খোরপোশ আইন অনুসারে তালাকপ্রাপ্তা মুসলিম মহিলারাও স্বামীর কাছে খোরপোশ দাবি করতে পারবেন নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
বাংলার জনরব ডেস্ক : তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পরেও খোরপোশ আইনে মুসলিম মহিলারাও স্বামীর কাছ থেকে খোরপোশ চাইতে পারেন। এ বিষয়ে দেশে যে খোরপোশ আইন চালু রয়েছে, তা সমস্ত ধর্মের মহিলাদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
স্ত্রীর খোরপোশের দাবিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন মহম্মদ আবদুল সামসাদ নামে এক ব্যক্তি। সেই মামলাটির শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগারত্ন এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসির বেঞ্চে। শুনানিতে সামসাদের আর্জি খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ তাদের পর্যবেক্ষণে বলে, ‘‘খোরপোশকে যদি স্বামীরা তাঁদের স্ত্রীর প্রতি দাক্ষিণ্য বা খয়রাতি ভাবেন, তবে ভুল করবেন। এটা যে কোনও বিবাহিত মহিলার অধিকার। ধর্ম নির্বিশেষে সমস্ত মহিলাই এই অধিকার পাওয়ার যোগ্য।’’
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ ফিরিয়ে দিল ৩৯ বছর আগে শাহ বানো মামলার স্মৃতি। ১৯৮৫ সালে ওই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট এই একই নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তার এক বছর পরে ১৯৮৬ সালে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার মুসলিম মহিলা (বিবাহ বিচ্ছেদের পরবর্তী অধিকার) আইন প্রণয়ন করে। সেই আইনে বলা হয়, মুসলিম মহিলারা ওই খোরপোশ চাইতে পারবেন শুধু বিচ্ছেদের পরের ৯০ দিনের ‘ইদ্দত’-এর সময় টুকুই।
কিন্তু বুধবার সুপ্রিম কোর্ট এই একই বিষয়ে মামলায় ১৯৮৫ সালের রায়ই বহাল রাখল। সেই সঙ্গে আদালত বলল, ‘‘স্বামীরা অনেক সময়েই এটা বুঝতে পারেন না যে, গৃহিণীরা তাঁদের উপর মানসিক ভাবে তো বটেই এবং আরও নানা ভাবে তাঁদের উপর নির্ভরশীল। গৃহিণীরা বাড়িতে থেকে যে ভূমিকা পালন করেন এবং যে ত্যাগ স্বীকার করেন, তাঁর স্বীকৃতি দেওয়ার সময় এসেছে ভারতীয় পুরুষদের।’’
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে ভারতীয় খোরপোশ আইনে ( ১২৫ ফৌজদারী আইন) বলা আছে এক জন ব্যক্তি কখনওই তাঁর স্ত্রী, সন্তান এবং বাবা-মায়ের প্রতি আর্থিক দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারেন না।