জেলা 

মহা সমারোহে উদযাপিত হল ঝুনকা হাই মাদ্রাসার শতবর্ষ  

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বেলডাঙ্গা: শতবর্ষ উপলক্ষে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা থানার ঝুনকা হাই মাদ্রাসায় ১৫ ও ১৬ ই ফেব্রুয়ারি দু’দিন ধরে মহা সমারোহে উদযাপিত হলো বর্ণময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দু’দিনের অনুষ্ঠানে মুর্শিদাবাদ জেলার শিক্ষা পরিদর্শক শ্রী অমর কুমার শীল সহ জেলার শিক্ষা দপ্তর, সংখ্যালঘু দপ্তর ও প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসা বোর্ডের সদস্য মহ: আনসার আলি ও আমিনুল ইসলাম, সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক সেলিম মহ: সালেহ, মাদ্রাসার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্রী চন্দন কুমার দাস, সারগাছি চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক ও মাদ্রাসার প্রশাসক শ্রীমতি অমৃতা বিশ্বাস ও আরো অনেকে।

প্রাকস্বাধীনতা কালের বৃটিশ ভারতে ১৯২২ সালে গ্রামের কিছু বিদ্যোৎসাহী মানুষ তাদের অর্থ ও শ্রমের বিনিময়ে এলাকায় শিক্ষার আলো জ্বালতে একটি জুনিয়ার মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাদের প্রতিষ্ঠিত সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্রমে বড়ো হতে হতে গত শতাব্দীর ষাটের দশকে মাধ্যমিক ও ২০০৯ সালে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।

Advertisement

বর্তমানে এই মাদ্রাসার বর্তমান ছাত্রছাত্রী সংখ্যা প্রায় দু’হাজার এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে ৩২ জন স্টাফ। মাদ্রাসার স্টাফ কাউন্সিলের সেক্রেটারি শিক্ষক মনিরুদ্দিন খান জানান, গত বছর ২৮ শে ডিসেম্বর তারিখে ‘শতবর্ষে শতজনের রক্তদান’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শতবর্ষের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়েছিল। এবছর ২৩ শে জানুয়ারি জেলা সদর বহরমপুর সহ বেলডাঙার নানা গ্রামে বর্ণময় ট্যাবলো পরিক্রমা ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠান করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নিয়োজিত বিপ্লবী অনুশীলন সমিতির প্রথম মুসলিম মহিলা সদস্যা রাহিলা খাতুনের জন্ম ঐতিহ্যময় এই ঝুনকা গ্রামে। অনুষ্ঠানে তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।

প্রধানশিক্ষক মহ: কামারুজ্জামান শেখ জানান, শতবর্ষ প্রাচীন এই মাদ্রাসা থেকে অনেক ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, গবেষক, মাদ্রাসা বোর্ডে স্থান অর্জনকারী, সফল ব্যবসায়ী পড়াশোনা করে তারা এই মাদ্রাসার সুনাম বৃদ্ধি করেছেন। শতবর্ষের এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মাদ্রাসার সমস্ত প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মী এবং প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী ও বিশিষ্টজনদের দের আহ্বান জানানো হয়েছিল। তাদের অনেকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান অত্যন্ত আবেগময় ও নস্টালজিক হয়ে ওঠে।

অনুষ্ঠানে মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মী এবং আমন্ত্রিত শিল্পীদের কেরাত, গজল, আবৃত্তি, গান, নাচ, অভিনয়ে দুদিনের সফল অনুষ্ঠান উপস্থাপিত হয়। এছাড়াও ছিল মালদা’র বাবলু মন্ডল ও সম্প্রদায়ের ‘গম্ভীরা’, বিশিষ্ট ম্যাজিসিয়ান কৌশিক হালদারের ‘ম্যাজিকের অন্তরালে বিজ্ঞান’, প্রখ্যাত বাচিক শিল্পী রাখী বিশ্বাসের আবৃত্তি, কলকাতা থেকে আগত মৌসুমী হোসেন এবং সোহিনী দাস বিশ্বাসের গান। নানা সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের দ্বারা আমরা আমাদের ছাত্রছাত্রীদের সাংস্কৃতিক মানোন্নোয়নের ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

সারাদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের দু’দিন পর্যায়ক্রমে মাদ্রাসার সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের ডিম ও মাংসসহ মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। প্রধান শিক্ষক মহাশয় আরো জানান, আগামী ডিসেম্বর মাসে চুড়ান্ত পর্যায়ের অনুষ্ঠানে স্যুভেনির প্রকাশ, বিজ্ঞান প্রদর্শনী, মশাল দৌড়, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বসে আঁকো ইত্যাদি আরো নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শতবর্ষের অনুষ্ঠান শেষ করা হবে।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ