ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক প্রশাসনিক ক্ষমতার সহ স্বাধীনতা সবটাই নিয়ন্ত্রণ করবে হামাস: গাজী হামাদ
বাংলার জনরব ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার রাজনীতি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করবে হামাস একথা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন সংগঠনটির সিনিয়র নেতা গাজি হামাদ। কাতার থেকে সম্প্রচারিত নিউজ চ্যানেল আল জাজিরাকে দেওয়ার সাক্ষাৎকারে হামাসের বর্ষীযন নেতা গাজী হামাদ এ কথা জানিয়েছেন।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার উপর গত এক মাসের বেশি সময় ধরে নির্বিচার বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে ইসরাইল। দখলদার এই শক্তি ও তার মার্কিন পৃষ্ঠপোষকরা দাবি করছে, চলমান যুদ্ধে তারা হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে গাজার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করবে।
এ সম্পর্কে হামাসের পলিটব্যুরো সদস্য গাজি হামাদ বলেন, গাজায় হামাসের ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে বলে মার্কিনীরা যে দাবি করছে তার মাধ্যমে তারা প্রকারান্তরে একথা স্বীকার করে নিচ্ছে যে, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সামরিক উপায়ে তারা হামাসকে পরাজিত করতে পারেনি। তিনি প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বলেন, গাজায় হামাস একটি রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তি ছিল, আছে ও থাকবে এবং এই ভূখণ্ডের ভবিষ্যত নির্ধারণে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে যাবে।
হামাসের এই রাজনৈতিক নেতা বলেন, ইসরাইল ও আমেরিকা গাজা পরিস্থিতি পাল্টে দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালানো এবং ঘরবাড়ি ও হাসপাতালসহ অন্যান্য বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করা ছাড়া এই অবরুদ্ধ ভূখণ্ডে আর কোনো লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি।
গাজি হামাদ বলেন, গাজা কার নিয়ন্ত্রণে থাকবে তা নির্ধারণ করার অধিকার একমাত্র ফিলিস্তিনিদের রয়েছে এবং মার্কিন ও সরকারের আকাঙ্ক্ষাকে পরাভূত করে এই প্রক্রিয়ায় হামাস মূল ভূমিকা পালন করে যাবে।
গাজি হামাদ দৃশ্যত ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এসব কথা বললেন। নেতানিয়াহু মঙ্গলবার দাবি করেছিলেন, যুদ্ধ শেষে [হামাস ধ্বংস হওয়ার পর] গাজার সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষা করার দায়িত্ব অনির্দিষ্টকালের জন্য ইসরাইলের হাতে থাকবে। তবে সেটির ধরন কেমন হবে তা যুদ্ধবাজ নেতানিয়াহু উল্লেখ করেননি।
হামাস গত ১৫ বছর ধর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা শাসন করে আসছে। ইহুদিবাদী ইসরাইল বর্তমানে গাজায় যে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ চালাচ্ছে, হামাসকে ধ্বংস করাকে তার মূল লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করেছে। তবে সমর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে অনুপ্রবেশ করে হামাস যে বড় ধরনের অভিযান চালিয়েছে তার ব্যর্থতার গ্লানি তেল আবিবকে আজীবন বহন করতে হবে। এছাড়া, হামাসের মতো একটি সংগঠনকে এত সহজে নির্মূল করা সম্ভব নয় বলেও তারা মনে করছেন।
আন্তর্জাতিক মহল মনে করছে গাজাতে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ কব্জা করা ইসরাইলের পক্ষে সম্ভব নয়। তাছাড়া হামাস যেভাবে গাজার মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে তা ভেঙে ফেলাও ইসরাইল এবং আমেরিকার পক্ষে সম্ভব হবে না। ফলে ইসরাইল যদি মনে করে গাজায় তাদের আধিপত্য বিস্তার করবে তাহলে তা ভুল করবে বলেই আন্তর্জাতিক মহল মনে করছে। একথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বারবার ইসরাইলকে সতর্ক করে বলা হচ্ছে যে গাজায় অভিযান চালানোটা তাদের কাছে আত্মঘাতীর শামিল হতে পারে। তা সত্ত্বেও যেভাবে ইসরাইল গাজার বেসামারি নাগরিককে হত্যা করে চলেছে তা এক কথায় যুদ্ধ অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত হবে ইতিহাসের পাতায়।