বাংলাদেশ জুড়ে কারফিউ জারি, ঢাকা সহ সমগ্র বাংলাদেশে টহল দিচ্ছে সেনা, আপাত শান্তির আড়ালে কি অশান্তি লুকিয়ে রয়েছে?
বিশেষ প্রতিনিধি : শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ জুড়ে কারফিউম জারি করার পর শনিবার সকাল থেকে ঢাকা সহ সমগ্র বাংলাদেশের পরিস্থিতি পাল্টে যায়। রাতেই সেনাতলব করা হয়েছিল সকাল থেকে সমগ্র দেশেই সেনাবাহিনী নামিয়ে দেয়া হয়। রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে বাংলাদেশি সেনা। কারফিউ থাকায় বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন না কেউ। ফলে গত কয়েক দিন ধরে কোটা সংস্কারের দাবিতে যে ছাত্রবিক্ষোভ চলছিল বাংলাদেশ জুড়ে, শনিবার তার ছবি কিছুটা হলেও বদলে গিয়েছে। আগামী রবিবার পর্যন্ত বাংলাদেশে কারফিউ চলবে। তার পর পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জানা গেছে, আগামীকাল রবিবার বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টে কোটা মামলার শুনানি হবে। এখানে কোটা সংস্কার করার কথা বলবে হাসিনা সরকার।
শনিবার সকালে দু’ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়। এই সময়ের মধ্যে সাধারণ নাগরিককে যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটার সুযোগ দেওয়া হয়। শনিবার সকাল থেকে কোথাও গন্ডগোলের খবর পাওয়া যায়নি। সেনাবাহিনী আপাতত ভাবে গোটা বাংলাদেশকে শান্ত রাখতে পেরেছে। তবে সেনাবাহিনীর এই মোতায়নটা অনেকটাই হাসিনা সরকারের কাছে বুমেরাং হয়ে যেতে পারে। যেকোনো সময় বাংলাদেশের সেনা অভ্যুত্থান ঘটে গেলে বিপাকে পড়তে পারে হাসিনা সরকার। সেই জন্য হাসিনা স্পেন এবং ব্রাজিল সফর বাতিল করে দিয়েছেন।
বাংলাদেশে গত বৃহস্পতিবার থেকে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। যার জেরে গোটা বিশ্বের থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দেশটি। শুক্রবার সংরক্ষণ ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভের ঝাঁজ আরও বেড়ে গিয়েছিল। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি। শুক্রবার রাতেই পরিস্থিতি সামাল দিতে কারফিউ জারি করা হয়। পুলিশ শান্তি বজায় রাখতে ব্যর্থ হলে নামানো হয় সেনা।
সেনাবাহিনী নামালে ও কারফিউ উঠে যাওয়ার পর আবার বাংলাদেশ উত্তাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কারণ এই আন্দোলন নিয়ে সরকারের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের যে বৈঠক হয়েছে সেই বৈঠক সফল হয়নি। তাতে ন দফা দাবি করা হয়েছে এর মধ্যে শতাধিক ছাত্রকে খুন করার দায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিতে হবে বলে ওই দাবিতে বলা হয়েছে। দ্বিতীয় দাবির মধ্যে বলা হয়েছে ছাত্র আন্দোলন কে কটাক্ষ করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতা ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামানকে বহিষ্কার করতে হবে। তিন নম্বর দাবিতে বলা হয়েছে, যেসব এলাকায় ছাত্ররা বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে গুলি খেয়ে মারা গেছেন সেই সব এলাকার এসপি এবং পুলিশ আধিকারিকদের কে চাকরি থেকে বহিষ্কার করতে হবে। একইসঙ্গে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করাতে হবে বলেও ওই দাবিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করা হয়নি।