জেলা 

হাতে কলমে চাষবাস : কৃমি নিয়ে চাষি বন্ধুদের পাঠ দিলেন বিজ্ঞানীরা

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

নায়ীমুল হকের প্রতিবেদন: সম্প্রতি চাষি বন্ধুদের নিয়ে মুর্শিদাবাদের সারগাছি রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের ধান্যগঙ্গা কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রে এক সারাদিনের কৃমি সচেতনতা দিবস পালিত হল। বিজ্ঞানীদের সঙ্গে চাষি বন্ধুদের সরাসরি কথোপকথন এবং হাতে-কলমে কাজ সচারাচার দেখতে পাওয়া যায় না। এদিন তেমনই এক বিরল ঘটনার সাক্ষী হয়ে রইল স্থানীয় কৃষি বন্ধুরা এবং সঙ্গে সাধারণ মানুষেরাও।


সর্বভারতীয় সমন্বিত প্রকল্প নেমাটোড,কল্যাণী কেন্দ্র এবং অ্যাসোসিয়েশন ফর এডভান্সমেন্ট ইন প্লান্ট প্রোটেকশন-এর যৌথ উদ্যোগে এবং বায়ার ক্রপ সায়েন্স-এর আর্থিক সহযোগিতায় ৭ই জুলাই ২০২২ ধান্যগঙ্গা কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র, রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম সারগাছি, মুর্শিদাবাদে অনুষ্ঠিত হলো ১৭ তম সূত্র কৃমি সচেতনতা দিবস। এই অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বর্তমান প্রজেক্ট কোরডিনেটর (নেমাটোড) ডঃ অনিল শিরোহি। সেইসঙ্গে অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথি বৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন প্রজেক্ট কোরডিনেটর (নেমাটোড) ডঃ আর কে ওয়ালিয়া, ডঃ এম আর খান, মুখ্য বিজ্ঞানী আই.এ.আর.আই., নিউ দিল্লী, ড: দেবাশিস রায়, কীটশত্রু বিজ্ঞানী, রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম, সারগাছি প্রমূখ।
সমগ্র অনুষ্ঠানে মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা 160 জন কৃষক স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং আলোচনায়ও ভাগ নেন।

Advertisement


সারাদিনব্যাপী কর্মসূচির শুভ সূচনা হয় সকাল সাতটায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বামী বিশ্বমায়ানন্দ মহারাজ এবং অন্যান্য বিশিষ্ট বিজ্ঞানীগণ।
এদিন প্রাথমিক পর্বে ছিল কৃমি আক্রান্ত ফসলের জমি যেমন পাট, পটল এবং অন্যান্য পরিদর্শন। তারপর অনুষ্ঠানের মূল পর্বে কৃষকদেরকে হাতে-কলমে কৃমি আক্রান্ত বিভিন্ন ফসল যেমন শসা, ধান, বেগুন, পাট, রজনী গন্ধা, পুই, লালশাক ইত্যাদি দেখিয়ে আক্রমণের লক্ষণ সনাক্ত এবং পরিচিত করানো হয়। সেই সঙ্গে কৃমির সাধারণ পরিচিতি করানোর উদ্দেশে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নীচে কৃমি দেখানো হয়। মধ্যাহ্ন ভোজনের পর বিজ্ঞানীরা মানুষের এবং শস্যের কৃমি পরিচিতি এবং রোগ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন ড. আর. কে.ওয়ালিয়া, ড. এম. আর.খান, ড. শানওলি মণ্ডল (ঘোষ), এবং ড. রঘোবেন্দ্র যোশী। প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি কৃমি এবং ফসলের অন্যান্য রোগ পোকা সমস্যা বিষয়ক ও তাদের সম্ভাব্য প্রতিকার ব্যবস্থা বিষয়ে আলোচনা হয়।

বিজ্ঞানীদের মতে গোটা দক্ষিণবঙ্গ তথা মুর্শিদাবাদ জেলা সংলগ্ন অন্যান্য জেলা কৃমি উপদ্রুত এলাকা, যেখানে সুসংগত উপায়ে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এই শত্রুর হাত থেকে ভবিষ্যতে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। গোটা অনুষ্ঠানে কৃষকদের স্বতঃস্ফূর্ততা এবং তাদের একাগ্রতা ভীষণভাবে লক্ষ্যণীয় ছিল যা উপস্থিত বিজ্ঞানীগণের প্রভূত দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ধান্যগঙ্গা কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র, রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম সারগাছি সামগ্রিকভাবে এই সচেতনতা দিবস উদযাপনে কর্মকর্তাদের সফলভাবে সহায়তা করতে সক্ষম হয়েছে। সর্বোপরিভাবে এই অনুষ্ঠান এবং সচেতনতা শিবির সমস্ত কৃষক বন্ধুদের ভবিষ্যৎ কৃষিতে যথাযথ সুবিধা প্রদান করবে বলে বিজ্ঞানীগণ মনে করেন।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ