কলকাতা 

এবারের কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় যোগ দিচ্ছে না বাংলাদেশ! কেন দিচ্ছে না, কী উত্তর দিলেন বই মেলা কর্তৃপক্ষ?

শেয়ার করুন

সেখ ইবাদুল ইসলাম : ১৯৯৬ সালের পর কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় বাংলাদেশের কোন প্রকাশনা সংস্থা এবার অংশ নিচ্ছে না। ৪৮ তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় কেন নেই বাংলাদেশ এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বইমেলা কর্তৃপক্ষ তথা পাবলিশার্স এন্ড গিল্ড এর সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন আমাদের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ এবারের বইমেলায় অংশ নিচ্ছে না। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বিষয় তবে আপনারা সকলেই জানেন যে কি পরিস্থিতি চলছে, সেই কারণেই বাংলাদেশ এবারের বইমেলায় অংশ নিচ্ছে না।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লির ম্যাক্স মুলার ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করতে গিয়ে ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন,”১৯৯৬ সাল থেকে বাংলাদেশ কলকাতা বইমেলাতে আসছিল। এবারে যে ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি চলছে, সেই বিষয়ে আমাদের মন্তব্য করা উচিত নয়। কিন্তু আমরা সবাই জানি কী চলছে। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা বইমেলার পবিত্রতা, নিরাপত্তা এবং অন্য কোনও স্তর যাতে বিপদগ্রস্ত না হয় সেই জন্যই আমরা এবারে বাংলাদেশকে রাখতে পারছি না। যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। সাহিত্যের কোনও সীমান্ত হয় না। কাঁটাতারের বেড়া হয় না। বাংলাদেশ থেকে যাঁরা আসতে চেয়েছিলেন আমরা তাঁদের বলেছি আপনারা ভারত সরকারের মাধ্যমে আসুন।”

Advertisement

তবে এবারের বইমেলায় আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, স্পেন, পেরু, ইরান-সহ একাধিক দেশ অংশগ্রহণ করছে। একইসঙ্গে এবারের বইমেলায় কান্ট্রি থিম হল জার্মানি। বইমেলার ৪৮ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম জার্মানিকে কান্ট্রি থিম হিসাবে নির্বাচন করেছে কলকাতা বইমেলা কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত বলা প্রয়োজন,১৯৭৪ সালে জার্মানির ফ্র্যাঙ্কফুট শহরের বইমেলা থেকে অনু্প্রাণিত হয়ে কলকাতা বইমেলার যাত্রাপথ শুরু হয়েছিল। সেই জার্মানির কলকাতা বইমেলার ফোকাল থিম কান্ট্রি হওয়ার ক্ষেত্রে ৪৮ বছর সময় কেন লাগল? এই বিষয়ে বলতে গিয়ে ভারতে জার্মানির রাষ্ট্রদূত ড. ফিলিপ অ্যাকেরম্যান জানান, ”এতদিন কেন লাগল তার পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। আমরা দেরিতে এসেছি ঠিকই। কিন্তু আমরা এখন আমাদের একশো শতাংশ নিয়েই হাজির হয়েছি।”

২৮ শে জানুয়ারি সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কের পাশে অবস্থিত মাঠে এই মেলার উদ্বোধন করবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৯ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই মেলা চলবে। এ বছর থেকে বইমেলা কর্তৃপক্ষ বিশিষ্ট একজন সাহিত্যিককে তার সাহিত্য কর্মের জন্য পুরস্কৃত করবেন। এই বিশেষ সাহিত্য সম্মান এবার পাচ্ছেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক আবুল বাশার। তাঁকে দু লক্ষ টাকা এবং মানপত্র এই পুরস্কার হিসেবে তুলে দেবেন ২৮শে জানুয়ারি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

২৯ শে জানুয়ারি থিম কান্ট্রি জার্মানি দিবস পালিত হবে, ২ ফেব্রুয়ারি পালিত হবে শিশু দিবস, আর ৪ ফেব্রুয়ারি পালিত হবে সিনিয়র সিটিজেন দিবস। ৯৬ সালের পর এই প্রথম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশ দিবস পালিত হবে না। একই ভাষা সংস্কৃতির মধ্যে বাস করা সত্ত্বেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণেই বাংলাদেশকে এবার বইমেলাতে ব্রাত্য রাখার কোন বিশেষ কারণ ছিল কি? দুই বাংলার মানুষের প্রিয় ভাষা হচ্ছে বাংলা সেই ভাষায় যারা সাহিত্য রচনা করেন কলকাতা বইমেলা কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে, সেই সকল প্রনামধন্য সাহিত্যিকরা যে বঞ্চিত হচ্ছেন বা হলেন তা আর বলার অপেক্ষায় রাখেনা।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ