Frank Rubio : মহাকাশে ৩৭১ দিন “ফ্র্যাঙ্ক রুবিও” : নাসিরুদ্দিন আহমেদ
নাসিরুদ্দিন আহমেদ: বীরত্ব কাকে বলে। সমস্ত জল্পনা কল্পনার সমাপ্তি ঘটিয়ে মার্কিন মহাকাশচারী ফ্র্যাঙ্ক রুবিও ৩৭১ দিন মহাকাশে কাটিয়ে কাজাকাস্থানের মরুপ্রান্তরে পৃথিবীর মাটিতে অবতরণ করেন। উল্লেখ্য মহাকাশে থাকাকালীন এই মহাকাশচারী বিজ্ঞানী পৃথিবীর চারিদিকে 5000 বারের বেশি প্রদক্ষিণ করেছেন। তিনি হলেন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ৩৭১ দিন সময় কাটানো প্রথম মহাকাশচারী। ইতিপূর্বে মার্ক ফান্দে ৩৫৫ দিন মহাকাশে কাটিয়ে অভিলেখ সৃষ্টি করেছিলেন।
লেখক নাসিরউদ্দীন আহমেদ
কথা ছিল ছয় মাসের মধ্যে সফর শেষ হয়ে যাবে কিন্তু বিপদে পড়ে টানা এক বছরের বেশি সময় মহাকাশে তাদের ভেসে থাকতে হয়েছিল।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ কাজাকাস্থানের এক অত্যন্ত অঞ্চলের মরুভূমির মাঝখানে আছড়ে পড়ে একটি স্পেস ক্যাপসুল আর তার ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয় এই তিন মহাকাশচারীকে।
এর আগে রুবিও ছাড়া তার আরও দুই সঙ্গীর জন্য নাসা একটি ক্যাপসুল পাঠিয়েছিল মহাকাশে। তিন মহাকাশচারীর জন্য অপেক্ষা করছিল সেই ক্যাপসুল কিন্তু পৃথিবীর দিকে রওনা হওয়ার আগেই এক দুর্ঘটনা ঘটে যায়। ফলে তাঁরা আটকে পড়ে মহাকাশে।
180 দিনের সফরের পরিকল্পনা নিয়ে বেরিয়েছিলেন তাঁরা। সফর প্রায় যখন শেষের দিকে তখন মহাকাশচারীদের ফিরিয়ে আনার জন্য মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছায় নাসা থেকে পাঠানো সয়ূজ নামের ক্যাপসুল কিন্তু মহাকাশ জঞ্জালের সাথে হঠাৎ সেটি ধাক্কা খায়। ঘটনাটি গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের। এই ঘটনায় মহাকাশচারীদের ঘরে ফেরার স্বপ্ন ভেস্তে যায় কারণ আকষ্মিক ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ক্যাপসুলের রেডিয়েটর বা বিকিরণ যন্ত্রটি।
মহাকাশচারীদের ফেলেই পৃথিবীতে ফিরে আসে প্রথম ক্যাপসুল। আর অনির্দিষ্টকালের জন্য মহাকাশ স্টেশনে মহাকাশচারীরা আটকে পড়ে। এরপরেই শুরু হয় দ্বিতীয় ক্যাপসুল বানানোর কাজ। ততদিনে জীবনের একটি বছর পার হয়ে গেছে তাদের। খাওয়া দাওয়া পিপাসা মেটানো বর্জ্য ত্যাগ ইত্যাদি সবকিছুই সম্পন্ন হয় মহাকাশে। জীবনের একটি বছর হারালেও সবটাই খরচের খাতায় এই তিন মহাকাশচারীর। যে দায়িত্ব পালনে গিয়েছিলেন সেই কাজ তাঁরা শেষ তো করেছেনই পাশাপাশি একটি নতুন বিশ্বরেকর্ডও স্থাপন করেছেন। এই দীর্ঘতম মহাকাশ বাসের কৃতিত্ব এখন রাশিয়ার দখলে।