এসডিপিআই-এর জাতীয় সভাপতি এম. কে. ফাইজিকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ প্রদর্শন
বিশেষ প্রতিনিধি : এসডিপিআই-এর জাতীয় সভাপতি এম. কে. ফাইজির অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ মিছিল ও সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কলকাতার রাজাবাজার, মুর্শিদাবাদের বহরমপুর, ডোমকল, রানীনগর, লালবাগ, লালগোলা, রঘুনাথগঞ্জ, সামসেরগঞ্জ, ফরাক্কা, সুতি, ধুলিয়ান, সাগরদিঘী সহ সম্পূর্ণ দেশজুড়ে জনগণ রাস্তায় নেমে সরকারের দমনমূলক নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে।
এম কে ফায়জী মুক্তির দাবিতে কলকাতার রাজাবাজারে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় জাতীয় সম্পাদক তায়েদুল ইসলাম বলেন,”এসডিপিআই-এর জাতীয় সভাপতি এম. কে. ফাইজিকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) ভিত্তিহীন অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে, যা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার একটি নগ্ন উদাহরণ। মূলত, এসডিপিআই-এর নেতৃত্বে ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে ওঠার কারণেই এই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন,”ওয়াকফ সংশোধনী বিল মুসলিমদের ধর্মীয় সম্পত্তির অধিকার কেড়ে নেওয়ার একটি ষড়যন্ত্র। এই বিল কার্যকর হলে, সরকার ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারবে এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের স্বার্থ উপেক্ষা করে সেই সম্পত্তি বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি প্রকল্পে ব্যবহার করতে পারবে। এসডিপিআই প্রথম থেকেই এই বিলের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে লড়াই করছে এবং দেশব্যাপী ‘ওয়াকফ সংরক্ষণ আন্দোলন’ সংগঠিত করেছে, যা কেরালা, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থানসহ বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এই আন্দোলন সরকারকে চাপে ফেলেছে, তাই দমনমূলক নীতি গ্রহণ করে আমাদের নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
বহরমপুর শহরে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিলে এসডিপিআই-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম বলেন,”ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষা করা মুসলিম সম্প্রদায়ের সাংবিধানিক অধিকার, কিন্তু এই সরকার সেটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এসডিপিআই-এর নেতৃত্বে দেশজুড়ে ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষার আন্দোলন গড়ে উঠছে, তাই সরকার এই আন্দোলন দমন করতে চায়।”
দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি মাসুদুল ইসলাম বলেন,”ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি সংখ্যালঘুদের জন্য নির্ধারিত, কিন্তু বিজেপি সরকার এটিকে কর্পোরেটদের হাতে তুলে দিতে চায়। এম. কে. ফাইজি এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে লড়ছিলেন, তাই তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
ডোমকলে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল শেষে প্রতিবাদ সভায় রাজ্য সভাপতি হাকিকুল ইসলাম বলেন,”বিজেপি সরকার প্রথমে CAA নিয়ে নাগরিকদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে, বাবরি মসজিদের স্থানে মন্দির নির্মাণের মাধ্যমে সংখ্যালঘুদের দমন করেছে, আর এখন ওয়াকফ সংশোধনী বিলের মাধ্যমে মুসলিমদের ধর্মীয় সম্পত্তি হরণ করতে চাইছে। এসডিপিআই তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে বলেই আজ আমাদের নেতাকে টার্গেট করা হয়েছে।” তবে শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত এসডিপিআই ন্যায়ের পথেই থাকবে।
রানীনগরে রাজ্য সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক সুমন মন্ডল বলেন,”এসডিপিআই দলিত, মুসলিম, আদিবাসী, পিছিয়ে পড়া, বঞ্চিতদের ধর্মীয় ও সাংবিধানিক অধিকারের জন্য লড়ছে, তাই সরকার এটিকে হুমকি হিসেবে দেখছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে এবং সরকার যতই দমন চালাক না কেন, আমরা ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষার আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
এসডিপিআই-এর পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে যে, যদি সরকার অবিলম্বে এম. কে. ফাইজিকে মুক্তি না দেয়, তাহলে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে এবং গণতান্ত্রিক পথে প্রতিবাদ চলবে।”ওয়াকফ সম্পত্তি আমাদের অধিকার, এই অধিকার রক্ষায় আমরা আপস করবো না!”