পর্ষদের ভুলের খেসারত, আঠাশে সেপ্টেম্বরের মধ্যে টেট উত্তীর্ণদের চাকরি দিতে হবে, প্রয়োজন হলে শূন্যপদ তৈরি করতে হবে নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের
বাংলার জনরব ডেস্ক : ২০১৪ র টেট পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ভুল থাকার কারণে ২৩ জন পরীক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পায়নি বলে অভিযোগ ছিল। এই ২৩ জন পরীক্ষার্থী পরবর্তীকালে মামলা করায় তাদের নম্বর বেড়ে যায় এবং তারা টেট উত্তীর্ণ হয়। কিন্তু তা সত্বেও এই ২৩ জনকে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি দেয় নি, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ফলে তারা আবার আদালতের দ্বারস্থ হয়।
আজ সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এক রায় বলেছেন ইতিমধ্যেই এইসব পরীক্ষার্থীদের পাঁচ বছর চলে গেছে। আর এই পাঁচ বছর চাকরিজীবন না থাকার পেছনে দায়ী ওরা নয়। দায়ী হলো প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এদের ভুলের কারণে এইসব চাকরিপ্রার্থীদের জীবন থেকে পাঁচটি বছর নষ্ট হয়ে গেছে। আর নয় আগামী ২৮ এ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এদের সকলকে চাকরি দিতে হবে। যদি শূন্যপদ না থাকে তাহলে শূন্যপদ তৈরি করে এদের চাকরি দিতে হবে বলে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন। চাকরিপ্রার্থীরা চাকরি পেলেন কি না তা আগামী শুনানিতে আদালতকে জানাতে হবে।
২০১৪ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের টেটের (Primary TET) পরীক্ষায় ৬টি প্রশ্ন ভুল ছিল। সেবছরই পরীক্ষায় দিয়েছিলেন এই ২৪ জন পরীক্ষার্থী। কিন্তু ২০১৬ সালে ফল প্রকাশ হলে দেখা যায় তাঁরা টেট পাশ করেননি। স্বাভাবিকভাবেই সেই সময় চাকরি পাননি তাঁরা। ওই অসফল পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, পর্ষদের প্রশ্নে ভুল ছিল। ওই ছ’নম্বরের জন্য চাকরি পাননি তাঁরা।
এর মধ্যে অন্য একটি মামলায় দেখা যায়, ভুল প্রশ্ন থাকায় চাকরিপ্রার্থীদের নম্বর বাড়াতে রাজি হয় পর্ষদ। তারপরই কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হন এই ২৩ টেট পরীক্ষার্থী। এরপর ওই নম্বর দেওয়া যায় কিনা তা পর্ষদকে বিচার করতে বলে হাই কোর্ট। নিজেদের ভুল স্বীকার করে নম্বর বাড়িয়ে দেয় পর্ষদ। ফলে টেটে পাশ করে যান ওই ২৩ জন। এরপরই বিপত্তি।
মামলাকারীদের অভিযোগ, তাঁরা নম্বর পাবে কিনা তা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ২০২০ সালে নতুন নিয়োগ করে পর্ষদ। এমনকী, প্রশিক্ষণহীনরাও চাকরি করছেন। এদিকে আদালতে পর্ষদ জানিয়েছে, আপাতত কোনও শূন্যপদ নেই।
এই যুক্তির পালটা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “বোর্ডের ভুলে পাঁচ বছর চাকরি পাননি ওঁরা। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এঁদের চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।”