কলকাতা 

SSC Scam: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে ইডিকে সব রকম সহযোগিতা করার ইঙ্গিত পার্থের, চাপে তৃণমূল

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : ইডি প্রথম থেকে বলে আসছিল শিক্ষক নিয়োগ মামলায় গ্রেফতার অর্পিতা মুখোপাধ্যায় তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করলেও প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহযোগিতা করছেন না। কিন্তু কাল সন্ধার পর থেকে ইডি জানিয়েছে পার্থ জানিয়েছেন তিনি তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।সময়মতো সমস্ত তথ্য তদন্তকারীদের সামনে আনার কথাও নাকি ইডি-র অফিসারদের বলেছেন তিনি।

শুধু তা-ই নয়, ইডি সূত্রে দাবি, এ দিন পার্থকে স্কুলে নিয়োগে কার কার কাছ থেকে সুপারিশ পেয়েছিলেন প্রশ্ন করা হলে, মন্ত্রীর সংক্ষিপ্ত উত্তর ছিল, ‘‘সর্বস্তর থেকে সুপারিশ আসত।’’ যদিও তাঁরা কারা, তা এখনও খোলসা করেননি তিনি। তদন্তকারী কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, শুক্রবার থেকে টানা ধকল গিয়েছে মন্ত্রীর। সোমবার সকালে ভুবনেশ্বর-এমসে (অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স) গিয়ে মঙ্গলবার সকালেই কলকাতা ফিরতে হয়েছে। এ বার কিছুটা বিশ্রামের পরে তিনি যাবতীয় প্রশ্নের ‘সঠিক’ জবাব ঠিক সময়ে দেওয়ার ‘প্রতিশ্রুতি’ দেন বলে ইডি সূত্রে দাবি।

Advertisement

তদন্তকারী অফিসারদের একাংশের মতে, একেবারে সরে না গেলেও দল পুরোপুরি পাশে দাঁড়ায়নি বলে মনে হয়ে থাকতে পারে পার্থের। তার উপরে সমস্যা বেড়েছে ৩ অগস্ট পর্যন্ত ইডি হেফাজতের নির্দেশে। সঙ্গে এত বড় ‘কেলেঙ্কারি’ সামনে আসার মানসিক চাপ। এই সবের মিলিত কারণেই মন্ত্রী এমন তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে তাঁদের ধারণা।

এ দিন দুপুরে ও সন্ধ্যায় ঘণ্টা খানেকের বিরতি দিয়ে পার্থকে প্রশ্ন করেছেন তদন্তকারীরা। একাধিক সোফা এক জায়গায় এনে তাঁকে ঘিরে কনফারেন্স রুমের একটি অংশেই তৈরি হয়েছে মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জায়গা। কিন্তু ইডি সূত্রে দাবি, শিক্ষা-দুর্নীতির প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই পার্থ কখনও বলেছেন, ‘সব কিছু খেয়াল রাখা যায় না’, তেমনই কখনও জানিয়েছেন, ‘কোনও কিছু ঘটলেও ঘটে থাকতে পারে।’ কখনও আবার নাকি তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘অনেক কিছুই তো নজর এড়িয়ে যায়। পরে প্রকাশ্যে এলে, বোঝা যায় যে

দুর্নীতি হয়েছে।’ এই সমস্ত উত্তর এবং সেই সঙ্গে ঠিক সময়ে সঠিক তথ্য সামনে আনার কথা বলাকে এখন তাই তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন ইডি কর্তারা।

মঙ্গলবার দুপুরে ফেরার কথা থাকলেও, এ দিন ভোরের বিমানে কলকাতা ফিরিয়ে আনা হয় পার্থকে। হুইলচেয়ারে বসে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বার হওয়ার মুখে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের দেখে আশপাশে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের উদ্দেশ্যে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘একটু গার্ড করো।’’ কিন্তু তার মধ্যেও ধেয়ে আসে প্রশ্ন— ‘মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দলের কেউ অন্যায় করলে, তাঁকে রেয়াত করা হবে না। এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন?’’ উত্তর না এড়িয়ে বরং খানিকটা গলা চড়িয়ে পার্থের জবাব, ‘‘ঠিকই বলেছেন।’’ এর আগে ভোরে ভুবনেশ্বর বিমানবন্দরে ঢোকার মুখে প্রশ্ন করা হলে, তখন তা এড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

সোমবার সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ওই মন্তব্য করেন, তখন তিনি পার্থের নাম করেননি। কিন্তু ইঙ্গিত ছিল পার্থ ও তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দিকে। আবার শুক্রবার মাঝরাতে যখন ইডি পার্থকে গ্রেফতার করার কথা জানায়, তখন মমতাকে ‘পরমাত্মীয়’ বলে দাবি করে তাঁকেই ফোন করেছিলেন মন্ত্রী। ইডি সূত্রের দাবি, বেশ কয়েক বার ফোন করলেও, তা ধরেননি মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রেক্ষাপটে পার্থের ‘‘ঠিকই বলেছেন’’ শব্দবন্ধকে তাঁর অভিমানের বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন অনেকে।

 

 

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ