বাইরনকে দলে নিয়ে আসলে মানুষকেই অপমান করা হয়েছে চাঞ্চল্যকর বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী, কুনাল উত্তরে বললেন বাইরন তৃণমূলেরই প্রশ্ন তাহলে গ্রেফতারের দাবি করেছিলেন কেন? তৃণমূলের প্রতীক কি হাত চিহ্ন! নাকি তৃণমূলকে হাসির খোরাক করার জন্যই এই ধরনের মন্তব্য করে চলেছেন!
বাংলার জনরব ডেস্ক : পশ্চিমবাংলাকে কংগ্রেস মুক্ত করার যে শপথ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়েছেন তা প্রমাণিত হলো কংগ্রেসের বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস তৃণমূলের যোগ দেওয়ার ফলে। আসলে তৃণমূল নেতারা কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন না। কয়েকদিন আগে তৃণমূলের মুখপাত্র বাইরন বিশ্বাসের গ্রেফতারির দাবিতে সরব হয়েছিলেন সেই মুখপাত্র এখন বলছেন বাইরন নাকি তৃণমূলের! তাহলে সেদিন কেন গ্রেফতারের দাবী করেছিলেন এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন কি? আর এই ধরনের নেতারা যে গোপনে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন তা কি জানেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? নাকি বাংলায় বিজেপিকে আনার ছক খোদ তৃণমূল নেতারাই করছেন!
যাইহোক বাইরন বিশ্বাসকে দলে নেওয়ার জন্য প্রকাশ্যে বিরোধীতা করেছেন অভিনেতা বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। তিনি আজ মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘এ ভাবে দলবদল করা আমি পছন্দ করি না। এটা লোকঠকানো। মানুষ তো তাঁকে একটা প্রতীক দেখে ভোট দিয়েছে। তিনি যদি দলবদল করেন তা হলে আসলে মানুষকেই অপমান করা হয়।’’ তবে তৃণমূল মুখপাত্র তথা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, ‘‘এটা দলবদল নয়। বাইরন তৃণমূলের ছিলেন, তৃণমূলেরই রয়েছেন।’’
প্রসঙ্গত, সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে ফেরেন বাইরন। মাত্র তিন মাস আগেই সাগরদিঘি উপনির্বাচনে তিনি তৃণমূলের প্রার্থীকে প্রায় ২৩ হাজার ভোটে হারিয়েছিলেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পাশে বসে সোমবার সাংবাদিক বৈঠকও করেন বাইরন। এর পরেই রাজ্য রাজনীতিতে হইচই পড়ে যায়। জাতীয় রাজনীতিতেও এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার তথা বিজেপির বিরুদ্ধে যখন বিভিন্ন দলকে সঙ্গে নিয়ে জোট বাঁধার কথা বলছে তৃণমূল, যেখানে কংগ্রেসের থাকার সম্ভাবনা নিয়ে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে, সেই সময়ে রাজ্যে কংগ্রেসের একমাত্র বিধায়কের তৃণমূলে যোগদান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশ মঙ্গলবার সকালেই এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে টুইট করেন। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দেন, এটা স্থানীয় রাজনীতি, জাতীয় ক্ষেত্রে এর কোনও প্রভাব পড়বে না। মমতা বলেন, ‘‘এটা স্থানীয় নেতৃত্বের বিষয়। তাঁরাই উত্তর দিতে পারবেন। আমি এই ব্যাপারে কিছুই জানি না, কাগজে দেখেছি।’’
এরই মধ্যে চিরঞ্জিতের মন্তব্য। এর আগে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সময়ও সরব হয়েছিলেন চিরঞ্জিৎ। মঙ্গলবার সেই প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘এক জন একটা দলের এমপি। তিনি আবার অন্য দল করছেন। এটা হয় কী করে!’’ সেই সঙ্গে বলেন, ‘‘তুমি বদল তো করতেই পারো। তার পরে একটা কিছু থাকা উচিত যেটা বাধা হিসাবে থাকবে। অর্জুন সিংহের ক্ষেত্রে আমি বলেছিলাম, এক বছর রাখার পরে তাঁকে কোনও পদ দেওয়া যেতে পারে।’’ শুধু নিজের দলই নয়, বাকি দলেরা মিলেও এই ব্যাপারে একটা কিছু ঠিক করা উচিত, কোনও কমিটি তৈরি করা দরকার বলেও মন্তব্য করেন চিরঞ্জিৎ।
চিরঞ্জিতের মন্তব্য নিয়ে কুণাল বলেন, ‘‘বাইরন তো তৃণমূলেরই। তৃণমূলের টিকিট চেয়েছিল, তৃণমূলের লোকেরাই ওঁর হয়ে ভোট করেছেন। আমরা নিজেদের প্রতীকে জেতাতে পারিনি। ফলে এটাকে দলবদল না ভেবে বলা উচিত, তৃণমূলের ছেলে তৃণমূলেই রয়েছে।’’
কুনাল বাবুর উচিত বাইরণ বিশ্বাসকে পদত্যাগ করে সরাসরি জনাদেশ নেয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া। তা না করে তিনি যেভাবে বাইরণকে তৃণমূলের লোক বলছেন তা কি বিশ্বাসযোগ্য? তৃণমূলের প্রতীক কি হাত চিহ্ন ? এই ধরনের বালখিল্য কথাবার্তা বলে নিজের দলকে হাসির খোরাক কেন করছেন কুনাল বাবু? বলবেন কেনই বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি নিয়ে আপনি খেলছেন? জানাবেন!