”আমেরিকা থেকে প্রত্যর্পণ নতুন কিছু নয়,২০০৯ থেকে হচ্ছে” সংসদে দাবি বিদেশ মন্ত্রী, সরকার কি জানতো হাতকড়া পরিয়ে পাঠানো হবে? পাল্টা প্রশ্ন কংগ্রেস নেতার
বিশেষ প্রতিনিধি : আমেরিকা থেকে ভারতীয় অভিবাসীদের বিতাড়ন ইস্যুতে বিরোধীদের প্রতিবাদের মুখে রাজ্যসভায় মুখ খুললেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। তিনি জানালেন, ”আমেরিকা থেকে প্রত্যর্পণ নতুন কিছু নয়। ২০০৯ থেকে হচ্ছে।” পালটা কংগ্রেস সাংসদ রণদীপ সুরজেওয়ালার প্রশ্ন, ”সরকার কি জানত ১০৪ জন ভারতীয়কে হাতে হাতকড়া পায়ে শিকল পরিয়ে ৪০ ঘণ্টা বিমানে বসিয়ে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে?”
মার্কিন সামরিক বিমান সি-১৭ গ্লোবমাস্টারে চাপিয়ে ১০৪ ভারতীয় অভিবাসীকে দেশে পাঠিয়েছে আমেরিকা। হাতে হাতকড়া, পায়ে শিকল পরিয়ে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে তাঁদের। আর এই ইস্যু নিয়ে উত্তাল সংসদ। এই পরিস্থিতিতে এদিন জয়শংকর বলেন, ”যদি কোনও নাগরিক বিদেশে অবৈধভাবে বসবাস করছে বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে তাদের ফিরিয়ে নেওয়া সকল দেশের বাধ্যবাধকতা।” পাশাপাশি তিনি বলেন, ”হাতকড়া পরিয়ে তোলা আমেরিকার নিয়ম। কিন্তু মহিলা ও শিশুদের হাতকড়া পরানো হয়নি। বাকিদেরও শৌচাগারে যাওয়ার সময় হাতকড়া খুলে নেওয়াও হয়েছে।” সেই সঙ্গে জয়শংকর জানান, ভারতীয়দের নথি ছাড়াই আমেরিকায় পাঠানোর সঙ্গে যে চক্র জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে মোদি প্রশাসন।
এরপর জয়শংকরকে প্রশ্ন করার অনুমতি চান কংগ্রেস সাংসদ রণদীপ সুরজেওয়ালা। জগদীপ ধনখড় তাঁকে অনুমতি দিলে তিনি জানতে চান, ”সরকার কি জানত ১০৪ জন ভারতীয়কে (যাঁদের মধ্যে ১৯ জন মহিলা, রয়েছে শিশুরাও) হাতে হাতকড়া পায়ে শিকল পরিয়ে ৪০ ঘণ্টা বিমানে বসিয়ে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে? জঙ্গিদের মতো করে এভাবে কি তাঁদের ফেরানোর কথা সরকার জানে? কত ভারতীয় এভাবে আটকে রয়েছে সেখানকার বন্দিশিবিরে?” সেই সঙ্গেই কলম্বিয়ার উদাহরণ দেখিয়ে তিনি জানতে চান, কলম্বিয়া তাদের দেশ থেকে আমেরিকায় যাওয়া অভিবাসীদের ফেরানো নিয়ে লাল চোখ দেখাতে পারলে মোদি সরকার পারল না কেন?
প্রসঙ্গত, ভারতীয় অভিবাসীদের আমেরিকা থেকে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে মোদি সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, যেভাবে ভারতীয়দের ফেরত পাঠানো হচ্ছে তা নিয়ে সরব হওয়া উচিত কেন্দ্রের। ‘নমস্তে ট্রাম্প’-এর মতো অনুষ্ঠান করে এদেশে একসময় রিপাবলিকান নেতাকে এদেশে স্বাগত জানিয়েছেন মোদি। আবার মোদিকে নিয়ে সেদেশে ‘হাউডি মোদি’ হয়েছে। মোদি-ট্রাম্প বন্ধুত্বের কথা সর্বজনবিদিত। এরপরও ট্রাম্প মসনদে বসেই এই ধরনের পদক্ষেপ করার পরও মোদি সরকার কেন সরব হচ্ছে না, উঠছে প্রশ্ন।