কলকাতা 

শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতি টুইন টাওয়ারের সমান, পুর নিয়োগের দুর্নীতি দুবাইয়ের বুর্জ খলিফার সমান, আদালতে দাবি সিবিআইয়ের! প্রমাণ করতে পারবে তো?

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : সিবিআই আদালতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সামনে বলেছিল শিক্ষক নিয়োগে যে দুর্নীতি হয়েছে সে দুর্নীতি টুইন টাওয়ার এর মত। আমেরিকায় অবস্থিত এই টুইন টাওয়ার ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় টাওয়ার যদিও ২০০১ সালে জঙ্গি হামলায় সেই টাওয়ার বিনষ্ট হয়েছিল। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআইয়ের মুখে এ কথা শুনে সেদিন বলেছিলেন যদি টুইন টাওয়ার এর মতো দুর্নীতি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই তা ভেঙে ফেলতে হবে। গত ১১ ই সেপ্টেম্বর এই দুর্নীতির রিপোর্ট বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে জমা দেওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সির। কিন্তু আইনজীবির মৃত্যুর কারণে তা সম্ভব হয়নি। আর গত কয়েকদিন ধরে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর এজলাসে বসছেন না ফলে তদন্ত রিপোর্ট এখনো সামনে আসেনি।

বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে রিপোর্ট জমা দেয় সিবিআই। সে সময় সিবিআইয়ের কৌঁসুলি বলেন, নিয়োগ দুর্নীতির বিস্তৃতি যেন আমেরিকার টুইন টাওয়ারের মতো। একটি স্তম্ভ যদি স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি হয়, অন্যটি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সেই বক্তব্য শুনে বিচারপতি সিংহ পুরসভা নিয়োগের দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গও তোলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে সিবিআইয়ের কৌঁসুলি বলেন, ‘‘পুর নিয়োগ দুর্নীতিকে বুর্জ খলিফা বললেও ভুল হবে না।’’

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা। সেই মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য-সহ তৃণমূলের একাধিক নেতা। তদন্তকারীদের দাবি, জেলায়-জেলায় কী ভাবে এজেন্ট নিয়োগ করে দুর্নীতি হয়েছিল তারও তথ্য হাতে এসেছে। অনেকেরই অভিযোগ, ২০১৪ সালে প্রাথমিক শিক্ষকের যোগ্যতা নির্ধারক পরীক্ষা (টেট) হয়েছিল। কার্যত সেখান থেকেই দুর্নীতির চারাগাছ বপন করা হয়েছিল। টেট-এর প্রশ্ন ভুল করা, তা প্রমাণের পরেও নম্বর না-দেওয়া ইত্যাদি করার ফাঁকে অবৈধ নিয়োগও হয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এমনই যে বেআইনি ভাবে নিযুক্তদের চাকরি বাঁচাতে কার্যত রুখে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতি দেখেই চাকরিপ্রার্থীদের অনেকের বক্তব্য, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি যে গগনচুম্বি এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই। একই কথা প্রযোজ্য এসএসসি মারফত নিয়োগের ক্ষেত্রেও।

এখন দেখার সিবিআই যে কথা আদালতে দাঁড়িয়ে বলছে তা কতটা প্রমাণ করতে পারে। কারণ সিবিআই এবং কেন্দ্রীয় এজেন্সি ইডি যেভাবে একের পর এক দুর্নীতির তত্ত্বকে খাড়া করছে শেষ পর্যন্ত তা প্রমাণ করতে পারছে না। আমরা জানি কংগ্রেস নেতা পি পি চিদাম্বরম কে নিয়ে এই ধরনের কথাবার্তা সিবিআই এবং ইডি বলেছিল শেষ পর্যন্ত প্রমাণ করতে পারেনি। অর্থাৎ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে যদি কেন্দ্রীয় এজেন্সি এই ধরনের কথাবার্তা বলতে থাকেন এবং তার যদি প্রমাণ আদালতে পেশ করতে না পারেন তাহলে কিন্তু আখেরে লাভ হবে তৃণমূলেরই।

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ