Featured Video Play Iconঅন্যান্য কলকাতা 

মহাত্মা গান্ধী চেষ্টা করলে দেশভাগ রুখতে পারতেন দাবি নজরুলের, দেশ ভাগ নিয়তি ছিল, মহাত্মা গান্ধীর কিছু করার ছিল না বললেন আমজাদ, গান্ধীর জন্মদিনের সন্ধ্যায় দুই বিদগ্ধ বাঙালির আলোচনায় উঠে এলো এমনই অনেক অজানা তথ্য

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সেখ ইবাদুল ইসলাম: মহাত্মা গান্ধী আমাদের দেশের আইকন। সমগ্র বিশ্বের কাছে এক নতুন আদর্শের জন্মদাতা হিসাবে ইতিমধ্যেই স্বীকৃতি পেয়েছেন। বিশ্বের প্রথম সারির মহান পুরুষেরা সকলেই মহাত্মা গান্ধীর প্রশংসা করে গেছেন। তাই মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে ভারতীয় নাগরিকদের গর্বের শেষ নেই। কিন্তু মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ নীতি তার অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি আজ প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তা নিয়েই বাপুজির জন্মদিনের সন্ধ্যায় বাংলার জনরব ইউটিউব চ্যানেলে এক আলোচনার আয়োজন করা হয়। এই আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন দুই বিদগ্ধ বাঙালি সন্তান বর্ষীয়ান আইনজীবী ও প্রাক্তন সাংসদ সরদার আমজাদ আলী এবং অবসরপ্রাপ্ত আইপি এস ডঃ নজরুল ইসলাম।

ঠিক সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় পূর্বনির্ধারিত সময়মতো অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যায়। এই অনুষ্ঠানে প্রথমে যোগ দেন বর্ষীয়ান আইনজীবী ও প্রাক্তন সাংসদ সরদার আমজাদ আলী। তিনি মহাত্মা গান্ধীকে একজন মহাপুরুষ হিসাবে বর্ণনা করার পাশাপাশি তিনি বলেন, সমগ্র উপমহাদেশ নয় সমগ্র বিশ্বের সামনে মহাত্মা গান্ধী যে আদর্শ স্থাপন করে গেছেন তা যুগ যুগ ধরে টিকে থাকবে। আমাদের অনেকের মনে হতে পারে মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ নীতি প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে কিন্তু সেটা সাময়িকভাবে মনে হতে পারে আজকে যে শাসকগোষ্ঠী মহাত্মা গান্ধীকে অবহেলা করছে মহাত্মা গান্ধীর নীতি আদর্শকে এড়িয়ে চলছে তারাই একদিন তাঁর এই নীতি আদর্শকে অবলম্বন করতে বাধ্য হবে।

Advertisement

প্রায় ৪০ মিনিট পর এই আলোচনায় যোগ দেন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস ডঃ নজরুল ইসলাম। তিনি প্রথমেই বলেন, মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ যুগ যুগ ধরে সারা পৃথিবীকে পথ দেখাবে। এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। তারপর তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি মহাত্মা গান্ধী যদি চাইতেন তাহলে দেশভাগ রুখতে পারতেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেশভাগ হয়েছে তিনি যদি চেষ্টা করতেন দেশ ভাগ রুখে দিতে পারতেন। এক প্রশ্নের উত্তরে নজরুল সাহেব বলেন, বিভিন্ন তথ্য থেকে এবং বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য থেকে বলা যেতে পারে মহাত্মা গান্ধী চেয়েছিলেন শেষ পর্যন্ত জিন্নাহকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী করে অবিভক্ত ভারত রাখতে। কিন্তু কংগ্রেসের অন্য নেতারা তার সঙ্গে সহমত হননি। তাই শেষ পর্যন্ত দেশভাগ নিশ্চিত হয়ে পড়ে।

এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নজরুল সাহেব ক্যাবিনেট মিশনের কথা বলেন। তিনি বলেন, যে ক্যাবিনেট মিশনের প্রস্তাব জিন্না সাহেব মেনে নিয়েছিলেন কিন্তু নেহেরুজির কিছু কথাবার্তা শেষ পর্যন্ত জিন্নাহ ক্যাবিনেট মিশনকে বয়কট করার সুযোগ পেয়ে যান।

এ বিষয়ে বর্ষীয়ান আইনজীবী ও প্রাক্তন সাংসদ সরদার আমজাদ আলীকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন আমি মনে করি না মহাত্মা গান্ধীর দেশভাগ রুখে দিতে পারতেন। আসলে দেশ ভাগ নিয়তির পরিণতি ছিল। আমজাদ সাহেব বলেন মাওলানা আজাদের লেখা ইন্ডিয়া উইনস ফ্রিডম গ্রন্থের দ্বিতীয় ভাগটা পড়লে একথা স্পষ্ট হয়ে যাবে। তিনিও স্বীকার করেন মাওলানা আজাদ কংগ্রেস সভাপতি পদ ত্যাগ করার পর জহরলাল নেহেরু কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পর তিনি যদি সতর্কতার সঙ্গে কিছু কথাবার্তা বলতেন তাহলে হয়তো নতুন করে দ্বিজাতি তত্ত্বের বীজ রোপন করতে পারতেন না জিন্নাহ। একই সঙ্গে তিনি বলেন নেহেরুর প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জ্ঞাপন করেই এ কথাগুলো বলছি কারণ তিনি অসচেতন হয়েই কিছু মন্তব্য করেছিলেন,না হলে হয়তো দেশভাগ হত না।

একইসঙ্গে আমজাদ সাহেব এ কথাও বলেন, আসলে সমস্যাটা শুরু হয়েছিল অনেক আগে থেকে যখন যুক্ত মন্ত্রিসভা গঠিত হয় সেই যুক্ত মন্ত্রী সভাতেই কাজকর্ম নিয়েই মুসলিম লীগের মন্ত্রীদের সঙ্গে কংগ্রেসের মন্ত্রীদের মধ্যে একটা সমস্যা তৈরি হয়। সেই সমস্যা থেকেই পরবর্তীকালে দেশভাগ নিয়তি হয়ে পড়ে এখানে মহাত্মা গান্ধীর কিছু করার ছিল না।

এ বিষয়ে আরো কিছু কথা বার্তা বলেছেন দুই বিদগ্ধ বাঙালি সন্তান। যদি বিস্তারিত ইতিহাসের এই সত্য কথাগুলো জানতে চান? তাহলে পাঠক বর্গের কাছে আমরা অনুরোধ করবো বাংলার জনরব ইউটিউব চ্যানেলে গিয়ে সমস্ত কথোপকথনটি শোনার। ইতিহাসের অতি জটিল তত্ত্ব এবং তথ্য সহজ সরল ভাষায় সাধারণ মানুষের বোধগম্য করে এই অনুষ্ঠানে তুলে ধরেছেন সরদার আমজাদ আলী ও ডঃ নজরুল ইসলাম।

আমাদের এই খবরের সঙ্গে ওই অনুষ্ঠানের লিংক সংযুক্ত করে দিলাম আগ্রহীরা চাইলে দেখতে পারেন। দেখতে পারেন শুধু নয় দেখতে হবে কারণ সত্য ইতিহাসকে সামনে আনার দায় এবং দায়িত্ব সকলের। নজরুল ইসলাম এবং আমজাদ সাহেবরা যে ইতিহাস বলেছেন তা হয়তো অনেকেই পড়ার সুযোগ পাবেন না। কিন্তু অবশ্যই বক্তব্য শুনে অনেক কিছু জানতে পারবেন শিখতে পারবেন। তাই অবশ্যই এই অনুষ্ঠানটি আপনাদের দেখতে হবে। ভালো লাগলে শেয়ার করবেন সাবস্ক্রাইব করে অন্যদের দেখার সুযোগ করে দেবেন।

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ