী বলেন ওয়াকফ বিলের মাধ্যমে মুসলিমদের সম্পত্তি কেড়ে নিয়ে কর্পোরেটদের হাতে তুলে দিতে চাইছে বিজেপি সরকার। এটা বিজেপির জল জমি জঙ্গল দখলের কর্মসূচির অংশ। এর বিরুদ্ধে মুসলিম, দলিত আদিবাসী, কৃষক সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। মানিক ফকির বলেন বিজেপি সরকার বাঙালি বিরোধী। বাঙালিদের এরা দাস শ্রমিক বানাতে চাইছে। কোন রাজনৈতিক দল আন্তরিক ভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে চাইছে না। বাংলাকে বাঁচানোর জন্য জনগণকেই লড়তে হবে।

ডাঃ এম আর ফিজা বলেন বিজেপি সরকার সব ধরনের সংরক্ষণ তুলে দিতে চাইছে। বামপন্থী দলগুলো প্রথম থেকেই জাতি ভিত্তিক সংরক্ষণের বিরুদ্ধে। আর্থিক মানদন্ডের নিরিখে সংরক্ষণ করতে চায়। তাই তারা কলকাতা উচ্চ আদালতের ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করা রায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলছে না। আমাদের বাতিল হওয়া সার্টিফিকেট ফিরিয়ে আনার জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। একটি প্রতিনিধি দল জলঙ্গী ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক এর কাছে দাবিপত্র জমা দেন। তাজামূল হকের নেতৃত্বে পাঁচ জনের প্রতিনিধি দলে ছিলেন লুৎফর রহমান, অহিদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম ও বাজিরুল ইসলাম। দাবিগুলো হল, ১. কিছু টিভি চ্যানেল বা সাংবাদিক বেসরকারি মাদ্রাসাকে জঙ্গী তৈরির কারখানা বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। সম্প্রীতি নষ্ট করছে। এই ঘৃণিত ষড়যন্ত্র অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

২. নিরাপরাদ মানুষদের মিথ্যা জঙ্গি অভিযোগে গ্রেফতার বন্ধ করতে হবে।

৩.  বাতিল করা ওবিসি সার্টিফিকেট পুনরায় চালুর সমস্ত সুব্যবস্থা করতে হবে।

৪.  ওয়াকফ বিলের মাধ্যমে মসজিদ, মাদ্রাসা, দরগা ,ঈদগাহ ,কবরস্থান সহ সমস্ত ধর্মীয় সম্পত্তি দখলের সরকারি ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।

৫. মৌলানা সহ সাধারণ মানুষকে পুলিশ প্রশাসন বিনা প্রমাণে জঙ্গি তকমা লাগিয়ে গ্রেপ্তার -সহ হয়রানি করছে, তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

৬.  আপনার ব্লকের যে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্যের বাইরে আছে তাদেরকে সেখানকার পুলিশ প্রশাসন বিভিন্ন সময়ে অযথা বাংলাদেশি তকমা লাগিয়ে হয়রানি করছে। অবিলম্বে হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে।

৭. ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে যে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিক দুর্ঘটনার ফলে মারা যাচ্ছেন তাদের লাশ আনার সমস্ত খরচ রাজ্য সরকারকে বহন করতে হবে। তা ছাড়া লাশ আনতে এলাকার থানার পুলিশি হয়রানি বন্ধ করে দ্রুত লাশ আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

৮. যে সমস্ত শ্রমিক ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছেন বা পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন তারা যেন উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পান তার সুব্যবস্থা করতে হবে।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ