সায়ন লাহিড়ীর জামিন মঞ্জুর হওয়ায় উচিত রাজ্যের আবেদন খারিজ করে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট
বিশেষ প্রতিনিধি : অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের অন্যতম নেতা এবং পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজ নাম দিয়ে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন সায়ন লাহিড়ী সহ তিনজন । গত সপ্তাহে নবান্ন অভিযান ঘিরে যে অশান্তি হয়েছিল তারই পরিপ্রেক্ষিতে সায়নকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট তাকে জামিন দিয়ে দেয় সেই জামিনকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে। আজ সোমবার ছিল সেই মামলার শুনানি। রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ করে দিয়ে শীর্ষ আদালত বলেছে,ওই ছাত্রনেতার (সায়ন) জামিন মঞ্জুর হওয়াই উচিত।
সোমবার বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে শুনানি ছিল সেই মামলার। শুনানিতে হাই কোর্টের নির্দেশের বিরোধিতা করায় প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি সায়নের গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি পারদিওয়ালার প্রশ্ন, ১০০ জনের মধ্যে ওই ছাত্রনেতাকে পুলিশ কেন গ্রেফতার করল?
তার পরই কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ উল্লেখ করে বিচারপতি পারদিওয়ালার মন্তব্য, ‘‘ওই ছাত্রনেতার জামিন মঞ্জুর হওয়াই উচিত। এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু এফআইআর খারিজের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।’’ রাজ্যের কাছে তিনি জানতে চান সায়নের বিরুদ্ধে কতগুলো এফআইআর দায়ের হয়েছে। রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে জানায়, ১১টি এফআইআর দায়ের হয়েছে সায়নের বিরুদ্ধে।
রাজ্যের আইনজীবী সোমবার সুপ্রিম কোর্টে বলেন, ‘‘হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন সায়নের মা। কিন্তু তিনি কর্মসূচির ডাক দেননি। কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন সায়ন। প্রশ্ন উঠছে সায়ন নিজেই নবান্ন অভিযান কর্মসূচি করিয়েছিলেন, না কি এর নেপথ্যে অন্য কেউ আছেন?’’ যদিও রাজ্যের যুক্তিতে সায় দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। তবে সায়নের জামিন প্রসঙ্গে বিচারপতি পারদিওয়ালা মন্তব্য করেন, ‘‘প্রথমে নগর দায়রা আদালত ও পরে হাই কোর্ট থেকে জামিন নিতে পারতেন ওই ছাত্রনেতা।’’
উল্লেখ্য, সায়নের গ্রেফতারি নিয়ে শুক্রবার প্রশ্ন তুলেছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়েছিল, নবান্ন অভিযান কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন সায়ন। ওই কর্মসূচিতে পুলিশের কোনও অনুমতি ছিল না। এর পরও জমায়েত হয়েছে, মিছিলও হয়েছে। বিচারপতি সিংহের এজলাসে রাজ্যের যুক্তি ছিল, ওই কর্মসূচি কোনও ভাবেই শান্তিপূর্ণ ছিল না। সায়নের গ্রেফতারির পক্ষে যুক্তি সাজাতে, ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্বও সংযোজনের চেষ্টা করেছিলেন রাজ্যের আইনজীবী। তবে বিচারপতি সিংহের প্রশ্ন ছিল, সায়ন কোনও রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কি না। জবাবে রাজ্য জানিয়েছিল, তিনি ছাত্রনেতা। এ কথা শুনে বিচারপতি ফের প্রশ্ন করেন, সে ক্ষেত্রে সায়নকে কী ভাবে ‘প্রভাবশালী’ বলা হচ্ছে? রাজ্যের যুক্তি ছিল, সায়ন প্ররোচনামূলক বক্তব্য রেখেছিলেন। তবে রাজ্যের যুক্তি টেকেনি বিচারপতি সিংহের এজলাসে।