“গান্ধী-নেহেরু-আজাদ-প্যাটেলকে অপমান করতে উগ্র জাতীয়তাবাদী সরকার ইতিহাস বিকৃত করছে, কংগ্রেস এর তীব্র নিন্দা করছে” : সোনিয়া গান্ধী
বাংলার জনরব ডেস্ক: স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর নতুন করে দেশভাগের স্মৃতিকে উসকে আবার নেহেরু এবং গান্ধীজিকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে বিজেপি দল। গতকাল ১৪ই আগস্ট বিজেপির পক্ষ থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করে দেশভাগের ভয়াবহতা স্মরণ দিবস পালন করা হয়। আর এই পালন করতে গিয়ে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা সংগ্রামী জওহরলাল নেহেরুকে দেশভাগের জন্য দায়ী করা হয়। তা নিয়ে গতকালই কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে গেরুয়া শিবিরের এই উদ্যোগের নিন্দা করা হয়েছে। আজ ১৫ ই আগস্ট ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবসে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বিজেপির এই উদ্যোগ আসলে নেহেরু গান্ধীজীর অবদানকে ছোট করে দেখার লক্ষ্যে।
স্বাধীনতা দিবসের বার্তায় কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী দাবি করেছেন, নিজেদের প্রচারের স্বার্থে পরিকল্পিতভাবে মহাত্মা গান্ধী (Mahatma Gandhi), জওহরলাল নেহরুর মতো দেশনেতাদের অপমান করা হচ্ছে।
কংগ্রেস নেত্রী আরও বলেন, দেশের জন্য যাঁরা বলিদান দিয়েছেন তাঁদেরই ছোট করছে কেন্দ্র। কংগ্রেস সভানেত্রীর কথায়, “গান্ধী-নেহেরু-আজাদ-প্যাটেলকে অপমান করতে উগ্র জাতীয়তাবাদী সরকার ইতিহাস বিকৃত করছে। কংগ্রেস এর তীব্র নিন্দা করছে।”
এছাড়াও দেশবাসীকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে সোনিয়ার বার্তা, “বিজ্ঞান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে গত ৭৫ বছরে বহু প্রতিভাবান ব্যক্তিত্ব ভারতকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। দূরদর্শী ভারতীয় নেতারা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন ব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করেছেন। তাঁরা একটি শক্তিশালী তথা সাংবিধানিক গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করেছেন।” কংগ্রেস নেত্রী যোগ করেন, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও ভাষার মাধ্যমেই ভারত একটি গৌরবময় জাতি হিসাবে আত্মপ্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।
প্রসঙ্গত, গতকাল প্রকাশ্যে আনা সাত মিনিটের নাটকীয় ভিডিওটিতে দাবি করা হয়, মহম্মদ আলি জিন্নার নেতৃত্বাধীন মুসলিম লিগের দাবির সামনে জওহরলাল নেহরু মাথা নত করেন। এর ফলেই দেশভাগ তথা পাকিস্তানের সৃষ্টি হয়। ভিডিওতে র্যাডক্লিফ লাইন প্রসঙ্গ তোলা হয়। উল্লেখ্য, বাংলা ও পাঞ্জাব ভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জন র্যাডক্লিফকে। প্রশ্ন তোলা হয়, ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জ্ঞান না থাকা এক ব্যক্তিকে তিন সপ্তাহের মধ্যে কীভাবে ভারত ভাগ করার দায়িত্ব দেওয়া হল?
গতকালই বিজেপির অভিযোগ খণ্ডন করে কংগ্রেস। কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ (Jairam Ramesh) বলেন, বিশেষ উদ্দেশেই ‘দেশভাগের ভয়াবহতা স্মরণ দিবস’ পালন করছেন মোদি।তিনি বলেন, “আধুনিক দিনের সাভারকর এবং জিন্নারা জাতিকে বিভক্ত করার জন্য তাঁদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।”