জিতেও স্বস্তিতে নেই হরিয়ানায় বিজেপি! মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে চলছে দর কষাকষি! বুধবার বৈঠকে বসছে বিজেপি! মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে এগিয়ে কে?
সেখ ইবাদুল ইসলাম : হরিয়ানায় একক গরিষ্ঠতা পাওয়া সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে শুরু হয়েছে বিজেপি দলের মধ্যে অসন্তোষ। তাই এককভাবে জেতার পরেও শপথ গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর। নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকুক নায়েব সিং সোনি। কিন্তু দলের প্রবীণ নেতা এবং আরএসএস ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন মন্ত্রী অনিল ভিজ মুখ্যমন্ত্রী হতে চাইছেন। ইতিমধ্যেই হরিয়ানা থেকে প্রকাশিত একাধিক হিন্দি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে ফেলেছেন অনিল ভিজ।
মনে করা হচ্ছে অনিল ভিজের এই দাবির পেছনে রয়েছে আরএসএস। অন্যদিকে রাও ইন্দ্রজিৎ নামে একজন প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা বর্তমানে বিজেপির গুরুগ্রাম থেকে নির্বাচিত সাংসদ,তিনিও প্রকাশ্যে দাবি করেছেন তাকে মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে। প্রসঙ্গত বলা প্রয়োজন রাও ইন্দ্রজিৎ দক্ষিণ হরিয়ানার নেতা এখান থেকে নির্বাচিত প্রায় ১৫ জন বিধায়ক রাও ইন্দ্রজিতের ঘনিষ্ঠ। দক্ষিণ হরিয়ানায় মোট আসন সংখ্যা রয়েছে ২১টি। এর অধিকাংশ আসনে এবার বিজেপি জয়লাভ করেছে। আর এই দক্ষিণ হরিয়ানায় কংগ্রেস হেরে যাওয়ার কারণেই হরিয়ানাতে কংগ্রেস জয়ের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারেনি।
রাও ইন্দ্রজিৎ দক্ষিণ হরিয়ানাতে একজন অবিসংবাদী নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত। তিনি কংগ্রেস ছেড়েছিলেন মূলত মুখ্যমন্ত্রীর পদের দাবিদার হওয়ার জন্যই। কারণ তাঁর মনে হয়েছিল যতদিন ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা বেঁচে থাকবেন ততদিন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী তিনি হতে পারবেন না। সেই কারণেই তিনি কংগ্রেস ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। আর এবারের নির্বাচনে যেহেতু বিজেপি বেশি আসন পেয়েছে দক্ষিণ হরিয়ানা থেকে স্বাভাবিকভাবেই তাঁর এই দাবি প্রতি মান্যতা না দিলে ক্ষতি হতে পারে বিজেপি।
কারণ তিনি ইতিমধ্যেই ১৫ থেকে ১৬ জন বিধায়ককে নিয়ে আলাদা বৈঠক করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর। আর এই কারণেই হরিয়ানায় জিতেও অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদীর রক্তচাপকে অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ সূত্রে জানা গেছে রাও ইন্দ্রজিৎকে যদি হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো না হয় তাহলে তিনি যে বিজেপি থেকে বেরিয়ে গিয়ে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসবেন সে বিষয়ে হরিয়ানার রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যে আগাম পূর্বাভাস দিয়েছেন। জানা গেছে ইতিমধ্যেই রাও ইন্দ্রজিৎ নাকি তার পুরানো দল কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ করে চলেছেন।
এই রাজনৈতিক সংকটে দাঁড়িয়ে বিজেপি যে কোন প্রকারে হরিয়ানাতে সরকার গড়তে বদ্ধপরিকর। ভোটের ফল আসার পরের দিন থেকেই দিল্লিতে অমিত শাহর বাড়িতে প্রায় প্রতিদিনই এই নিয়ে বৈঠক হয়েছে কিন্তু সেই বৈঠক থেকে কোন সমাধান সূত্র এখনো পর্যন্ত বেরিয়ে আসেনি। আর এই প্রেক্ষাপটেই এবার উপর থেকে না চাপিয়ে দিয়ে বিধায়কদের মতামত নেওয়ার জন্য আগামী ১৬ ই অক্টোবর হরিয়ানাতে বিধায়ক দলের বৈঠক ডেকেছে বিজেপি। মনে করা হচ্ছে বিধায়কদের সিংহভাগ অংশের সমর্থন যে নামের প্রতি দেওয়া হবে তাকেই হয়তো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে অভিষিক্ত করবেন অমিত শাহরা। এখন দেখার বিষয় সব কিছু মসৃণ ভাবে হয় কিনা। তবে মনে করা হচ্ছে নায়েব সিং সোনিকে যদি আবারও মুখ্যমন্ত্রী করার উদ্যোগ বিজেপি হাইকমান্ড নেয় তাতে যে দল ভাঙতে পারে, সে বিষয়ে আশঙ্কা থেকেই যাবে।।