Road Block : বিক্ষোভের নামে ১১ ঘণ্টা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখা মেনে নেওয়া যায় না, এতে বাংলায় সুবিধা হবে গেরুয়া শিবিরের
বিশেষ প্রতিনিধি : বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র নুপুর শর্মা হযরত মুহাম্মদ সা এর বিরুদ্ধে যে ঘৃণা ভাষণ দিয়েছিলেন তার বিরুদ্ধে সমগ্র মুসলিম বিশ্ব ক্ষোভে ফুঁসছে। বিশ্বের ৫৭ টি মুসলিম রাষ্ট্র ভারতীয় পণ্য বয়কট থেকে শুরু করে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ডেকে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এই পরিস্থিতিতে ঘরে-বাইরে চাপের মধ্যে যখন বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকার পড়েছে ঠিক সেই সময় ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে কয়েকটি মুসলিম সংগঠন।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে ডোমজুড় এর কাছে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে যেভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে মুসলিমদের কয়েকটি সংগঠন তা মানা যায় না। হযরত মুহাম্মদ এর শিক্ষা হলো সহনশীলতার শিক্ষা। ধৈর্যধারণের শিক্ষা। টানা ১১ ঘণ্টা একটা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখার মধ্য দিয়ে যে নজির তৈরি করল এই রাজ্যের মুসলিম সংগঠন গুলির তার ফলে আগামী দিনে এই রাজ্যে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির উগ্রতা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে ।
দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা পর অবরোধমুক্ত হল ডোমজুড়। যার জেরে দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে স্বাভাবিক হয়েছে যান চলাচল। যানজটমুক্ত হয়েছে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের দুই পাশই।
অবরোধ শুরু হয় বৃহস্পতিবার ১১টা নাগাদ। টায়ার জ্বালিয়ে হাওড়ার ডোমজুড়ের অঙ্করহাটির কাছে ১১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। ওই জাতীয় সড়ক দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে সংযোগকারী অন্যতম একটি রাস্তা। ফলে গোটা এলাকার পাশাপাশিই দক্ষিণবঙ্গে হাওড়ার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতেও যানজটের প্রভাব পড়ে। এর জেরে দুর্ভোগের শিকার হন সাধারণ মানুষ। বিকেলের পরেও অবরোধ ওঠেনি দেখে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে অবরোধকারীদের হাতজোড় করে অনুরোধ করেন রাস্তা ছেড়ে দিতে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতার আবেদন এবং অনুরোধে কাজ হবে বলেই মনে করা হয়েছিল প্রাথমিক ভাবে। সেই সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও অবরোধকারীদের বোঝানো হয়েছে। তার পর রাত ৯টা নাগাদ ডোমজুড়ে উঠল অবরোধ।
মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনের পর মনে করা হয়েছিল অবরোধ তুলে নেয়া হবে কিন্তু তা হয়নি বরং অবরোধ তারপরেও অনেকক্ষণ চলে। নুপুর শর্মা নবীজির সম্পর্কে কটাক্ষ করেছেন বা অশ্লীল মন্তব্য করেছেন বেশ কয়েক দিন আগে। তারপর অনেক সময় অতিবাহিত হয়েছে বাংলার মুসলমান সংগঠনের পক্ষ থেকে তেমন প্রতিবাদ হয়নি। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশ গুলি যখন প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে তখন বাংলার মুসলমানদের প্রতিবাদের কোন মূল্য আছে কি? আর এই প্রতিবাদের পেছনে কাদের হাতে রয়েছে তা নিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন রয়েছে বলে আমরা মনে করি। বাংলার মুসলিম সমাজকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য কারা পিছন থেকে ষড়যন্ত্র করছে তা আমাদেরকে ভাবতে হবে। আমরা যদি এখন এটা না ভাবতে পারি তাহলে আগামী দিনে এই রাজ্যে সংঘ পরিবারের বিস্তারকে কেউ রুখতে পারবে না।
আজ বৃহস্পতিবার ডোমজুড় জুড়ে কিংবা ১১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে কিছু সংগঠনের যে কাজ করেছে তাতে এই রাজ্যের মুসলিমদের কোন উপকার হবে না বরং আমাদের মনে হয়েছে এর পেছনে রয়েছে কোন বড় শক্তি। যারা এই রাজ্যে বিজেপির উত্থানের জন্য পেছন থেকে কাজ করছে। এইসকল নকল ও মেকি আন্দোলনকারীদের থেকে মুসলিম সমাজকে সতর্ক হতে হবে। অনেক বেশি ভেবেচিন্তে বাঙালি মুসলিমদের কাজ করতে হবে নচেৎ এই রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের বাড়বাড়ন্ত কেউ আটকাতে পারবেনা। বিজেপি বিভিন্নভাবে এই কাজটাই গোপনে করে যাচ্ছে এটা আজ ভাবার সময় এসে গেছে।