সুপ্রিম নির্দেশের পরেই, জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার অনুরোধ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
বিশেষ প্রতিনিধি : সুপ্রিম কোর্ট সকালে জুনিয়ার চিকিৎসকদের কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে। আগামীকাল বিকেল পাঁচটার মধ্যে সমস্ত জুনিয়ার চিকিৎসকদের আন্দোলন বন্ধ রেখে রোগী দেখার পরামর্শ দিয়েছেন এবং নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা উল্লেখ করে আবারও জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার অনুরোধ করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এ-ও জানান, প্রয়োজনে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনাতেও বসবেন তিনি।
সোমবার নবান্ন সভাঘরে রাজ্য প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে মমতা জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আমি খুশি, যাঁরা আন্দোলন করছেন পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এটা বাংলা বলেই সম্ভব। অন্যান্য জায়গায় আন্দোলনকারীদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমি সকলকে অনুরোধ করব কাজে যোগ দিন।’’ তার পরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যদি আপনারা (আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তার) মনে করেন কিছু বলার আছে, তবে সব সময় স্বাগত। আপনারা ৫-১০ জনের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে আসুন, আমরা কথা বলতে পারি।”
মমতা এ-ও মনে করিয়ে দেন আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নিয়েছে রাজ্য সরকার। তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য ভবনে গিয়ে আন্দোলনকারীরা যে ক’টি দাবি করে এসেছিলেন, তা সবই মেনে নেওয়া হয়েছে। এক মাস এক দিন হয়ে গিয়েছে, আমি অনুরোধ কবর, উৎসবে ফিরে আসুন, পুজোতে ফিরে আসুন। সিবিআইকে বলব তাড়াতাড়ি বিচারের ব্যবস্থা করুন।’’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু করার জন্য যা যা করার দরকার, তা করতে হবে। আমি এখনও চাই না কারও বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে। আমি চাই শান্তিপূর্ণ ভাবে কথা বলার মাধ্যমে সংযত মীমাংসা করতে।’’
হাসপাতালে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার কথাও পুলিশকে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশকে বলব অপরাজিতা টাস্ক ফোর্স তৈরি করতে। আমি মনে করি সব হাসপাতালেই পুলিশের যথাসম্ভব নিরাপত্তা রয়েছে। এ ছাড়াও নারায়ণকে (স্বরূপ নিগম) বলেছি ১০০ কোটি টাকা দিতে। আমি নারায়ণকে বলেছি, যেখানে যেখানে ফাঁক আছে তা পূরণ করতে। রেস্ট রুম, ওয়াশরুম করার নির্দেশ দিয়েছি। নিরাপত্তার প্রয়োজনে হাসপাতালগুলোও ব্যবস্থা করতে পারে।’’ এখন থেকে প্রতিটি হাসপাতালের ক্ষেত্রে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে অধ্যক্ষই যাতে থাকেন, সেই পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর পরামর্শ, অধ্যক্ষের সঙ্গে এক জন সিনিয়র ডাক্তার, এক জন জুনিয়র ডাক্তার, এক জন সিস্টার, স্থানীয় বিধায়ক ও স্থানীয় থানার আইসিকে সমিতিতে রাখার জন্য।
উল্লেখ্য, এর আগেও একাধিক বার মুখ্যমন্ত্রী জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার অনুরোধ করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর আবার এক বার একই অনুরোধ করলেন মমতা।