মুসলিম হওয়ায় প্রসূতিকে ফিরিয়ে দিলেন এক চিকিৎসক, কলকাতার ঘটনায় দেশজুড়ে চাঞ্চল্য!
পহেলগাঁওতে ধর্ম পরিচয় বেছে হিন্দু পর্যটকদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। তা নিয়ে গোটা দেশজুড়ে তীব্র চাপানউতোর। দ্বেষ উগরে দিচ্ছেন অনেকেই। তারই মাঝে মুসলমান প্রসূতির চিকিৎসা করতে অস্বীকার করলেন কলকাতার স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। সোশাল মিডিয়ায় ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সরব প্রসূতির পরিবারের লোকজন। যদিও চিকিৎসক কিংবা চিকিৎসক যে বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত তাদের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি মেহফুজা খাতুন নামে পেশায় আইনজীবী এক মহিলা সোশাল মিডিয়ায় বিস্ফোরক পোস্ট করেন। তাতে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সি কে সরকারকে নিশানা করা হয়। ওই চিকিৎসক সন্তোষপুর গর্ভনমেন্ট কলোনির কস্তুরী দাস মেমোরিয়াল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত। এক অন্তঃসত্ত্বার সঙ্গে স্রেফ ধর্ম পরিচয়ের জন্য দুর্ব্যবহারের অভিযোগে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সরব ওই আইনজীবী। তিনি সোশাল মিডিয়ায় লেখেন, সম্প্রতি অন্তঃসত্ত্বাকে নিয়ে ওই বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়া হয়। অভিযোগ, অন্তঃসত্ত্বা মুসলমান হওয়ায় তাঁর সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেন চিকিৎসক। তিনি প্রসূতিকে চিকিৎসা করতে অস্বীকার করেন। হুমকির সুরে চিকিৎসক বলেন, “পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার পর আমি মুসলমান রোগী দেখছি না। হিন্দুদের তোমার স্বামীকে হত্যা করা উচিত। তাহলে বুঝবে যন্ত্রণা ঠিক কেমন। আমাদের মুসলমানদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা উচিত।” বলে রাখা ভালো, অন্তঃসত্ত্বা হওয়া থেকেই চিকিৎসক সি কে সরকারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছিল তাঁর।
একে তো প্রসব যন্ত্রণা। তার উপর আবার চিকিৎসকের এমন অমানবিক ব্যবহারে কান্নাকাটি শুরু করেন প্রসূতি। তাতেও অবশ্য মন গলেনি চিকিৎসকের। আদৌ গর্ভস্থ সন্তানকে বাঁচাতে পারবেন কিনা, তা ভেবে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে মহিলা। বাধ্য হয়ে অন্য হাসপাতালে শেষমেশ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। বর্তমানে সুস্থ প্রসূতি। ওই মহিলা আইনজীবীর একটাই প্রশ্ন, একজন চিকিৎসকের কাছে প্রত্যেক রোগীই সমান। সেখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণের কোনও বিভেদ নেই। তা সত্ত্বেও কীভাবে মুসলমান হওয়ায় প্রসূতিকে অস্বীকার করতে পারেন? এটা কি নৈতিকতার পরিচয়? সোশাল মিডিয়ায় প্রসূতির আত্মীয়ার পোস্ট দাবানলের গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বধর্ম সমন্বয়ের দেশ ভারতের মাটিতে চিকিৎসকের এহেন আচরণ মোটেও শোভা পায় না বলেই মত নেটিজেনদের অধিকাংশের। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব অনেকেই। তাঁকে বয়কটের ডাকও দিয়েছেন কেউ কেউ। অবশ্য বিরুদ্ধ মতও রয়েছে কারও কারও।
সৌজন্যে ডিজিটাল সংবাদ প্রতিদিন