আন্তর্জাতিক 

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা : আনোয়ারা-কর্ণফুলী দেয়াং পাহাড়ে মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হোক

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বিশেষ প্রতিনিধি : ভারতীয় উপমহাদেশের কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, সমাজসংস্কারক, ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের মহানায়ক, বারে বারে কারাবরণকারী ও ব্রিটিশ সৈন্যদের নির্যাতনের শিকার জননেতা, চট্টগ্রাম কদম মোবারক মুসলিম এতিমখানা ও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা, কর্ণফুলীর দক্ষিণ তীরের দেয়াং পাহাড়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্নদ্রষ্টা (মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী দেয়াং পাহাড়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য তৎকালীন বঙ্গসরকার থেকে ৫০০ একর জমি লীজ ও ঐ এলাকার বিখ্যাত জমিদার আন্নার আলী খান (আনোয়ার আলী খান) থেকে ৫০০ খানি জমি রেজিষ্ট্রীমূলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য উপহার প্রাপ্ত হন) মাওলানা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর সেই স্মৃতিবিজড়িত দেয়াং পাহাড়ের ভূমিতে সরকার কর্তৃক একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ মুসলমান ইতিহাস সমিতির গোলটেবিল বৈঠকে বিজ্ঞ আলোচকবৃন্দ।

২ নভেম্বর ২০২৩. বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সুলতান আহমদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ মুসলমান ইতিহাস সমিতির গোলটেবিল বৈঠক সমিতির সভাপতি সোহেল মো. ফখরুদ-দীনের সভাপতিত্বে ও সমিতির মহাসচিব বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ মাস্টার আবুল হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী জননেতা অধ্যক্ষ স. উ. ম. আবদুস সামাদ। বিষয়ের উপর মূল গবেষণাপত্র পাঠ করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল।

Advertisement

মুখ্য আলোচক ছিলেন নজরুল গবেষক আলহাজ্ব এম এ সবুর। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিশিষ্ট লেখক-গবেষক আবদুর রহিম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুর হোসেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. আনোয়ার হোসেন, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মীর আবদুর রহিম মনিরী, মাওলানা ওবায়দুল মোস্তফা কদম রসুলী, সৈয়দ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ সমরখন্দি, অ্যাডভোকেট এ ডি এম আরছুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন যুগ্ম পরিচালক মো. একরাম হোসেন, চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, ইসলামাবাদীর দৌহিত্র এমএন গাজী ইসলামাবাদী, মাওলানা মুহাম্মদ আলী রেজা, অধ্যাপক সৈয়দ মোকতার উদ্দিন, রাজনীতিবিদ মহিউল আলম চৌধুরী, রাজনীতিবিদ নুরুল হুদা চৌধুরী, অধ্যক্ষ মুক্তাদির আজাদ খান, জিএম মামুনুর রশিদ, অধ্যক্ষ ডি আই এম জাহাঙ্গীর আলম, আবদুর রহমান জোনাইদ, নাজমুল হক শামীম, সৈয়দ সালাউদ্দিন খোকন, হানিফ মান্নান, দেলোয়ার হোসেন মানিক, মো. তারিফ হোসেন, নজরুল ইসলাম মোস্তাফিজ, জসিমুল হক চৌধুরী, কবি কুতুব উদ্দিন বখতেয়ার, কবি আলমগীর হোসাইন, প্রমুখ।

গোলটেবিল বৈঠকের প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ স. উ. ম. আবদুস সামাদ বলেন, মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনীতিবিদদের মধ্যে অন্যতম একজন কিংবদন্তি মানুষ। মহাত্মা গান্ধী থেকে শুরু করে নেতাজি সুভাষ বসুর সাথে হাতে হাত মিলিয়ে রাজনীতি করেছেন ও কারাবরণ করেছেন। এ ধরনের মহা মনীষী মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীকে অবমূল্যায়ন দেশ ও জাতির জন্য কলঙ্ক ও দুঃখজনক। অবিলম্বে দেয়াং পাহাড়ে মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর রেজিস্ট্রিকৃত ভূমি ও সরকার থেকে বন্দোবস্ত নেওয়া ভূমিতে মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর নামে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি সরকারের প্রতি দাবি জানান। তিনি আরও বলেন, মওলানা ইসলামাবাদী ১৯১৫ সাল থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে গেছেন। ১৯১৯ সালে ভূমি নির্ধারণ করেন। এ উপলক্ষে তিনি সাত দিনব্যাপী নিখিল ভারত আঞ্জুমানে ওলামায়েদের সমাবেশ ঘটিয়ে দেয়াং পাহাড়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য জায়গাটি নির্ধারণ করেন। ঐখানে প্রাথমিক পর্যায়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর করেন। মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা হযরত মুহানী, মাওলানা শওকত আলী, জঙ্গে জেহাদ শাহ বদিউল আলম, মাওলানা আকরম খাঁ, মুন্সি রিয়াজউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ ব্যক্তি উপস্থিত হয়ে দেয়াং পাহাড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং কিছু ছাত্রদের নিয়ে একটি কারিগরি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। ১৯৫০ সালে মাওলানা মৃত্যুবরণ করলে আর এই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেনি। প্রধান অতিথি অধ্যক্ষ স. উ. ম. আবদুস সামাদ আরও বলেছেন, দেয়াং পাহাড়ের প্রতিটি মাটি পবিত্র ও ইসলামী সুফিসাধকদের পদধূলি স্পর্শকৃত জমি।

এখানে বদর আউলিয়া, বার আউলিয়া ও বড়পীর আবদুল কাদের জিলানীর স্মৃতিজড়িত আস্তানা রয়েছে। তাই এই পাহাড়ের পবিত্র অঙ্গনে ইসলামাবাদীর নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মুসলমান আগমনকারীদের অন্যতম মিশনারী সুফিসাধক হযরত মোহছেন আউলিয়া (রহ.)-এর নামে একটি কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য সরকারের নিকট দাবি জানান। বৈঠকে বিজ্ঞ আলোচকরা বলেছেন, বঙ্গোপসাগরের সাথে লাগোয়া ঐতিহাসিক আনোয়ারা উপজেলা দ্বীন ইসলামের পুণ্যভূমি নামে খ্যাত। এখানে একটি আলিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের প্রতি প্রস্তাব করেন।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ