দেশ 

রাহুল গান্ধী আর সাংসদ নন! সাংসদ পদ খারিজ করে দিলেন স্পিকার

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : প্রত্যাশিত ছিল। তবে কোথায় যেন মনে হয়েছিল রাজনৈতিক শিষ্টাচারকে মান্যতা দিয়ে এত দ্রুত সিদ্ধান্ত মোদি সরকার নেবেন না। তবে মোদি সরকার যে রাজনৈতিক শিষ্টাচার কে মূল্য দেন না তার বহু প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে এবার হাতে গরম প্রমাণ মিলে গেল। ‘মোদী’ পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে দু’বছর জেলের সাজাপ্রাপ্ত রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। শুক্রবার লোকসভা সচিবালয়ের তরফে এ কথা জানানো হল।

মোদী পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে বৃহস্পতিবার গুজরাতে সুরাট জেলা আদালত রাহুলকে ২ বছর জেলের সাজা দিয়েছিল। তারই ভিত্তিতে ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করা হল।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার নরেন্দ্র মোদী সরকারে বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপপ্রয়োগের অভিযোগ তুলে অন্য বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে আন্দোলনের পথে নেমেছে কংগ্রেস। শুক্রবার দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ১২টি বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বাম, জেডি(ইউ), ডিএমকের পাশাপাশি বৈঠকে ছিল অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ)-ও। এর পরে সংসদ ভবন থেকে মিছিল করে রাষ্ট্রপতি ভবনে যান তাঁরা। ওই আইন বলছে, সাংসদ পদ খারিজ হওয়া রাহুল অন্তত আগামী ৬ বছর কোনও ভোটে লড়তে পারবেন না।

সুরাট জেলা আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা রাহুলকে ১০ হাজার টাকার জামিনে মুক্তি দিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে উচ্চতর আদালতে আপিল করার অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দোষী সাব্যস্ত করার উপর কোনও স্থগিতাদেশ দেননি তিনি। আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এ ক্ষেত্রে ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদের পদ রক্ষার পথে অন্তরায় হয়েছে, ২০১৩ সালের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়। ঘটনাচক্রে, এক দশক আগে ওই রায় কার্যকর করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিলেন তিনিই।

জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, কোনও অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাংসদ-বিধায়কের দু’বছর বা তার বেশি কারাদণ্ড হলে তৎক্ষণাৎ সাংসদ বা বিধায়ক পদ চলে যাবে। আইন বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সেই হিসেবে রাহুলের সাংসদ পদ অবিলম্বে খারিজ হওয়ারই ছিল। জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে আগে বলা ছিল, সাংসদ-বিধায়ক দোষী সাব্যস্ত হলে তাতে স্থগিতাদেশ পাওয়ার জন্য তিন মাস সময় পাবেন। ২০১৩-য় সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকার বনাম লিলি টমাস মামলায় আইনের সেই ধারাটি নাকচ করে রায় দিয়েছিল, দু’বছরের কারাদণ্ডের সাজার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলেই সাংসদ পদ চলে যাবে।

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কর্নাটকে প্রচারে গিয়ে রাহুল প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘সব চোরেদের পদবি ‘মোদী’ হয় কেন?’’ আইপিএল কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ললিত মোদী, ব্যাঙ্ক-ঋণ মামলায় ‘পলাতক’ নীরব মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তুলনা টেনেছিলেন তিনি। ওই ঘটনায় রাহুলের বিরুদ্ধে ‘পদবি অবমাননার’ অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৯ এবং ৫০০ ধারায় অপরাধমূলক মানহানির মামলা করেছিলেন গুজরাতে বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদী। সেই মামলাতেই দোষী সাব্যস্ত হলেন রাহুল।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ