“সাম্প্রদায়িক অশান্তি যারা করে, আমরা তাঁদের ঘৃণা করি” : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
বাংলার জনরব ডেস্ক : সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের অশান্তি হয়েছে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে। এই ঘটনা ঘটার প্রায় একমাস পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ সোমবার দুদিনের সফরে মুর্শিদাবাদ গিয়ে পৌঁছেছেন। তিনি দাবি করলেন, প্রথম থেকে সমস্ত বিষয় তিনি খতিয়ে দেখেছেন। তাতেই ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, পরিকল্পনামাফিক অশান্ত করা হয়েছে মুর্শিদাবাদকে। তবে শুধু মুখের কথাই নয়, সংবাদমাধ্যমের সামনে যাবতীয় প্রমাণ তুলে ধরবেন বলেও জানালেন তিনি। পাশাপাশি নাম না করে হিন্দু ধর্মস্থানের দায়িত্বে থাকা কর্তা ব্যক্তিদের নিশানা করলেন মমতা। তিনি এদিন বলেন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা যারা করেন তাদেরকে আমরা সকলেই ক্রিমিনাল বলি। পুলিশের হাতেও একজন মারা গেছে।
আগেই জানা গিয়েছিল, মুর্শিদাবাদ সফরে গিয়ে জাফরাবাদে নিহত হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের পরিবার-সহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ঘটনাচক্রে দিন কয়েক আগেই এলাকা থেকে উধাও হয়ে গিয়েছেন নিহত হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের স্ত্রীরা। প্রথমে অপহরণের তত্ত্ব শোনা গেলেও পরে সল্টলেকে হদিশ মেলে তাঁদের। মুখ্যমন্ত্রী দেখা করবেন বলা সত্ত্বেও এলাকায় ফেরেননি তাঁরা। এই ঘটনার নেপথ্যে বিজেপি বলেই এদিন মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থেকে তোপ দাগলেন মমতা। বললেন, “আমি ভেবেছিলাম ওদের সঙ্গে কথা বলব কিন্তু তা তো হচ্ছে না। বিজেপি ওদের সরিয়ে নিয়েছে।” প্রশ্ন তুললেন, “কেন এই লুকোচুরি? কী আড়াল করার চেষ্টা?” এরপরই বিজেপিকে নিশানা করে হুঙ্কার ছেড়ে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “সাম্প্রদায়িক অশান্তি যারা করে, আমরা তাঁদের ঘৃণা করি।” বহিরাগত তত্ত্বও শোনা গেল তাঁর গলায়।
এদিন নাম না করে হিন্দু ধর্মস্থানের দায়িত্বে থাকা কর্তা ব্যক্তিদের নিশানা করলেন মমতা। বললেন, “কয়েকজন ধর্মীয় নেতা সেজেছে। পালে বাঘ না পড়লেও বাঘ, বাঘ বলে চিৎকার করে রাজনৈতিক সুবিধা নেয়। এরা গৃহশত্রু। আমি সকলকে মিত্র ভাবি। আমার কোনও শত্রু নেই। কিন্তু দাঙ্গা যারা করে তাঁদের আমরা মিত্র ভাবি না। মনে রাখতে হবে, মুর্শিদাবাদের ইতিহাস আছে। এটা বাংলার রাজধানী ছিল।” এরপরই নাম না করে বিজেপি ও ধর্মীয় নেতাদের একযোগে আক্রমণ করে মমতা বললেন, “গণ্ডগোল কারা করিয়েছেন, সবাই জানে। এরা নাকি ধর্মের নেতা! মুর্শিদাবাদে কী হয়েছিল আমার কাছে প্রমাণ রয়েছে। তবে আর কিছু প্রমাণ হাতে আসবে। তারপর সব সকলের সামনে তুলে ধরব।” এরপরই মুখ্যমন্ত্রী আবারও মনে করিয়ে দিলেন, তিনি কারও বিরুদ্ধে নন, তবে দাঙ্গার বিরুদ্ধে।