মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে গাফিলতির অভিযোগে ১২ জন জুনিয়ার চিকিৎসককে সাসপেন্ড করার প্রতিবাদে কর্মবিরতি ডাক জুনিয়র ডক্টরস ফোরামের
বাংলার জনরব ডেস্ক : প্রসূতি মহিলার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসকদের গাফিলতি হয়েছে এই অভিযোগ এনে এবং তদন্ত রিপোর্ট সামনে আসার পর মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের 12 জন জুনিয়র চিকিৎসককে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ে রাজ্য সরকার। আর এতেই তীব্র আন্দোলনের হুমকি দিল জুনিয়ার ডক্টরস ফ্রন্ট। আজ শুক্রবার থেকে এই আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে বলে সংগঠনের নেতা দেবাশিস হালদার জানিয়েছেন।
আগামী ১৮ জানুয়ারী শিয়ালদহ আদালত চত্বরে মহা সমাবেশের ডাক দিয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন। দুপুর দেড়টা থেকে জমায়েতের আহ্বান জানিয়েছে তারা। শুধু তাই নয়, আগামীকাল বিকেলে বিধাননগর কমিশনারেটের সামনেও বিক্ষোভ সমাবেশ করতে চলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। অন্যদিকে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে কর্মবিরতির ঘোষণা করা হয়েছে সংগঠনের তরফে।
ঘটনা হল, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় সাসপেন্ড হওয়া ১২ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতিতে মৃত্যুর ধারায় এফআইআর দায়ের হয়েছে। যার নেপথ্যে চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
তাঁদের পর্যবেক্ষণ আরজি করের ঘটনার পর থেকে যেভাবে আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে, সেই মরাল ভেঙে দিতেই ইচ্ছে করে সরকার ডাক্তারদের ওপর এহেন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। অথচ বিষ স্যালাইন নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্যই করছে না রাজ্য। আর ঠিক সেই কারণেই আগামীকালের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন।
বস্তুত, বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব রিপোর্ট পড়ে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন, সার্জারির সময়ে সিনিয়র চিকিৎসকদের তরফে যে যে বিষয় মেনে চলার কথা ছিল, তার অনেকটাই মানা হয়নি বলে জানা গেছে। মুখ্যসচিব জানান, দুটি রিপোর্টেই মেদিনীপুরে চিকিৎসকদের গাফিলতির তথ্য উঠে এসেছে। সেদিন আরএমও এবং কল ডিউটিতে যে ডাক্তাররা ছিলেন তাঁরা ওটিতে দেখতে যাননি। চিকিৎসক সৌমেন দাসকে ডাকা হলেও তিনি একবার দেখেই চলে গিয়েছিলেন। জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে অপারেশন করা হয়েছিলয অ্যানাস্থেসিয়া সিনিয়র ডাক্তারদের দিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। সেটাও পিজিটিকে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ পুরো প্রক্রিয়ায় গাফিলতি ছিল। এমনকী রোগীর বাড়ির লোককে দিয়ে জোর করে মুচলেখাও লেখানো হয়েছিল।
সেই রেশ টেনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ যাঁরা সেদিন দায়িত্বে ছিলেন, যাঁদের জন্য এই কাণ্ড হয়েছে, তাঁদের রাখা যাবে না। তাঁদের হাতে অন্য রোগীরও ক্ষতি হতে পারে। সেই ঝুঁকি নেওয়া যাবে না।’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের জবাব চাওয়ার অধিকার আছে। যেখানে অন্যায় হয়, সেখানে কথা উঠবেই। আমরা যেমন চিকিৎসকদের প্রতি সহানুভূতিশীল, তেমনি মানুষের দিকটাও দেখতে হবে। তাই তদন্তের সমস্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখে সাসপেন্ডের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’