স্থায়ী আইনের উপর স্থগিতাদেশ জারি করার ক্ষমতা নেই আদালতের সংশোধিত ওয়াকফ আইনের পক্ষে শীর্ষ আদালতে জানালো কেন্দ্র
বাংলার জনরব ডেস্ক : সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কোন পরামর্শ ও স্থগিতাদেশ মানবে না কেন্দ্র সরকার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো ৭ দিনের মধ্যে হলফনামা দিয়ে ওই আইনের পক্ষে যে বক্তব্য সুপ্রিম কোর্টে পেশ করেছে কেন্দ্র সরকার তাতে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ওয়াকফ আইনের বিধানের উপর কোনরকম স্থগিতাদেশ মানবে না বা বিরোধিতা করবে।
আদালতে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, সংসদের যৌথ কমিটির সুপারিশের পরই সংশোধিত ওয়াকফ আইন পাশ করা হয়। ফলে এই স্থায়ী আইনের উপর স্থগিতাদেশ জারি করার ক্ষমতা নেই আদালতের। যদি সংসদে প্রণোদিত কোনও আইনের উপর এ ভাবে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়, তা হলে তা ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট করা সমতুল্য!
সপ্তাহ কয়েক ধরেই ওয়াকফ নিয়ে তরজায় কেন্দ্র ও শীর্ষ আদালত। সম্প্রতি, ওয়াকফ-শুনানি পর্বে এই নতুন সংশোধিত আইনের উপর সাময়িক স্থগিতাদেশ চাপানোর নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। মূলত, ওয়াকফ ফর ইউজার ও ওয়াকফ কাউন্সিলে অমুসলিম সদস্য নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ককে কেন্দ্র করেই আগামী শুনানি পর্যন্ত সাময়িক স্থগিতাদেশ চাপিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
ওয়াকফ আইন নিয়ে ‘ইচ্ছাকৃত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা ইচ্ছাকৃত ভাবে বিভ্রান্তিকর বিবরণ’ দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করে কেন্দ্র। হলফনামায় নরেন্দ্র মোদী সরকার সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, এমন প্রচার করা হচ্ছে যেন, ওয়াকফগুলির সমর্থনে যাঁদের কোনও নথি নেই, তাঁদের ক্ষতি হবে। এই ধরনের প্রচার করা খুবই অন্যায়।
ওয়াকফ নিয়ে প্রথম থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন বিরোধীরা। তবে বিরোধীদের আপত্তি উড়িয়ে কয়েক সপ্তাহ আগেই সংসদের দুই কক্ষে ওয়াকফ বিল পাশ হয়। পরে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাতে সই করার পর তা আইনে পরিণত হয়েছে। তার পরই মোদী সরকারের সংশোধিত ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে অন্তত ৭২টি মামলা হয়। বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিরোধী দলের সাংসদ, নেতারা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন। সব মামলা একত্রিত করে শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চে।
গত ১৭ এপ্রিল এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, ১৯৯৫ সালের আইনে নথিভুক্ত ওয়াকফ সম্পত্তিতে কোনও বদল ঘটানো যাবে না। পাশাপাশি, নিয়োগ করা যাবে না ওয়াকফ বোর্ড বা পর্ষদেও। পাশাপাশি, কেন্দ্রকে সাত দিনের মধ্যে নিজেদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশও দেওয়া হয়। সেই মতো শুক্রবার কেন্দ্র প্রাথমিক হলফনামা জমা করল শীর্ষ আদালতে।