কলকাতা 

College Service Commission : স্কুল শিক্ষক নিয়োগের তথাকথিত ‘ রঞ্জন’ – এর পর এবার কলেজ নিয়োগে উঠে এলো ‘ ভূপেনের’ নাম, কলেজ সার্ভিস কমিশনেও সিবিআই তদন্তের দাবি করল চাকরিপ্রার্থীরা

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বিশেষ প্রতিনিধি : স্কুলের পর এবার কলেজ শিক্ষক নিয়োগেও দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই (CBI) তদন্তের দাবি উঠেছে। রবিবার, কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে কলেজ সার্ভিস কমিশনের ‘দুর্নীতির খতিয়ান’ তুলে ধরে এই দাবি জানিয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের সংগঠন- ‘২০১৮ সিএসসি এমপ্যানেল্ড ক্যান্ডিডেটস অর্গানাইজেশন’।

চাকরিপ্রার্থীদের সংগঠনের তরফে রবিবার যে ‘দুর্নীতির খতিয়ান’ প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে উঠে এসেছে রাজ্যের শাসক দলের বেশ কয়েকজন নেতা মন্ত্রীর নাম। শুধু তাই নয়, স্কুল সার্ভিসের মতো এখানেও উঠে এসেছে ‘রঞ্জন’-এর মতো প্রভাবশালী ব্যক্তি ‘ভূপেন’-এর নাম। খতিয়ানে দাবি করা হয়েছে, ‘টাকা দিয়ে বা প্রভাব খাটিয়ে কলেজ সার্ভিস কমিশনে চাকরী পেয়েছেন এমন অসংখ্য ব্যক্তি আছেন। এদের সঙ্গে ‘ভূপেন’-এর সম্পর্ক গভীর।’

Advertisement

‘ভূপেন’ কতজন’কে চাকরী দিয়েছেন? এখন অবধি ৯ জন ব্যক্তির নাম, পরিচয়, কোন কলেজে চাকরী পেয়েছেন তা তুলে ধরা হয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের ‘খতিয়ান’-এ। যারা আমডাঙ্গা যুগল কিশোর মহাবিদ্যালয় (এডুকেশন বিভাগ), ডোমকল গার্লস কলেজ (এডুকেশন বিভাগ), আসাননগর মদন মোহন তর্কালঙ্কার কলেজ (এডুকেশন বিভাগ), বেলদা কলেজ (সংস্কৃত বিভাগ), রামপুরহাট কলেজ (সংস্কৃত বিভাগ), বাজকুল মিলনী মহাবিদ্যালয় (সংস্কৃত বিভাগ), রামানন্দ কলেজ (ভূগোল বিভাগ), সাগর মহাবিদ্যালয় (ভূগোল বিভাগ), পঞ্চকোট মহাবিদ্যালয় (ভূগোল বিভাগ)-এ চাকরী পেয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।

এদিন চাকরিপ্রার্থীদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিনয় কৃষ্ণ পাল দাবি করেন, ‘কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে প্রথম প্রিয়াঙ্কা কুণ্ডু চাকরি পাননি। অথচ তৃণমূলের বিধায়ক সমীর পোদ্দার নিজের জামাইকে তিনি যে কলেজের সেক্রেটারি ছিলেন সেখানে চাকরি করিয়ে দিয়েছেন। আর এক তৃণমূল নেতার ভাইপো অসংরক্ষিত ক্যাটাগরির হলেও তাকে সংরক্ষিত পদে চাকরি দেওয়া হয়েছে।’

অন্য আরেক চাকরী প্রার্থী পলাশ মণ্ডল দাবি করেন, ‘অঙ্ক ও সাঁওতালি বিষয়ে মেধাতালিকা বহির্ভূত প্রার্থীদের নিয়োগ করেছে কমিশন।নেতা-মন্ত্রী, প্রভাবশালী ব্যক্তির আত্মীয় ও কম যোগ্যতা সম্পন্নদের নিয়োগ করা হয়েছে।’ উদাহরণ হিসাবে তিনি বলেন, ‘গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, কমিশনের প্রকাশিত মেধাতালিকায় নাম ছিল না ‘বিশেষ প্রার্থী’ নিজামুদ্দিন আহমেদ-এর। কিন্তু, তাঁকে গত ১৩ মার্চ ২০২০ সালে, যখন কিনা অতিমারী পূর্ণমাত্রায়, তখন তাঁকে কমিশন সুপারিশ করেছে ত্রিবেণী দেবী ভালোটিয়া কলেজে নিয়োগের জন্য; কোনরূপ অতিরিক্ত বা সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই।’

আরেক চাকরী প্রার্থী ক্ষুদিরাম চক্রবর্তী এদিন দাবি করেন, ‘কম যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের ইন্টারভিউতে প্রায় পূর্ণ নম্বর দিয়ে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত যারা চাকরি পেয়েছে তাদের নম্বর, কোন কলেজে চাকরি পেয়েছে, তাদের যোগ্যতা কমিশন প্রকাশ করেনি।’

ক্ষুদিরাম বাবু বলেন, ‘তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের এক নেতার স্ত্রী ভূগোলে মেধা তালিকার উপরে আছেন। এমনকি, তৃণমূল নেতা রমাপদ বেরার মেয়ে সুরমা বেরা ‘কমিউনিকেটিভ ইংলিশ’-এ আশুতোষ কলেজে চাকরী পেয়েছেন, যে কলেজের অধ্যক্ষ স্বয়ং দীপক কর; যিনি আবার সিএসসি’র চেয়ারম্যান।’

সিএসসি’র ‘দুর্নীতির খতিয়ান’ প্রকাশের পরেই এদিন চাকরীপ্রার্থীরা দাবি জানান, ২০১৮ কলেজ সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতির যথাযথ বিচারবিভাগীয় ও সিবিআই (CBI) তদন্ত করতে হবে। দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের শাস্তি এবং চেয়ারম্যানকে পদত্যাগ করতে হবে।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ