চলে গেলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী ও শিক্ষাব্রতী এবং সাতঘরা হাই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা এস টি আলী
সেখ ইবাদুল ইসলাম: শনিবার সকালে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গেলেন মেটিয়াবুরুজের বিশিষ্ট সমাজসেবী ও শিক্ষাব্রতী সেখ তোয়েব আলী ওরফে এস টি আলী, ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তাঁর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। তিনি শুধু একজন ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচিত ছিলেন না ,পিছিয়ে পড়া মেটিয়াব্রুজ এলাকায় শিক্ষার প্রসারে অনন্য ভূমিকা রেখেছিলেন। এই এলাকার একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরির পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে ওঠা সংখ্যালঘু সমাজের আবাসিক বিদ্যালয় এবং মূল্যবোধের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসার শিক্ষার প্রসারে তাঁর ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য।
প্রথম জীবনে তিনি দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে নিজেকে একজন বড় ব্যবসায়ী হিসাবে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পর শুধু নিজের দিকে তাকান নেননি বা নিজের পরিবারের দিকে না তাকিয়ে সমাজের দুস্থ অবহেলিত ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য তিনি অকৃপণ হাতে দান করে গেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত সাতঘরা হাই মাদ্রাসা আজও এই এলাকার শিক্ষার প্রসারে অনন্য ভূমিকা গ্রহণ করে চলেছে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত মেটিয়াবুরুজ সেবা সদন এলাকার স্বাস্থ্য পরিষেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে চলেছে।
শুধু মেটিয়াবুরুজ এলাকায় নয় সমগ্র পশ্চিমবাংলা জুড়ে শিক্ষার প্রসারে এবং স্বাস্থ্যের প্রসারে তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। এখানেও একজন মানুষের মৃত্যুতে শুধুমাত্র মেটিয়াবুরুজ এলাকার নয় পশ্চিমবাংলার সংখ্যালঘু সমাজের উপরে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় এই প্রতিবেদক শিক্ষার প্রতি তাঁর আগ্রহ দেখে চমকে উঠেছিল।
গত বছর গুরুতর অসুস্থ হয়ে তিনি কলকাতার বেলভিউ নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। তার প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্যতম দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে আমি দেখা করতে গিয়েছিলাম ওই নার্সিংহোমে। বেলভিউ নার্সিংহোমের বেডে শুয়ে তিনি আমার হাত ধরে বলেছিলেন আমি তোমার প্রতি অনেকটাই বিশ্বাস রাখি আমি আশা করব তোমার হাত ধরে আমার প্রতিষ্ঠান এই এলাকায় প্রথম সারিতে পৌঁছে যাবে। তাঁর কথা রাখতে পারব কিনা জানিনা তবে আজ তাঁর মৃত্যুর শয্যা সামনে দাঁড়িয়ে এইটুকু প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলাম যতক্ষণ এই প্রতিষ্ঠানে আমি চাকরি করব তাঁর এই প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টা করে যাবো।
মরহুমের জান্নাত নসিব করুক এই কামনা করছি। তিনি সমাজ এবং দেশের জন্য যা করে গেছেন তা এক কথায় ইতিহাস হয়ে থেকে যাবে।
