কলকাতা 

হাইকোর্টের তলবে দু’ঘণ্টার মধ্যে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখোমুখি জেলবন্দি মানিক ভট্টাচার্য, বিচারপতির প্রশ্নের উত্তরে কী বললেন মানিক? জানতে হলে ক্লিক করুন

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি ও তৃণমূল বিধায়ক এবং বর্তমানে জেলবন্দি মানিক ভট্টাচার্যকে আজ বুধবার বেলা একটার সময় দু’ঘণ্টার মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ সোয়া তিনটে নাগাদ অর্থাৎ দু’ঘণ্টা সময়সীমার শেষ হওয়ার আগেই মানিক ভট্টাচার্যকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে হাজির করানো হয়।

দেখা গেল আইন কলেজের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল কে যথাযথ সম্মান এবং মর্যাদা দেখালেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এমনকি মানিক ভট্টাচার্যের ছাত্র বর্তমান ডেপুটি শেরিফের ঘরে চা চা ও ঠান্ডা খাওয়ার আহ্বান জানান স্বয়ং বিচারপতি।

Advertisement

এর আগে অবশ্য বিচারপতি কেন তাকে তলব করেছেন তার ব্যাখ্যা দেন একইসঙ্গে কয়েকটি প্রশ্ন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মানিক ভট্টাচার্য কে করেন। ডিজিটাল আনন্দবাজারের প্রকাশিত সেই কথোপকথন হুবহু আমরা পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরছি।

বিচারপতির প্রথম প্রশ্ন ‘‘২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে কী জানেন?’’

মানিক: আদালত ডেকেছে তাই এসেছি। আমি জেলে রয়েছি। আমার কাছে কোনও তথ্য বা নথি নেই। তাই স্মরণে যা আছে তাই বলতে পারি।

বিচারপতি: ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সিলেকশন কমিটি তৈরি করা হয়েছিল?

মানিক: হ্যাঁ, করা হয়েছিল।

মানিক: আমি কী ভাবে এগুলো বলতে পারি। যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা পর্ষদ নিয়েছিল।

বিচারপতি: পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি হিসাবে আপনার কাছে এগুলো জানা যেতে পারে।

বিচারপতি: ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার ফল কে প্রকাশ করেছিল?

মানিক: এটা আমি বলতে পারি না। বিশেষ করে এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে বোধগম্য নয়। নিয়োগ প্রক্রিয়ার মোট নম্বর বিভিন্ন বিভাগে মিলে তৈরি করে।

বিচারপতি: বাইরের কোনও সংস্থাকে রেজাল্ট প্রস্তুত করার জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল?

মানিক: এই পুরো প্রক্রিয়া পর্ষদ পরিচালনা করছে। তবে হ্যাঁ, একটি সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু এখন তার নাম স্মরণে নেই।

বিচারপতি: এস বসু রায় এন্ড কোম্পানি নামে কোনও সংস্থার নাম শুনেছেন?

মানিক: হ্যাঁ ওই ধরনের নাম শুনেছি।

বিচারপতি: সভাপতি হিসাবে আপনার সময় নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছে? তা ঠিক?

মানিক: অ্যাপ্টটিটড টেস্ট নেওয়া হয়েছিল। তখন কেউ কোনও অভিযোগ করেনি। এমন কোনও রিপোর্ট আমার কাছে আসেনি।

বিচারপতি: ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ নীতি মানা হয়েছিল এটা আপনি নিশ্চিত করে বলতে পারবেন?

মানিক: যতদূর মনে পড়ছে আইন অনুযায়ী মানা হয়েছিল।

বিচারপতি: ঠিক আছে। এখন আমার আর কিছু জানার নেই। আপনি যে বয়ান দিয়েছেন তাতে স্বাক্ষর করে চলে যাবেন।

মানিক: কিন্তু আমি যা বলেছি তার কোনও তথ্য নেই। আমার মনে যা ছিল তাই বলেছি।

মানিক: যাবার পথে মানিক একটা অনুরোধ করব। এই সংক্রান্ত যে কোনও মামলায় আমাকে ডেকে পাঠাবেন। ১৫ মিনিট আগে বললেই আমি চলে আসব। পরে আমার বিরুদ্ধে যাই পদক্ষেপ করা হোক। আমি মেনে নেব।

মানিক: আমি সত্যিটাই বলতে চাই। সত্য সহজ, সত্য সুন্দর।

বিচারপতি: আপনার বিরুদ্ধে গিয়েছে এমন কিছু হয়েছে?

মানিক: যখন এই পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল, তখন কেউ ছিল না। দরজায় দরজায় কড়া নেড়েছিলাম। কেউ সাহায্য করেনি। আজও আদালতে আমার একই অবস্থা।

হাই কোর্টের শেরিফকে বিচারপতি: উনি একজন সম্মানীয় ব্যক্তি। চা দেবেন। দেখবেন অপ্রত্যাশিত ঘটনা না ঘটে। আদালত শুধু সত্যি জানতে চায়। তিনি সাহায্য করেছেন।

হাত জোড় করে বিচারপতিকে মানিক: আপনিই বিচার করুন । সত্য সামনে আসুক, সত্য সুন্দর।

প্রশ্নোত্তর পর্বের শেষে মানিককে ডেপুটি শেরিফে ঘরে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে চা, কফি, ঠান্ডা পানীয় দেওয়ার জন্য আবার বলেন বিচারপতির। বিচারপতি এমনও বলেন, “দশচক্রে ভগবান ভূত। মানিক ভট্টাচার্য আমাদের ডেপুটি শেরিফের শিক্ষক ছিলেন।” সৌজন্যে ডিজিটাল আনন্দবাজার।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ