দেশ 

বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসাবে গণ্য করতে নারাজ কেন্দ্র, এই ধরনের ঘটনাকে অপরাধের তালিকাভুক্ত করার অধিকার সুপ্রিম কোর্টের নেই জানিয়ে দিল মোদি সরকার!

শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিনিধি :  স্ত্রীর অসম্মতিতে জোর করে স্বামী সহবাস করলে তাকে ধর্ষণ বলা যাবে কিনা তা নিয়ে আমাদের দেশে বহু চর্চা হয়েছে এবং হচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন যে স্ত্রীর অসম্মতিতে সহবাস করলে তাকে ধর্ষণের অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে স্বামীর শাস্তি হওয়া উচিত। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রের অবস্থান জানতে চেয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট কে কেন্দ্র পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে, বৈবাহিক সম্পর্কে ধর্ষণ শব্দটি ব্যবহার করা উচিত হবে না। আর ধর্ষণ এর ঘটনা ঘটলে তাকে অপরাধ হিসাবে গণ্য করতে নারাজ কেন্দ্র সরকার। কেন্দ্রের মোদি সরকার সুপ্রিম কোর্ট কে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে নাক গলানো সুপ্রিম কোর্টের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না।

সুপ্রিম কোর্টকে কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে, ওই ধরনের ঘটনাকে যেন ফৌজদারী অপরাধের তালিকায় ফেলা না হয়। কারণ হিসাবে দেশের শীর্ষ আদালতে তিনটি যুক্তি পেশ করেছে তারা।

Advertisement

প্রথমত,বিবাহিত সম্পর্কে মহিলাদের অধিকার নিয়ে দেশে যা আইন রয়েছে, তাই ওই ধরনের ঘটনা ঠেকানোর জন্য যথেষ্ট। তার জন্য আলাদা করে ওই ঘটনাকে অপরাধের তালিকাভুক্ত করার দরকার নেই।

দ্বিতীয়ত, কেন্দ্র বলেছে, ওই ধরনের ঘটনাকে অপরাধের তালিকায় ফেলা সুপ্রিম কোর্টর ক্ষমতার আওতাভুক্ত নয়।

মোদি সরকারের তৃতীয় যুক্তি হলো,বৈবাহিক সম্পর্কে ধর্ষণের ঘটনা যত না আইনি বিষয়, তার থেকে অনেক বেশি একটি সামাজিক বিষয়। তাই ওই বিষয়ে সমস্ত পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

তবে বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধের তালিকায় ফেলতে না চাইলেও কেন্দ্র মেনে নিয়েছে যে, বিয়ে কখনওই মহিলাদের সম্মতি দেওয়ার বা সম্মত হওয়ার অধিকার কেড়ে নেয় না। তাই সেই অধিকার ভাঙলে তার আইনি পরিণাম ভুগতেই হবে। যদিও কেন্দ্র একসঙ্গেই জানিয়েছে, বিবাহিত সম্পর্কে ওই অধিকার ভঙ্গের শাস্তি এক রকম হওয়ার কথা। কিন্তু তা বিবাহের বাইরে হলে অন্য ভাবে বিবেচ্য। কেন্দ্রের বক্তব্য, বিবাহ কখনওই স্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্কে বাধ্য করার অধিকার দেয় না স্বামীকে। তবে ওই ধরনের ঘটনা ঘটলে অপরাধীকে ধর্ষণ বিরোধী আইনে শাস্তি দিলে, বিচারে সমতা থাকবে না।

একটা মহল থেকে বিবাহিত মহিলাদের অসম্মতিতে সহবাস করাকে ধর্ষণের অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত করে শাস্তি প্রদানের পক্ষে সওয়াল করে চলেছে। এমনকি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি যেখানে ক্ষমতায় আছে সেখানেও ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকে তীব্র করছে বিজেপি। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধের আওতায় ফেলতে নারাজ। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রের মোদি সরকারের বক্তব্য হল, ‘‘বৈবাহিক সম্পর্কে এক জন বিবাহিত মহিলার সম্মতি জানানোর অধিকার সংরক্ষণ করার ব্যাপারে পদক্ষেপ করেছে। ‘গার্হস্থ্য হিংসা থেকে মহিলাদের রক্ষা করার আইন ২০০৫’-এ বিবাহিত মহিলারা সাহায্য পেতে পারেন।’’


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ