দেশ 

“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার নীরবতা, বিদ্বেষে ভরা কণ্ঠকে উৎসাহিত করে এবং আমাদের দেশের ঐক্য ও অখণ্ডতাকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়”বিদ্বেষ প্রচারের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকে মুখ খোলার আবেদন জানিয়ে দেশের কৃতি পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের চিঠি

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক: দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক তীব্র হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ধর্মভিত্তিক উস্কানি এবং বিদ্বেষ মূলক বক্তব্য চলছে এমনকি একটি বিশেষ জাতিগোষ্ঠীকে নিশানা বানানো হয়েছে এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদিকে মুখ খোলার আবেদন জানালেন দেশের বেশকিছু পড়ুয়া এবং শিক্ষকরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে লেখা চিঠিতে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্টের (IIM) আমেদাবাদ ও বেঙ্গালুরু শাখার পড়ুয়া ও শিক্ষকরা জানিয়েছেন, জাতিভিত্তিক হিংসা, ধর্মভিত্তিক উস্কানি ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের অভিযোগ ঘিরে একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে বিগত দিনে। চিঠিতে এরই বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকে মুখ খুলতে অনুরোধ করেছেন তাঁরা ।

আইআইএমের পড়ুয়া ও শিক্ষকরা লিখেছেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার নীরবতা, বিদ্বেষে ভরা কণ্ঠকে উৎসাহিত করে এবং আমাদের দেশের ঐক্য ও অখণ্ডতাকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়। আমরা আপনাকে অনুরোধ করছি, আমাদেরকে বিভক্ত করতে চায় এমন শক্তির বিরুদ্ধে আপনি দৃঢ়ভাবে দাঁড়ান।”

Advertisement

জানা গিয়েছে, হরিদ্বারের ধর্ম সংসদে বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের পরই আইআইএম বেঙ্গালুরুর সদস্যরা ঠিক করেন যে তাঁরা এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠাবেন। ওই সভায় মুসলিমদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের হাতে অস্ত্র তুলে নিতে বলেছিলেন বেশকিছু হিন্দুত্ববাদী ধর্মগুরু। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে আইআইএমের পড়ুয়া শিক্ষকরা লিখেছেন, “ধর্ম/বর্ণ পরিচয়ের ভিত্তিতে ঘৃণ্য বক্তৃতা এবং সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতার আহ্বান কখনওই গ্রহণযোগ্য নয়।”

প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিতে আরও লেখা হয়েছে, “আমাদের দেশে এখন ভয়ের অনুভূতি রয়েছে। সাম্প্রতিককালে গির্জা-সহ উপাসনালয়গুলি ভাঙচুর করা হচ্ছে, এবং আমাদের মুসলিম ভাই ও বোনদের বিরুদ্ধে হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এই সবই কোনওরকম বাধা ও ভয় ছাড়াই হয়েছে।” এই পরিস্থিতি রুখতে হলে এর বিরুদ্ধে সবার আগে দেশের প্রধানমন্ত্রীর কথা বলা উচিত বলে মনে করেন আইআইএমের শিক্ষক ও পড়ুয়ারা। চিঠিতে সেই আরজিই জানানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে যে ১৮৩ জন স্বাক্ষর করেছেন, তাঁদের মধ্যে ১৩ জন শিক্ষক। এঁদের মধ্যে ১৭৮ জন আইআইএম বেঙ্গালুরুর সদস্য। ৫ জন রয়েছেন আইআইএম আমেদাবাদের।

দেশের কৃতি সন্তানদের এই চিঠির পর প্রধানমন্ত্রী কিছু মানুষের দুষ্কৃতী মূলক কার্যক্রম এবং বিদ্বেষ প্রচারকে বন্ধ করার জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেয় কিনা সে দিকেই তাকিয়ে থাকবে সমগ্র দেশ। দুঃখের হলেও সত্য হরিদ্বারে ধর্মীয় সংসদের যে ভাষায় মুসলিম নিধনের ডাক দেয়া হয়েছে তারপরে প্রধানমন্ত্রী নীরবতা সত্যিই দেশের অখন্ডতা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। দেশের কৃতির পড়ুয়ারা যে বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরেছেন সেখানে দেশের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এবং ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উপলব্ধি করতে কেন পারছেন না সেটা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ প্রচার এর বিরুদ্ধে কেন সব সময় নীরবতা অবলম্বন করেন তা নিয়ে জনমানুষের প্রশ্ন বহুদিন থেকে উঠতে শুরু করেছে। আজ শনিবার যে ভাষায় ভারতের দুই প্রখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন তা থেকে এটা স্পষ্ট যে দেশের সব মানুষ শান্তিপ্রিয় মানুষ হিন্দু কট্টরপন্থীদের আহবানের বা বিদ্বেষ প্রচার এর বিরুদ্ধে সরব হতে শুরু করেছে।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ