দেশ 

‘‘নির্বাচন প্রক্রিয়ার পবিত্রতা রক্ষা করতে হবে, কারও মনে যেন আশঙ্কা তৈরি না হয় যে, যা উচিত তা করা হচ্ছে না’’ : সুপ্রিম কোর্ট

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : দেশে নির্বাচনকে অবাধ এবং স্বচ্ছ করতে হলে একই সঙ্গে ভোটারদের মনে নির্বাচন সম্পর্কে বিশ্বাস জাগাতে হলে নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কারণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ভোটারের মনে কোন রকম ভাবে যেন বিরূপ আশঙ্কা তৈরি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।

ভিভিপ্যাট পদ্ধতির মাধ্যমে কাগজের স্লিপ-সহ বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রে (ইভিএম) পাওয়া ভোটের ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের (ক্রস-ভেরিফিকেশন) দাবিতে একটি আবেদনের শুনানির সময় বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ।

Advertisement

দুই বিচারপতির বেঞ্চ বৃহস্পতিবার পর্যবেক্ষণে বলেছে, ‘‘নির্বাচন প্রক্রিয়ার পবিত্রতা রক্ষা করতে হবে। কারও মনে যেন আশঙ্কা তৈরি না হয় যে, যা উচিত তা করা হচ্ছে না।’’ প্রসঙ্গত, ইভিএমে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়া হল কি না, ভিভিপ্যাট স্লিপের মাধ্যমে তা পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ রয়েছে ভোটারের। কিন্তু নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে কাজ করা সংস্থা, অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মসের (এডিআর) অভিযোগ, প্রতিটি বিধানসভায় ২০০টি ভিভিপ্যাট মেশিন থাকলেও পাঁচটির বেশি গণনাই করা হয় না।

সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা মামলার শুনানিতে এডিআরের আইনজীবী নিজ়াম পাশা বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘ভিভিপ্যাট স্লিপ সংগ্রহ করে ব্যালট বাক্সে ফেলার সুযোগ দেওয়া উচিত ভোটারদের। জালিয়াতির সম্ভাবনা আটকাতে প্রতিটি ভিভিপ্যাট স্লিপ গণনা করা উচিত।’’ সংস্থার আর এক আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বুধবার এই মামলার শুনানিতে জানিয়েছিলেন, ইউরোপের অধিকাংশ দেশই ইভিএমের বদলে ব্যালটে ভোট করাতে শুরু করেছে। ফলে ভারতেও ব্যালটে ফিরে যাওয়া যেতে পারে, অথবা ভিভিপ্যাট স্লিপ ভোটারদের হাতে দেওয়া হোক। তারা সেটি ব্যালট বাক্সে জমা করবেন।

কিন্তু এই ব্যবস্থায় ভোটারের পছন্দের গোপনীয়তা রাখার গণতান্ত্রিক অধিকার বজায় থাকবে কি না তা নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি খন্না। আবেদনকারী পক্ষ তখন জানায়, সেই সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকেই। প্রশান্তের মন্তব্য, ‘‘গোপনীয়তার সঙ্গে কোনও আপস করা হবে না।’’ কিন্তু কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রত্যেক ভোটারকে ভিভিপ্যাট স্লিপ দেখতে দিলে গোপনীয়তা রক্ষা করা ঝুঁকি হয়ে যাবে।

কেরলে একটি মহড়ার জন্য সম্প্রতি নকল ভোটের আয়োজন হয়েছিল কয়েকটি ইভিএমে। সেখানে বিজেপি প্রতীকে প্রাপ্ত ভোট প্রকৃত ভোটের চেয়ে বেশি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী মনিন্দর সিংহ জানান, বর্তমানে ইভিএমের কন্ট্রোল ইউনিট থেকে ভিভিপ্যাটকে স্লিপ ছাপানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সেটি সিল করা বাক্সে পড়ার আগে সাত সেকেন্ডের জন্য ভোটারের সামনে দৃশ্যমান হয়।

ভিভিপ্যাট প্রিন্টারে কোনও সফ্‌টওয়্যার আছে কি না দুই বিচারপতির বেঞ্চ তা নিয়ে প্রশ্ন করলে, নির্বাচন কমিশন নেতিবাচক জবাব দেয়। কমিশনের আইনজীবী বলেন, ‘‘প্রতিটি ভিভিপ্যাটে একটি চার মেগাবাইটের ফ্ল্যাশ মেমরি থাকে যা প্রতীক সংরক্ষণ করে।’’ জানান, রিটার্নিং অফিসার প্রতি ভোটারের ভোটদানের আগে ইলেকট্রনিক ব্যালট প্রস্তুত করেন, যা প্রতীক লোডিং ইউনিটে লোড করা হয়। আইনজীবী মনিন্দরের কথায়, ‘‘এটি একটি সিরিয়াল নম্বর। প্রার্থীর নাম এবং প্রতীক দেবে। কিছুই আগে থেকে লোড করা হয় না। ডেটা নয়, এটি আসলে ইমেজ ফরম্যাট।’’


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ