পারিবারিক বনভোজনের পাশাপাশি ‘শিক্ষা- সংস্কৃতি ও আমাদের সমাজ’ নিয়ে আলোচনা সুন্দরবন হাই মাদ্রাসায়
নিজস্ব প্রতিবেদন : বনভোজনের সমস্ত রকম উপকরণ নিয়ে হাজির হয়েছিল রবিবার প্রায় একশো শিশু কিশোরের দল। উত্তর ২৪ পরগনার প্রান্তিক অঞ্চল নাড়াবুনিয়ার সুন্দরবন এইচ এম টি এ হাই মাদ্রাসায়। বিভিন্ন বয়সের ছেলে-মেয়েদের জন্য নানা ধরনের প্রতিযোগিতা, পুরস্কার ও সংবর্ধনায় সেজে উঠেছিল এদিনের পারিবারিক প্রীতি বনভোজন। আর এর পাশাপাশি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ‘আমাদের সমাজ আমাদের শিক্ষা-সংস্কৃতি’ বিষয়ে বড়দের আলোচনা ছিল এ দিনের আরেক প্রাপ্তি।
শীতের শুরুতে বাঙালি উৎসবমুখর হবে, বনভোজনে বেরিয়ে পড়বে– এতে আর নতুনত্ব কি! কিন্তু না, রবিবার সুন্দরবন মাদ্রাসায় আয়োজিত এই বনভোজন ছিল বৈচিত্র্যে ভরা। শিশু কন্ঠে সূরা ফাতিহার তেলাওয়াত ও তার তরজমা দিয়ে শুরু হয় এদিন অনুষ্ঠান। প্রারম্ভিক বক্তৃতার গতানুগতিক ধারার বদলে এদিন প্রেস-কনফারেন্সের আয়োজন করে স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা। মহড়া এই প্রেস কনফারেন্সে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার সাংবাদিকদের প্রশ্নাবলী প্রথম থেকেই বেশ বুঝিয়ে দেয় দিনটা একটু অন্যরকম যাবে। একে একে বিভিন্ন ইভেন্টের টানটান প্রতিযোগিতার পাশাপাশি এদিন বিশিষ্ট গুণীজনদের উপস্থিতিতে আয়োজন করা হয় বিশেষ আলাপচারিতা। বিষয় স্থির হয়, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও আমাদের সমাজ। দীর্ঘ অভিজ্ঞতার নিরিখে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে গুণীজনদের বক্তৃতামালা। শিক্ষার উৎকর্ষতা, শিক্ষাঙ্গনের পরিকাঠামো-নৈতিকতা, শিশু মনে সুস্থ সংস্কৃতির প্রসার ইত্যাদি বিষয়ে বক্তব্য রাখেন ডঃ আফসার আলী, আব্দুর রশিদ মোল্লা, শাহ আলম, সওকত জমাদার, খাদিমুল ইসলাম, ডঃ নুরুজ্জামান, ফারুক আহমেদ, খালিদ ফজলুল্লা প্রমুখ। সংক্ষিপ্ত এই মতবিনিময়ের পর্ব সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট চিকিৎসক মঈনুদ্দিন চিশতী।
এদিন সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত গুণীজনদের সংবর্ধনা জানানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে সম্মাননা প্রদান করা হয় মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, ইঞ্জিনিয়ারিং, ডাক্তারি, ওকালতি প্রবেশিকা পরীক্ষায় এবার যারা সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছে এরকম পড়ুয়াদের। এছাড়াও শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করা হয় পারিবারিক এই বন্ধনের অন্তর্গত সেই সমস্ত ছেলে-মেয়েদের যারা গত এক বছরে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রতিটি উপহার এদিন তাঁদের স্মরণে প্রদান করা হয়, শিক্ষা-সংস্কৃতির প্রসার ও উৎকর্ষতায় যাঁদের দান সমাজ কখনো ভুলতে পারে না।
গুটি কয়েক পরিবারকে নিয়ে শুরু করা এই পারিবারিক আয়োজন এবার ২২-তম বর্ষে পড়ল বলে জানান ইংরেজির শিক্ষক খলিলুর রহমান, আবেদ আলী। সমগ্র অনুষ্ঠান দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করে নাফিসা ইসমাত, আনুশা আহমেদ, মাহমুদা খাতুন, মাসুমা মালিহা, মাইসুরা তৈয়েবা, আরিয়ান সর্দার ও আফিয়া আন্তারা । এ বছর পারিবারিক প্রীতি বনভোজনের থিম ছিল ‘ইগনাইট দ্য ইয়ং মাইন্ডস’।