সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতন সময়ের অপেক্ষা !
বাংলার জনরব ডেস্ক : সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতন শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে আন্তর্জাতিক মহল মনে করছে। এক সপ্তাহ আগে দুই বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘হায়াত তাহরির আল-শাম’ (এইচটিএস) এবং তাদের সহযোগী ‘জইশ আল-ইজ্জা’র যৌথবাহিনী সে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত বাহিনীকে ঝটিতি অভিযানে কোণঠাসা করে ফেলে।
এর পর গত এক সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ এইচটিএস নেতা আবু মহম্মদ আল-জুলানির বাহিনী দখল করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে সামরিক কৌশলগত অবস্থানের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ জনপদ হামা দখলের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাদের হাতে এসেছে আর এক গুরুত্বপূর্ণ শহর দারা। যে শহর প্রেসিডেন্ট আসাদের জন্মস্থান। এইচটিএসের পরবর্তী নিশানা রাজধানী দামাস্কাসমুখী সড়কের সংযোগরক্ষাকারী আর এক শহর হোমস। যা দখল করতে পারলেই এইটিএস-জইশ বাহিনীর যোদ্ধাদের হাতে আসাদ সরকারের পতন অনিবার্য বলে সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন।
আসাদ সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি থাকা সত্ত্বেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে উত্তর ইরাকে ‘সক্রিয়’ হয়েছে সংখ্যালঘু কুর্দদের মিলিশিয়া বাহিনী ‘সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স’ (এসডিএফ)। আসাদ ফৌজের ছেড়ে যাওয়া কিছু অঞ্চল ইতিমধ্যেই তারা দখল করেছে। তুরস্ক সমর্থিত ‘সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি’ (এসএনএ)-র সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের খবর এসেছে।
প্রসঙ্গত, এইচটিএস-এর আগে নাম ছিল নুসরা ফ্রন্ট। আমেরিকা, রাশিয়া -সহ আরও বেশ কিছু দেশ এদের জঙ্গি গোষ্ঠী বলে চিহ্নিত করেছে। তুরস্কের মদতেপুষ্ট আসাদ-বিরোধী বাহিনী ‘সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি’ (এসএনএ)-র সহযোগী গোষ্ঠী হিসেবেই এই সশস্ত্র বাহিনীর উত্থান। কিন্তু পরবর্তী সময়ে জুলানি সেই সম্পর্ক ভেঙে দেন। অন্য দিকে, ‘জইশ আল-ইজ্জা’র সঙ্গে ‘সম্পর্ক’ রয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের। যদিও একদা কট্টরপন্থী নেতা জুলানি পশ্চিমি দুনিয়ার কাছে সহিষ্ণুতার বার্তা দিতে তৎপর। আসাদ-সেনার থেকে ছিনিয়ে নেওয়া আলেপ্পোর মেয়র পদে তিনি নিয়োগ করেছেন সংখ্যালঘু এক ক্যাথলিক খ্রিস্টানকে!
গত ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে সিরিয়ায়। সেখানে যুযুধান বেশ কয়েকটি পক্ষ। ২০১১ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলিকে মদত দিয়েছিল আমেরিকা। পরবর্তী সময়ে আইএসের বাড়বাড়ন্ত রুখতে নেটো বাহিনী হামলা চালিয়েছিল। সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, গত কয়েক মাসে ইজ়রায়েলি বিমানহানায় আসাদ বাহিনীর অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাই দামাস্কাস রক্ষার জন্য তাদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া এবং ইরানের সাহায্য পেলেও তা বিদ্রোহীদের ঠেকানোর পক্ষে অপ্রতুল বলেই মনে করা হচ্ছে।