জেলা 

পাওয়ারগ্রিডের তার নিয়ে যাবার সময় পুলিস-জনতা সংঘর্ষ, অগ্নিগর্ভ ফারাক্কা, আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশি অত্যাচারের বিরুদ্ধে নিন্দায় সরব এপিডিআর

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : মুর্শিদাবাদের ফারাক্কায় পাওয়ার গ্রিড বসানো ও তার বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিস-জনতার সংঘর্ষে শনিবার অগ্নিগর্ভ হল মুর্শিদাবাদের ফারাক্কা।এদিন ফারাক্কার বেনিয়াগ্রামে আদানি-আম্বানিরা লোকজন বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য পাওয়ার গ্রিডের তার বসালে শুরু হয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে বচসা।

তারপর সংঘর্ষ।ঘটনাস্হলে পুলিস গেলে পুলিস-জনতা শুরু হয় খণ্ডযুদ্ধ। ইট-পাটকেল ছোড়াছুড়ি শুরু হয়।পুলিস-জনতা সংঘর্ষে কম করে ১৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে পুলিস ও গ্রামবাসী রয়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ভারত সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার গোপনে চুক্তি করে বাংলাদেশকে বিদ্যুত দেওয়ার জন্য এখানকার এনটিপিসি এলাকায় আদানি-আম্বানিদের ৫০০ বিঘা জায়গা দিয়েছে পাওয়ার গ্রিড করার জন্য।

Advertisement

এই পাওয়ার গ্রিড ফারাক্কা-ঝাড়খণ্ডের এলাকাগুলির পরিবেশ দূষিত করবে।এই এলাকাটি আরেকটি ভাঙড় হতে চলেছে। শুধু তাই নয়, ফারাক্কায় রয়েছে জাতীয় বিদ্যুত প্রকল্প বা এনটিপিসি।এই এনটিপিসিও আদানি-আম্বানিদের হাতে চলে যাবে।আমাদের জীবন থাকতে এখানে পাওয়ার গ্রিড হতে দেব না।এই পাওয়ারগ্রিড ও তার তার বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের জীবন-জীবিকা অনিশ্চয়তার পথে চলে যাবে।

আমাদের এলাকার পরিবেশ দূষিত হবে। অবিলম্বে পাওয়ার গ্রিড প্রত্যাহার করতে হবে।গোটা এলাকা থমথমে।ফারাক্কার আইসি দেবব্রত মুখার্জি‌ বলেন, এই ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।আমরা ব্যাপক পুলিস মোতায়েন করেছি।ঘটনার তদন্ত করছি।

এদিকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে এ পি ডি আর। সংগঠনের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতি জারি করে সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত শূর বলেছেন, “মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কা শিল্পপতি আদানির হয়ে জমি লুঠের জন্য রাজ্য পুলিশ আজ হাড় হিম করা সন্ত্রাস চালাল।

বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বেচবে আদানী পাওয়ার। সেজন্য হাই টেনশন লাইন যাবে ফারাক্কার গ্রামের আম বাগান, লিচু বাগানের উপর দিয়ে। আজ সকালে জমি মালিকদের আপত্তি  অগ্রাহ্য করে আদানীর লোকেরা হাই-টেনশন তার টানাতে এলে গ্রামবাসীরা বাধা দেয়। রাজ্য পুলিশ, র‍্যাফ,  তৃণমূল ও আদানীর গুন্ডারা গ্রামবাসীদের চারদিক ঘিরে  নির্মম  লাঠিপেটা করে। পাথর ছোড়ে। অবস্থানরত প্রতিবাদীদের অবস্থান স্থল ভেঙে সবাইকে বেধড়ক পেটায়। নারী-পুরুষ- শিশু নির্বিশেষে বহু গ্রামবাসী গ্রেপ্তার, রক্তাক্ত।  বিশাল পুলিশ বাহিনীর পাহারায় হাই-টেনশন তার টানানোর  কাজ শুরু হয়েছে। পুলিশ হাসপাতাল থেকে আহতদের এবং আন্দোলনের নেতাদের গ্রেপ্তার  করেছে।

 

এপিডিআর মমতা সরকারের পুলিশের এই  অতি সক্রিয় সন্ত্রাসী ভূমিকার তীব্র নিন্দা করছে  ও দোষী পুলিশদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।

*প্রসঙ্গতঃ জমি মালিকদের সঙ্গে কোন রকম চুক্তি ছাড়া,তাঁদের সম্মতি ও ক্ষতিপূরণ ছাড়া আমবাগান ও লিচু বাগানের উপর দিয়ে এভাবে হাইটেনশন তার নিয়ে যাওয়া বেআইনি।  কৃষক ও গ্রামবাসীদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বে পুলিশ দিয়ে মারধর করে এভাবে জমি দখল করার অপচেষ্টা খুবই আপত্তিজনক। একদিন জমি আন্দোলোন  করেই ক্ষমতায় এসেছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। ইতিহাসের পরিহাস আজ মমতা সরকারই চাষীদের অসম্মতি সত্বেও  পুলিশ দিয়ে, গুন্ডা দিয়ে সন্ত্রাস সৃস্টি করে শিল্পপতিদের হয়ে জমি দখল করছেন।*

আমরা সরকারের আজকের ভূমিকার ফের নিন্দা জানাচ্ছি। সরকারকে বেআইনি কাজ থেকে বিরত থাকার দাবি জানাচ্ছি। কোন অনিচ্ছুক কৃষকের  জমি নেওয়া যাবে না। কৃষকদের এই দাবি আমরা পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। এই আন্দোলনকে এপিডিআর পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছে এবং আন্দোলনকে সর্বতোভাবে সহায়তা করার অঙ্গীকার করছে বলে এপিডিয়ার এর সাধারণ সম্পাদক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছেন।

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ