দেশ 

Kashmiri Pandit : ‘কাশ্মীর ফাইলস’দেখে আপনি নিশ্চয়ই হা-হুতাশ করছেন! আসলে কাশ্মীরি পন্ডিতরা কাদের আমলে ঘরছাড়া হয়েছিলেন? তা কি জানেন? কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পরিত্যক্ত বাড়িঘর এবং সম্পত্তিগুলি এখন কাদের দখলে? জানতে চান! ক্লিক করুন

শেয়ার করুন

বুলবুল চৌধুরী: সমগ্র দেশজুড়ে কাশ্মীর ফাইলস সিনেমাটি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এই সিনেমার প্রযোজক ১৫ কোটি টাকার বেশি লাভ করেছেন বলে সংবাদে প্রকাশ। কাশ্মীর ফাইল সিনেমাটিতে মূলত নব্বই দশকে কাশ্মীর থেকে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়া পণ্ডিতদের উপর ভিত্তি করে তাদের ছিন্নমূল হওয়ার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু দুঃখের হলেও সত্য কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ছিন্নমূল হওয়ার নেপথ্যে কোন কংগ্রেস সরকার দায়ী ছিল না। সেই সময় দিল্লিতে ক্ষমতায় ছিলেন বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং, বিজেপির অটল বিহারী বাজপায়ীর সমর্থনে। এমনকি ইতিহাস বলছে সেই সময় কাশ্মীরে কোন সরকারের শাসন ছিল না সরাসরি কেন্দ্রের শাসন বলবৎ ছিল। তাহলে কাশ্মীর থেকে পন্ডিতদের বিচ্ছেদের নেপথ্যে যদি বিজেপিকে দায়ী করা হয় তাহলে খুব বেশি ভুল করা হবে না। কারণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কাশ্মীরকে নিয়ন্ত্রণ করেছিল সেই সময় বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং এর সরকার, এই সরকারের অন্যতম শরিক ছিল বিজেপি।

এখানেই শেষ নয় ৯০ দশকে ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক ঘটনার পর ৩০ বছর কেটে গেছে। এই ৩০ বছরের সময়কালে অনেক রাজনৈতিক দল কাশ্মীরি পণ্ডিতদের স্বপ্ন দেখিয়েছে তাদের ভিটেমাটি ফিরিয়ে দেওয়ার। কিন্তু ৩০ বছরে তা কি করতে পেরেছে? ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত দিল্লিতে ক্ষমতায় ছিল প্রথম বিজেপি সরকার। প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপায়ী এর সরকার কাশ্মীরি পণ্ডিতদের স্বদেশভূমিতে ফিরিয়ে দিতে পারেনি। ২০০৪ থেকেই ২০১৪ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল মনমোহনসিং সরকার তারাও কাশ্মীরি পণ্ডিতদের দেশে ফিরিয়ে দিতে পারে নি।

Advertisement

২০১৪ থেকে ক্ষমতায় আছেন বিজেপির ভাষায় সবচেয়ে বলিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনিও কাশ্মীরি পণ্ডিতদের স্বদেশে ফিরিয়ে দিতে পারেননি। তাহলে কি সব রাজনীতির জন্য রাজনীতি হচ্ছে? রাজনীতির কারণেই কি এদেশে বিভেদ তৈরি করা হচ্ছে এ প্রশ্নটা সামনে আসতে শুরু করেছে?

কাশ্মীরের পণ্ডিতদের ছেড়ে আসা ঘরবাড়িগুলো কী সেখানকার মুসলিমরা দখল করে নিয়েছে? এমনকি কোন খবর সরকার বা কেন্দ্র সরকারের কাছে আছে? কাশ্মীরি পণ্ডিতদের সম্পত্তিগুলো কি মুসলিমরা দখল করে নিয়েছে? কেন্দ্রের বর্তমান বিজেপি সরকার যারা কাশ্মীরি পণ্ডিতদের জন্য চোখের জল ফেলছে তারা কতগুলো কাশ্মীরি পন্ডিতকে তার নিজের ভিটেমাটিতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছেন? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয়েছিল সংসদের অধিবেশনে। কিন্তু দুঃখের হলেও সত্য সংসদের অধিবেশনে এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়নি।

সবশেষে জানা গেছে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পরিত্যক্ত ঘরবাড়ি গুলিতে এখন তৈরি হয়েছে সেনাবাহিনীর আবাসস্থল। সেইসব বাড়িতে এখন সেনাবাহিনীর লোকেরা বসবাস করছে। কাশ্মীরে প্রায় ৬৫ হাজার সিআরপিএফ মোতায়েন রয়েছে। তারা মূলত কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ঘরবাড়িগুলোতে বাস করছে।

সিআরপিএফ ডিজি এই অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন। কূলদীপ সিং বলেন, “কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ছেড়ে যাওয়া কিছু বাড়িতে সিআরপিএফের শিবির আছে। রক্ষণাবেক্ষণের স্বার্থেও কিছু কিছু বাড়ি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাড়ির বৈধ মালিকরা যদি বাড়িতে ফিরতে চান তাহলে আমরা বাড়ি ফাঁকা করে দেব। আমি এটুকু বলতে পারি কাশ্মীরের পরিস্থিতি এখন অনেক শান্ত। তাই কেউ ফিরতে চাইলে তাঁরা স্বাগত। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তাঁদেরই নিতে হবে।”


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ