আশ শিফা হাসপাতালে হামাসের কোন ঘাটি কিংবা বন্দী খুঁজে পাইনি ইসরাইলি সেনা, বিশ্বজুড়ে ইসরাইল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিথ্যাচার প্রমাণিত
বাংলার জনরব ডেস্ক : অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য কেন্দ্র আশ শিফা হাসপাতালে কোন হামাসের দফতর খুঁজে পায়নি ইসরাইলি বাহিনী। এতদিন ধরে ইসরাইল দাবি করে আসছিল আশ শিফা হাসপাতালে রয়েছে হামাসের অস্ত্র ভান্ডার যেখান থেকে তারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে। এমনকি হামাসের বাহিনীও এই হাসপাতালের ভেতরে লুকিয়ে আছে বলে দাবি করেছিল ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী।
কিন্তু গত দুদিন আগে আশ শিফা হাসপাতালের দখল নেয় ইসরাইলি বাহিনী। দেখা যায় এখানে কোন অস্ত্র ভান্ডার নেই আর কোন হামাসের দেখা মেলেনি। এ থেকে ইসরাইলের মিথ্যাচার আরেকবার জনসম্মুখে প্রমাণিত হলো এবং তাদের দোসর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমগ্র বিশ্বের সামনে একজন মিথ্যাচারী দেশ হিসাবে পরিচিত লাভ করলো। মার্কিন প্রশাসনও দাবি করেছিল যে আশ শিফা হাসপাতালের নিচেই রয়েছে হামাসের অস্ত্র ভান্ডার।হিব্রু ভাষার বিভিন্ন গণমাধ্যম বুধবার এ তথ্য স্বীকার করেছে।
এছাড়া এর আগে ইসরাইল এই হাসপাতালের কাছে অবস্থিত একটি গর্তের ছবি প্রকাশ করে বলেছিল, এই গর্ত হাসপাতালের নিচে ঘাঁটি থাকার প্রমাণ বহন করছে। কিন্তু পরবর্তীতে গণমাধ্যমের তদন্তে এটা বেরিয়ে আসে যে, ঐ গর্ত বা ফাটল হাসপাতালের আন্ডার গ্রাউন্ড ফ্লোরের বায়ু চলাচল ব্যবস্থার একটি মুখ। লেবাননের আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেল জানিয়েছে, বুধবার সকালে আশ শিফা হাসপাতালে সেনাদের হামলায় এই হাসপাতালে অবস্থানরত বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি শহীদ এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। এছাড়া ইসরাইলি বাহিনী হাসপাতালটির আশপাশে বিমান হামলার মাধ্যমে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র বলছে, মঙ্গলবার মধ্যরাতে হাসপাতালটিতে ঢুকে অভিযান শুরু করে দখলদার বাহিনী। হাসপাতালটির ভেতরে রোগী, স্বাস্থ্যকর্মী এবং বেসামরিক নাগরিক মিলিয়ে কয়েক হাজার মানুষ আটকে পড়েছে। কেউ বের হলেই তাদেরকে গুলি করা হচ্ছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী সেখানে আটকে পড়া রোগী এবং চিকিৎসকদের জোরপূর্বক জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইসরাইলি বাহিনী। ইসরাইলি বাহিনী অভিযান শুরুর আগ থেকেই গোটা হাসপাতাল এলাকা ঘিরে রেখেছিল। হাসপাতালের ভেতরেও ট্যাঙ্ক নিয়ে গেছে তারা।
দখলদার ইসরাইলের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থনের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রও জানিয়েছিল, আশ শিফা হাসপাতালের নিচে সুড়ঙ্গে হামাসের একটি ‘কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল সেন্টার’ থাকার তথ্য আমেরিকার কাছে রয়েছে। এই দাবি প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছে হামাস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা বলেছিল, জাতিসংঘের নিরপেক্ষ প্রতিনিধি দল এসে এখানে তদন্ত চালিয়ে যেতে পারে। এখানে এমন কোনো কিছুই নেই। রোগীদের জিম্মি করে আশ-শিফা হাসপাতালে ইসরাইলি অভিযানের নিন্দা জানিয়ে একে মানবতা বিরোধী অপরাধ বলে অভিহিত করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।
এর আগে গাজার আল আহলি আরাব হাসপাতালে বোমা হামলা চালিয়ে রোগীসহ শত শত ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। সৌজন্যে রেডিও তেহরান।