শ্রদ্ধায় স্মরণ পার্কসার্কাসের সবার প্রিয় মহারাজকে
বিশেষ প্রতিনিধি: মোশারাফুল ইসলাম ওরফে সবার প্রিয় মহারাজকে শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হল। মঙ্গলবার পার্কসার্কাসের কাশিয়াবাগান গণি মেমোরিয়াল হাইস্কুলের অডিটোরিয়ামে মহারাজ-মিত্রজন এই স্মরণসভার আয়োজন করে। স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র সাংবাদিক ও তথ্যচিত্র পরিচালক কাজী গোলাম গোলাম গউস সিদ্দিকী ।
সভার শুরুতে শোক প্রস্তাব পেশ করেন সাংবাদিক মোহাম্মদ সাদউদ্দিন ।এছাড়া মহারাজের মুক্তমন, দরাজদিল স্বভাব নিয়ে বলেন স্মরণ সভায় আগত কবি জিয়াদ আলী, সাহিত্যিক আব্দুর রউফ, প্রাক্তন পুলিস অফিসার মসিউর রহমান, প্রাক্তন আই এ এস লিয়াকত আলী, অলোক দাস, মহারাজের পুত্রবধু মেরিনা ইসলাম, প্রতিবেশী দুলাল দাস , সাংবাদিক ইবাদুল ইসলাম, ফিরোজ হোসেন, রফিক মীর, ফরিদুল মণ্ডল, মুজিবর রহমান, নাসরিন, সাবির আলী, নাসরিন,মহম্মদ রফিক ,আব্দুল হাকিম , মহম্মদ সালাউদ্দিন, তরুণ সাংবাদিক নিজাম পারভেজ শুভ প্রমুখ।
এদিনের স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন, মোশারাফুল ইসলাম ওরফে মহারাজ ছিলেন ছিলেন অত্যন্ত দরাজদিল প্রকৃতির এক মানবিক মুখ।তাই একের সঙ্গে অপরের মিলন ঘটাতে পারতেন খুব সহজেই।তার পার্কসার্কাস এলাকার কংগ্রেস এক্সজিবেশন রোডের বাড়ি ছিল সবার জন্য এক অবারিত দ্বার। সেখানে সন্ধ্যায় সবাই হাজির হতেন।আড্ডা প্রিয় এই মানুষটি সবাইকে আপন করে নিতেন।সব ক্ষেত্রের মানুষ এখানে আসতেন।শেষের দিকে তিনি শারিরীক ও মানসিকভাবে কিছুটা দুর্বল হলেও তার প্রাণশক্তি ছিল খুব তীব্র। সদাহাস্যময় এই মহারাজ সাহেব সকলের প্রিয় মহারাজ ভাইয়ে পরিণত হন।তাকে মানুষের কাছে মনে করিয়ে দেবার জন্য প্রতিবছর তার মৃত্যুদিন যেন পালিত হয়। আজকের ভারতের এক অপশক্তি যখন দেশকে বিভাজনে মত্ত , তখন মহারাজ মানসিকভাবে ছিলেন বহুত্ববাদী সংস্কৃতির ধারক ও বাহক।
উল্লেখ্য,মহারাজ সাহেব ১৯৪১ সালের জানুয়ারি মাসে হুগলির আরামবাগের ছাঁদড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন।ছাঁদড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ছাঁদড়া হাইস্কুল ছিল তার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার ক্ষেত্রভূমি। স্নাতক স্তরের পাঠ নেন আরামবাগের কালিপুর নেতাজী মহাবিদ্যালয় থেকে।
১৯৬৩ সালে কলকাতা আসেন।৫০ বছর ধরে কলকাতার পার্কসার্কাসের কংগ্রেস এক্সিবিশন রোডে বসবাস করেন।৮৪ বছর বয়সে গত ৬ মার্চ তিনি যাদবপুর কেপিসি হাসপাতালে দীর্ঘ রোগ ভোগের পর তিনি মারা যান। ঐদিন তাকে যাদবপুর কেপিসি হাসপাতাল থেকে পার্কসার্কাসের বাড়িতে আনা হয়েছে।সেখানে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসেন অজস্র মানুষ।তারপর গোসল দিয়ে কফিন ভর্তি লাশ আরামবাগে রওনা হয় আরামবাগে।সেখানে তার জন্মভিটা ছাঁদড়ায় তিনি চির নিদ্রায় শায়িত।
কাশিয়াবাগান গণি মেমোরিয়াল হাইস্কুলের স্মরণসভায় তার আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ দোওয়া করেন মহম্মদ রফিক।ঐ স্মরণ সভায় তার পরিবারের সদস্যরাও উপস্হিত ছিলেন। মহারাজ নানান সামাজিক কাজকর্ম ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।