জেলা 

বিধায়ক আব্দুল করিমের সঙ্গে অভিষেক দেখা করলে তৃণমূলই লাভবান হত

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : বিদ্রোহী বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারে, জেলার তৃণমূলের ত্রিশ জন প্রথম সারির নেতা ও বিধায়ক কে বৈঠকে ডেকেছিলেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই বৈঠকে আমন্ত্রিত ছিলেন ইসলামপুরের বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরীও। কিন্তু তিনি আসেননি তিনি না আসার কারণে জেলা সভাপতি কানাইলাল আগরওয়ালকে বিধায়কের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করতে নির্দেশ দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

দলের একটা অংশের দাবি, জেলা তৃণমূল সভাপতির সঙ্গে সম্পর্ক ভাল নয় করিমের। ২০১৬ সালে ইসলামপুরে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে করিমকে হারিয়েছিলেন কানহাইয়ালাল। পরে তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। তাঁর তৃণমূলে যোগদানের সঙ্গে সঙ্গেই তৃণমূল ছেড়ে নিজের দল তৈরির ঘোষণা করেছিলেন করিম। সেই কানহাইয়ার হস্তক্ষেপে তাঁর ক্ষোভ কতটা মিটবে তা নিয়ে সন্দিহান জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ।

Advertisement

২০১৯ সালে ইসালমপুরের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে রায়গঞ্জ লোকসভায় তৃণমূল প্রার্থী হন কানহাইয়ালাল। তাঁর ছেড়ে দেওয়া ইসলামপুর আসনে ফের তৃণমূল প্রার্থী হন করিম। শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে সে বার তৃণমূলে ফিরেছিলেন তিনি। ২০২১ সালেরও ইসালামপুর বিধানসভা থেকে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন। যদিও মন্ত্রিসভায় তিনি জায়গা পাননি। উত্তর দিনাজপুর জেলা থেকে গোলাম রব্বানি ও সত্যজিৎ বর্মণকে রাজ্য মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া হয়েছে। যদিও বর্তমান বিধানসভায় সবচেয়ে প্রবীণ বিধায়ক করিমই।

বেশ কিছু দিন ধরেই দলের প্রতি বিমুখ করিম। রবিবার উত্তর দিনাজপুর জেলা জুড়েই অভিষেকের ‘জনসংযোগ যাত্রা’ কর্মসূচি ছিল। করিম ‘রেড কার্পেট’ বিছিয়ে আশায় ছিলেন তাঁর বাড়িতে এসে তাঁকে নিয়ে সভায় যাবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু ইসলামপুরে সভা করেই নিজের পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন অভিষেক। আর তাতেই ‘অভিমানি’ করিম সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

দলীয় সূত্রে খবর, সেই ক্ষোভেই করিম ইটাহারে ডাকা অভিষেকের বৈঠকে গরহাজির ছিলেন। সম্প্রতি বিধায়কদের দলের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন বিধানসভায় উপস্থিত হন না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে বিতর্ক বাড়িয়েছিলেন করিম। ইসলামপুরে দলীয় কোন্দলে এক সিভিক ভলান্টিয়ার খুনের ঘটনায় দলের একাংশের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি। আবার ইসলামপুর ব্লকের সভাপতির নাম ঘোষণা হওয়ার পরেও দল ছাড়ার হুমকিও দিয়েছিলেন। এ বার সরাসরি অভিষেকের বৈঠক বয়কট করে আবারও বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন তিনি।

রাজনৈতিক মহল মনে করছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত যুবনেতার উচিত ছিল ১১ বারের বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী সঙ্গে সরাসরি নিজে দেখা করে কথা বলা। তাতে রাজনৈতিকভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের দুটি লাভ হতো। প্রথমত সমগ্র উত্তরবঙ্গ জুড়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের কাছে বার্তা দেওয়া যেত তৃণমূল কংগ্রেস মুসলিমদের পাশে আছে এবং প্রবীণ মুসলিম নেতা কে সম্মান করছে। দ্বিতীয়তঃ প্রবীণ এক বিধায়কের সঙ্গে নবীন নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দেখা করতে যাচ্ছেন এই খবর রাজ্য জুড়ে প্রচারিত হলে আখেরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি অনেক অনেক বেশি উজ্জ্বল হতো বলে ওয়াকিবহাল মনে করছে। আর তা না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে একজন প্রবীণ সংখ্যালঘু বিধায়ক কে অপমান করলেন এবং তার সঙ্গে সৌজন্য ও সাক্ষাৎ করলেন না তার ফলে সমগ্র উত্তরবঙ্গ জুড়ে সংখ্যালঘু সমাজে তৃণমূলের ভোট প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ