কলকাতা 

নাখোদা মসজিদ থেকে মাওলানা শফিকের বিদায় আসন্ন!

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বুলবুল চৌধুরী: মুখ্যমন্ত্রীর খুব কাছের মানুষ ছিলেন টিপু সুলতান মসজিদের ইমাম নুরুর রহমান বরকতি তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে উচ্চ আসনে বসিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অনেক কটুক্তি করেছিলেন তাই নিয়ে শেষ পর্যন্ত টিপু সুলতান মসজিদের ইমাম পথ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বরকত সাহেবকে। অন্যদিকে সম্প্রতি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ইমাম সম্মেলন হয় সেই ইমাম সম্মেলনের অন্যতম আয়োজক ছিলেন না খোদা মসজিদের ইমাম মাওলানা মোঃ শফিক।

ইমাম সম্মেলনকে সফল করার জন্য মাওলানা শফিক সাহেব রাজ্য জুড়ে ঘুরেছিলেন এবং ইমামদেরকে সংগঠিত করেছিলেন পরবর্তীকালে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ইমামদের বেতন মাত্র ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করেছে। আর এ নিয়েই শুরু হল রাজ্যজুড়ে বিতর্ক। কোন কোন ক্ষেত্রে মিম তৈরি করা হয়েছে এবং সেখানে দেখানো হয়েছে মমতা ব্যানার্জি মাত্র ৫০০ টাকা ইমামদের বেতন বৃদ্ধি করার পর যেভাবে মাওলানা শফিকের নেতৃত্বে আল্লাহর কাছে দোয়া চাওয়া হচ্ছে তাতেই মনে হচ্ছে যেন বিরাট কিছু করে ফেলেছেন। আর এ নিয়েই রাজ্য জুড়ে মুসলিম সমাজের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

Advertisement

এর ফলে এই বাঙালি মুসলিম সমাজে যেটুকু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বাসযোগ্যতা ছিল তা যে মাওলানা শফিকের এই ধরনের উদ্যোগের পর তলানিতে সে ঠেকেছে। প্রশ্ন উঠেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কেন মাওলানা শফিকের মত একজন ইমাম সাহেবের খপ্পরে পড়লেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেনে রাখা উচিত এই রাজ্যের বাঙালি মুসলিম সমাজকে যদি তিনি হাতে রাখতে পারেন তাহলে তার হারার সম্ভাবনা খুব একটা নেই। কিন্তু অকারনে তিনি বেশি বেশি করে উর্দুভাষী মুসলিমদের গুরুত্ব দেন যেটা এই রাজ্যের বাঙালি মুসলিম সমাজের কাছে খারাপ সংকেত বলে মনে করা হয়। যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একসময় বেশি গুরুত্ব দিতেন বরকতি সাহেবকে তেমনি এখন তিনি গুরুত্ব দেন মাওলানা শফিককে। কিন্তু মাওলানা শফিকের উদ্যোগে যে ইমাম সম্মেলন হলো তার কোন প্রয়োজনীয়তা ছিল না।এর ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা যে কমে গেছে বাঙালি মুসলিম সমাজের তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।

এদিকে মাওলানা শফিকের উদ্যোগে আয়োজিত ইমাম সম্মেলনের পর রাজ্য জুড়ে ইমামরাতো বটেই সাধারণ মুসলিম সমাজে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বাঙালি মুসলিম সমাজের প্রশ্ন যেখানে প্রতিবছর দুর্গাপূজয় সরকারি অনুদান লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সেখানে ১২ বছর পর মাত্র ৫০০ টাকা বৃদ্ধি কেন? আর এন নেপথে রয়েছে নাখোদা মসজিদের মোহাম্মদ শফিক বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র ভাষায় আক্রমণ চলছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই আক্রমণের পরেই নাখোদা মসজিদ ট্রাস্টি কমিটি আসরে নেমেছে। তাদের দাবি যে মাওলানা শফিক নাখোদা মসজিদের ইমাম নন তিনি সহকারী ইমাম। এক বিবৃতি জারি করে না খোদা মসজিদ এর ট্রাস্টি কমিটি বলেছে একমাত্র মওলানা শফি কি না খোদা মসজিদে সহকারী ইমাম নন আর একজন ইমাম আছেন তার নাম নুর আলম। পালা করে একদিন ছাড়া ছাড়া দুজনে নামাজ পড়ান। এরা কেউই ইমাম নন এরা হলেন নায়েবে ইমাম।

 

একইসঙ্গে ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে কোন রকম ভাবে এই মসজিদের নাম করে বা এই মসজিদে বসে রাজনৈতিক প্রচার কিংবা টাকা পয়সা তোলা যাবে না যদি কেউ এ কাজ করে তার বিরুদ্ধে ট্রাস্টি কড়া ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইমামদের সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রীকে ডেকে রাজনৈতিক সম্মেলন করার জন্য এমনিতেই রাজ্য জুড়ে নাখোদা মসজিদের সহকারি ইমাম মাওলানা শফিকের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনা চলছে এই অবস্থায় না খোদা মসজিদের পরিচালন কমিটির এই বিবৃতি কি মাওলানা শফিকের বিদায় কে আসন্ন করে দিল? এ কথা অস্বীকার করার কোন জায়গা নেই নাখোদা মসজিদের কোন ইমাম কোন দিন কোন কালে কোন রাজনৈতিক দলের গোলামী করেননি। মরহুম ইমাম সাব্বির সাহেব কোন রাজনৈতিক মঞ্চে যাননি কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে তিনি কথা বলতেন না। তিনি একজন আধ্যাত্মিক পুরুষ হিসাবে সাধন মানুষের সেবা করে গেছেন। তার উত্তরসূরিরা যেভাবে কাজ করছে তা নিঃসন্দেহে এই রাজ্যের মুসলিম সমাজের ভাবাবেগে আঘাত দিয়েছে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ