আন্দোলনরত কৃষকদের পাশে দাঁড়ালেন ভারতরত্ন কৃষি বিজ্ঞানী সবুজ বিপ্লবের জনক স্বামীনাথনের কন্যা, অস্বস্তিতে মোদি সরকার!
বাংলার জনরব ডেস্ক : ভারতরত্ন কৃষি বিজ্ঞানী এম এস স্বামীনাথন এর কন্যা, মধুরা স্বামীনাথন দিল্লির সীমান্তে আন্দোলনরত কৃষকদের পাশে দাঁড়ালেন। প্রখ্যাত কৃষিবিজ্ঞানী তথা সবুজ বিপ্লবের জনকের মেয়ের মন্তব্য ভারতের কৃষকরা দেশের অন্নদাতা, তাঁদের সঙ্গে অপরাধীসুলভ আচরণ করা যায় না।
কৃষকদের প্রতিবাদে হরিয়ানা সরকারের লাঠিচার্জ এবং কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার প্রতিক্রিয়া হিসাবে মধুরা বুধবার জানিয়েছেন, দেশবাসীকে খাবারের জোগান দেন কৃষকরা। তাই তাঁদের সঙ্গে কোনও ভাবেই অপরাধীসুলভ আচরণ করা যায় না বলেই উল্লেখ করেছেন মধুরা।
উল্লেখ্য, সদ্য স্বামীনাথনকে ‘ভারতরত্ন’ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তা উদ্যাপন করতেই দিল্লির পুসায় ‘ইন্ডিয়ান এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট (আইএআরআই)’-এর তরফে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে যোগ দিয়ে মধুরা জানিয়েছেন, তাঁর কৃষিবিজ্ঞানী বাবাকে সম্মান জানাতে দেশের কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে। মধুরার কথায়, “পঞ্জাবের কৃষকরা আজ দিল্লির দিকে মিছিল করছেন। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখেছি, হরিয়ানায় কৃষকদের জন্য জেল তৈরি করা হয়েছে, ব্যারিকেড করা হয়েছে। কৃষকদের ঠেকাতে সব ধরনের চেষ্টা চলছে। মনে রাখা দরকার, এঁরা কৃষক, অপরাধী নন।’’
মধুরা আরও যোগ করেছেন, “ভারতের নেতৃস্থানীয় বিজ্ঞানীদের অনুরোধ করছি যে, আমাদের অন্নদাতাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আমরা তাঁদের সঙ্গে অপরাধীসুলভ আচরণ করতে পারি না। আমাদের সমাধান খুঁজে বার করতে হবে। আমি মনে করি, যদি এমএস স্বামীনাথনের সম্মান বজায় রাখতে হয় এবং ভবিষ্যতে এগিয়ে যেতে হয়, তা হলে আমাদের কৃষকদের সঙ্গে নিয়েই চলতে হবে।’’
গত ৯ ফেব্রুয়ারি স্বামীনাথনকে ‘ভারতরত্ন’ হওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। দেশে দুর্ভিক্ষ রোখার জন্য এবং কৃষিক্ষেত্রে দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে ছয়ের দশকের শেষ দিক থেকে ভারত সরকার যে ‘সবুজ বিপ্লব’-এর সূচনা করে, তার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন স্বামীনাথনই। উন্নত বীজ, জলসেচের মাধ্যমে পশ্চিম ভারত, মূলত পঞ্জাবে কৃষিক্ষেত্রের আমূল সংস্কার করা হয়। সবুজ বিপ্লবের সাফল্য নিয়ে সংশয় এবং বিতর্ক থাকলেও, তৎকালীন ভারতের খাদ্যসঙ্কট এবং খাদ্যশস্যের জন্য বিদেশ-নির্ভরতা যে অনেকাংশে কমানো গিয়েছিল, তা স্বীকার করেন সকলেই। স্বামীনাথন ফসলের ন্যায্য সহায়ক মূল্য প্রণয়ন করেছিলেন এবং বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছিলেন। স্বামীনাথন কমিশনের সেই প্রস্তাব মেনে নেওয়ার দাবিতেও রাস্তায় নেমেছেন কৃষকেরা। গত বছর সেপ্টেম্বরে মৃত্যু হয়েছে বিজ্ঞানী স্বামীনাথনের।